ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বেইলি রোডের ভবনটিতে ‘ফায়ার এক্সিট’ ছিল না: প্রধানমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৫ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০২৪
বেইলি রোডের ভবনটিতে ‘ফায়ার এক্সিট’ ছিল না: প্রধানমন্ত্রী ‘জাতীয় বিমা দিবস-২০২৪’ উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ঢাকা: বেইলি রোডে আগুন লাগা বহুতল ভবনটির নির্মাণ ত্রুটির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সেখানে কোনো ফায়ার এক্সিট ছিল না। শুক্রবার (১ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয় বিমা দিবস-২০২৪’ উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বেইলি রোডে যে আগুনটা লাগল, একটা বহুতল ভবন, সেখানে কোনো ফায়ার এক্সিট নেই।

নিয়ম মেনে ভবন নির্মাণের তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, সব সময় আমাদের যারা আর্কিটেক্ট তাদের অনুরোধ করি, আপনারা যখন ঘরবাড়ি তৈরি করেন, একটু খোলা বারান্দা, ফায়ার এক্সিট বা ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা করবেন। যারা (ভবন) তৈরি করতে চায়, আর্কিটেক্টরাও ওরকম ডিজাইন ঠিকমতো করে না, আবার মালিকরাও এক ইঞ্চি জায়গা ছাড়তে চায় না।

শেখ হাসিনা বলেন, ৪৬ জন মানুষ মারা গেছেন, এর চেয়ে কষ্টের আর কী হতে পারে? অথচ ফায়ার এক্সটিংগুইশার লাগানো, অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে বারবার আমরা নির্দেশ দিচ্ছি। সেটা কিন্তু আর মানে না। আর আমি জানি এখানে নিশ্চয়ই ইনস্যুরেন্স নেই, কাজেই তারা কিছু পাবেও না। এসব ক্ষেত্রে সচেতনতা খুব বেশি প্রয়োজন।

সরকারপ্রধান বলেন, আমি নিজে প্রত্যক্ষদর্শী এবং আমি নিজেই দেখেছি, অনেক সময় বিমা নিয়ে অনেকেই আবার নানা ধরনের ব্যবসাও করে। হয়তো কোথাও একটু দেখাল আগুন লেগেছে। ক্ষতির পরিমাণ যত না, তারচেয়ে অনেক বেশি দাবি করে বসে। শুধু দাবি করা নয়, যারা যায় পরীক্ষা করতে তাদেরও ম্যানেজ করে ফেলে। ফলে বিরাট অঙ্কের টাকা বেরিয়ে যায়। এই রকম দুই একটা কেস আমি নিজে ধরেছি।

অগ্নিকাণ্ডের একটি ঘটনা তদন্তের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, তদন্ত করতে গিয়ে এক ভয়াবহ চিত্র উঠে এলো। আমি কথাটি এ জন্য বলছি। আপনাদেরও সচেতন থাকা দরকার। একটি গার্মেন্টস কারখানা, প্রায়ই আগুন লাগতো গার্মেন্টসে। ঘন ঘন আগুন লাগে। আমি বললাম বিষয়টা কী, এত ঘন ঘন আগুন লাগে কেন! আগুন লাগার কারণ খুঁজে বের করতে হবে। তদন্তে বের হয়ে এলো, ওই গার্মেন্টসের এক কর্মীকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে নাস্তাপানি খাওয়ার জায়গায় আগুন দিয়ে ৪০ কোটি টাকা দাবি করল।  

তিনি বলেন, এখন তো আমাদের ফরেনসিক বিভাগে বিভিন্ন পরীক্ষার সুযোগ আছে। কী কী জিনিস পুড়েছে, তা পরীক্ষা করতে বললাম। সব পরীক্ষা করা হলো। দেখা গেল কিছু রাবিশ রেখে সেখানে আগুন দেওয়া হয়েছিল। তারপরে ৪০ কোটি টাকা দাবি ওঠে। ৪০ কোটি টাকার সম্পদ তো এখানে পুড়ে যায়নি। তাহলে এত টাকা কেন দাবি করবে?

তিনি আরও বলেন, খুব ঘন ঘন আগুন লাগতো। আমি নাম বলব না। কিন্তু আমি জানি। অনেকেই হয়তো বুঝতেই পারবেন। ঘন ঘন আগুন লাগত, সেই জন্য আমি ধরলাম বিষয়টা। কিছু তথ্য পেলাম। সেখানে নিজেরাই আগুন দিত। মোটা অঙ্কের টাকা তুলে নেওয়া হতো। আপনারা যারা বিমার সঙ্গে জড়িত, অবশ্যই বিষয়টিতে গুরুত্ব দেবেন। এই ধরনের ঘটনা যেন কেউ ঘটাতে না পারে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ যাতে আরও বিমার দিকে এগিয়ে আসে, সে বিষয়ে আপনারা যত্মবান হবেন। আর বিমা দাবিগুলো যাতে মানুষ সহজে পায়, যারা দুই নম্বরি করবে তাদের কথা বলছি না, প্রকৃতপক্ষে যারা পায়, তাদেরটা যেন সহজে পেতে পারে। এদিকে একটু দৃষ্টি দিতে হবে। যারা দুই নম্বরি করে, তারা আবার পেয়ে যায়। কারণ তারা ম্যানেজ করে ফেলে। কেউ যেন ম্যানেজ করতে না পারে, সত্যিকারে যারা প্রাপ্য তারা যেন সঠিকভাবে অল্প সময়ের মধ্যে পেতে পারে, সেটাও ব্যাংকের মাধ্যমে করে দেওয়া যেতে পারে, এখন তো সুবিধা হয়ে গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৫ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০২৪
এমইউএম/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।