ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পৌষের শীতে কাঁপছে রাজশাহী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২২
পৌষের শীতে কাঁপছে রাজশাহী

রাজশাহী: রাজশাহীতে চলতি মৌসুমের প্রথম দফার মৃদু শৈত্যপ্রবাহ কেটে গেছে দুদিন আগেই। এরপর থেকে দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বাড়ছে।

কিন্তু বিধিবাম! তাপমাত্রা বাড়লেও শীতের দাপট কমছে না কিছুতেই।  

আবহাওয়া কর্মকর্তারা বলছেন- ঠান্ডা বাতাসের কারণে এই তাপমাত্রা গায়ে লাগছে না কারোরই। আর এই হিমেল হাওয়ার দাপটেই কাঁপছে রাজশাহীসহ উত্তর জনপদের ছিন্নমূল মানুষ। তবে আপাততঃ তাপমাত্রা বাড়লেও জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ফের শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে যাচ্ছে এই অঞ্চলে। এ সময় কুয়াশা পড়লেও আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে।

এর আগে একদিনের ব্যবধানে হঠাৎ করেই এক লাফে ৩ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কমে রাজশাহীতে গত ২৯ ডিসেম্বর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস নেমে আসে। হু হু করে বইতে শুরু করে হাড় কাঁপানো ঠান্ডা বাতাস। তাপমাত্রা কমায় দিনের বেলায়ও রাতের মতই তীব্র শীত অনুভূত হয়। সূর্যের মুখ দেখা গেলেও উজ্জ্বল রোদের কোনো উষ্ণতা ছিলো না ওই দিন। ভোরে ও সন্ধ্যায় ছিল ঘন কুয়াশার দাপট। ফলে প্রচণ্ড ঠান্ডায় মহানগরীর স্বাভাবিক জনজীযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। আর এরপর টানা দুই দিন তাপমাত্রা বাড়ে। কিন্তু একই অবস্থা বিরাজ করছে আজও!

আজ শনিবারও (৩১ ডিসেম্বর) রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পারদ ছিল ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে। ঠিক এর আগের দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফলে শীতের এমন বৈরি আবওয়ায় হঠাৎ করেই বিপাকে পড়েছেন খেটে-খাওয়া ছিন্নমূল মানুষ। বিশেষ করে শহুরে ছিন্নমূল মানুষগুলো বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন। মাঘ মাসের আগেই শীতের তীব্রতায় কাজ না পেয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আর সূর্য নামলেই গরম কাপড়ের অভাবে তারা জবুথবু হয়ে পরেছেন।

এরপরও জীবন ও জীবিকার তাগিদে ঘনকুয়াশা আর তীব্র শীতের মধ্যেই সকাল-সন্ধ্যা এক করে কাজ করে যাচ্ছেন অনেকে। রাতে রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন। সেখানে ছাদের নিচে খোলা কম্পাউন্ডে গুটিশুটি হয়ে রাত কাটাচ্ছেন। আর শহরের বস্তি এলাকার নিম্ন আয়ের মানুষকে সন্ধ্যার পর কুড়িয়ে আনা খড়কুটোয় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা যাচ্ছে।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক দেবল কুমার মৈত্র বাংলানিউজকে জানান, চলতি মৌসুমের প্রথম দফার মৃদু শৈত্যপ্রবাহ কেটেছে দু’দিন আগেই। শুক্রবার (৩০ডিসেম্বর) রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর আজ ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) ছিলো ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা রাজশাহীতে চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। অথচ তার আগের দিনই রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ এক লাফে ৩ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কমেছিল। এর আগের দিন ২৭ ডিসেম্বর ছিলো ১৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সাধরণত দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। তাপমাত্রা ৮ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামলে তাকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। এছাড়া তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে তাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। বর্তমানে রাজশাহীতে শৈত্যপ্রবাহ নেই বলেও উল্লেখ করেন- এই আবহাওয়া কর্মকর্তা।

এদিকে, আবহাওয়া অধিদপ্তরের আজ সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘন্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। আর নীলফামারী, পঞ্চগড় ও শ্রীমঙ্গল জেলার ওপর দিয়ে যে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা প্রশমিত হতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২২
এসএস/এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।