ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

খাবার নিয়ে সেই বৃদ্ধ দম্পতির ঘরে ইউএনও

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০২০
খাবার নিয়ে সেই বৃদ্ধ দম্পতির ঘরে ইউএনও

পটুয়াখালী: দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলানিউজে "পরনে কাপড় নেই, স্ত্রীর ওড়না পরেন স্বামী" শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর এক মাসের খাদ্য সামগ্রী, নতুন পোশাক ও শীতবস্ত্র নিয়ে বৃদ্ধ ভিক্ষুক দম্পতির ঘরে হাজির হয়েছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লতিফা জান্নাতী।

মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ইউএনও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বিশেষ সহায়তা নিয়ে ওই দম্পতির ঘরে পৌঁছে দেন।

এসময় তার সঙ্গে ছিলেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহিন মাহমুদ, সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. হেমায়েত উদ্দিন, পটুয়াখালী ইয়ুথ ফোরামের নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমানসহ সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবক মেহেদী হাসান রিফাত ও মহিবুল্লাহ এবং বাংলানিউজের পটুয়াখালী ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট মো. জহিরুল ইসলাম।

ওই দম্পতির জন্য দু’টি শাড়ি, দু’টি লুঙ্গি, দু’টি গামছা, দু’টি সোয়েটার, ২০ কেজি চাল, দুই কেজি ডাল, দুই কেজি চিনি, দুই লিটার তেল, চার কেজি চিড়া, দুই কেজি লবণ ও এক কেজি নুডলস পৌঁছে দিয়েছেন ইউএনও।

এর আগে সংবাদটি নজরে আসার পর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেনের পক্ষ থেকে শাড়ি-লুঙ্গি, খাদ্য সামগ্রী ও শহরের ফোকাস ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পক্ষ থেকে ওই দম্পতিকে খাবার ও কাপড় দেন করেন মেহেদী হাসান শিবলী। এছাড়া দু’টি কম্বল পৌঁছে দেন পটুয়াখালী ইয়ুথ ফোরামের নির্বাহী পরিচালক মো. হাসিবুর রহমান।

এদিকে, বাংলানিউজের প্রধান কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বাংলানিউজের পটুয়াখালী ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট মো. জহিরুল ইসলামের ব্যক্তিগত বিকাশ নম্বরে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গের পাঠানো ২১ হাজার টাকা জমা হয়েছে। যা ইউএনও'র মাধ্যমে তাদের কাছে বুধবার হস্তান্তর বা তাদের পুনর্বাসনের জন্য দেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে ইউএনও লতিফা জান্নাতী বলেন, বৃদ্ধ দম্পতির জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সব সুবিধা দেওয়ার মাধ্যমে তাদের পুনর্বাসন করা হবে। সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন ভাতা দিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

সহায়তা পেয়ে আনন্দে কেঁদে ফেলেন বৃদ্ধ মো. সুলতান ডাক্তার ও তার স্ত্রী সকিনা বেগম দম্পতি। সুলতানের বয়স ৯৫ বছর ছাড়িয়েছে আর সকিনার বয়স ৭০ বছরের ঘরে। বৃদ্ধ এ দম্পতি ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করেন। পটুয়াখালী শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ১ম লেন বোহালগাছিয়া এলাকায় থাকেন তারা। সদর উপজেলার আউলিয়াপুর এলাকার বাসিন্দা মৃত পল্লী চিকিৎসক ইবরাহীম আকনের এক ছেলে মোছলেম। বাবা চিকিৎসক হওয়ায় তার মোসলেমের নামের পাশে জুড়ে যায় ডাক্তার শব্দটি। এরপর মোছলেম ডাক্তারের একমাত্র ছেলে সুলতানের নামও রাখা হয় সুলতান ডাক্তার। এক সময় মোছলেম ডাক্তার পাল তোলা নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তরুণ বয়সে গাড়ি চালিয়ে সংসার চালালেও এখন আর কিছু করতে পারেন না। তাদের দুই ছেলে ঢাকায় রিকশা চালায়। বাবা-মাকে কোনো আর্থিক সহযোগিতা করেন না তারা। ফলে বৃদ্ধ এ দম্পতিকে চলতে হয় ভিক্ষা করে। তবে সম্প্রতি সুলতান অসুস্থ হয়ে পড়ায় তার স্ত্রীর ভিক্ষার টাকায় চলে সংসার।

আরও পড়ুন: পরনের কাপড় নেই, স্ত্রীর ওড়না পরেন স্বামী!

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০২০
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।