ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ পৌষ ১৪৩১, ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

হাসিনা পালানোর ৫ মাস, ফেসবুকে যে বার্তা দিলেন প্রেস সচিব

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০২৫
হাসিনা পালানোর ৫ মাস, ফেসবুকে যে বার্তা দিলেন প্রেস সচিব

ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। আজ ৫ জানুয়ারি শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পাঁচ মাস পূর্ণ হলো।

শেখ হাসিনার পলায়নের ৫ মাস পূর্তিতে সরকারের অবস্থান জানালেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম। রোববার (৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে ইংরেজি ভাষায় দেওয়া এক পোস্টে হাসিনার পলায়নের স্মৃতিচারণা করে অন্তর্বর্তী সরকারের নানা কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরেছেন প্রেসসচিব। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের দিয়েছেন কড়া বার্তা। পাঠকদের জন্য প্রেসসচিবের পোস্টটির বাংলা অনুবাদ তুলে ধরা হলো ...

শফিকুল আলম লিখেছেন, আজ থেকে ঠিক ৫ মাস আগে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। ওই দিন (৫ আগস্ট) তার দীর্ঘ ১৬ বছরের নৃশংস এবং দুর্নীতিগ্রস্ত স্বৈরতন্ত্রের পতন ঘটে। আমাদের সাহসী ছাত্রদের নেতৃত্বে লক্ষ লক্ষ মানুষ কয়েক সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ করে চোরতন্ত্র ও গুমতন্ত্রের প্রধানকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করেছে। হাসিনার পলায়নের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। এই সময়ের মধ্যে এ সরকার দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা এনেছে, দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল করেছে। অর্থনৈতিক পতন এবং রাষ্ট্রের দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দূর হয়েছে। গত পাঁচ মাসে রপ্তানি বেড়েছে ব্যাপক হারে। হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিচার করতে সংশোধনপূর্বক বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে। গণহত্যায় জড়িত অনেক আ. লীগ নেতাকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরো শত শত নেতাকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে হাসিনাকে প্রত্যাবাসনের জন্য ভারতকে চিঠি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে আমরা এখনো ভারতের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো জবাব পাইনি। তবে জুলাইয়ে বিপ্লবে প্রায় দেড় হাজার মানুষকে হত্যার বিচার ও জবাবদিহির মুখোমুখি করতে আমরা শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টায় নিরলস থাকব। গণহত্যা এবং হাজার হাজার মানুষকে গুম, প্রায় ২৪০ বিলিয়ন ডলার পাচার, ব্যাংক ডাকাতি এবং হাজার হাজার মানুষকে বিনা বিচারে হত্যার দায়ে শেখ হাসিনা ও তার খুনি সহযোগীদের বিচার করা হবে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব আরও লিখেছেন, হাসিনা ও অন্য আ. লীগ নেতারা এবং সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে যারা খুন ও দুর্নীতিতে জড়িত তাদের বিচার এ সরকারের মূল অগ্রাধিকার। খুনের অভিযোগে ছাত্রলীগকে ইতিমধ্যে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। হাসিনা আড়ালে থেকে মিথ্যা বলে যাচ্ছেন। তার সমর্থকরা এখনো বিভ্রমে ভুগছেন। আ. লীগের নেতাকর্মীরা এখনো গণহত্যাকে অস্বীকার করছেন। পাঁচ মাস কেটে গেলেও হাসিনা, শেখ পরিবার বা দলের সদস্যদের কোনো অনুশোচনা নেই। এর পরিবর্তে তারা মিথ্যায় ঘুরপাক খাচ্ছে। তারা ভারতীয় মিডিয়ার কাছে মিথ্যা এবং বানোয়াট তথ্য পৌঁছে দিচ্ছে। তারা লাখ লাখ টাকা খরচ করছে গুজব ছড়াতে। হাসিনা ও তার দলের রক্তপিপাসু সদস্যদের হত্যা ও দুর্নীতির মামলায় বিচার না হওয়া পর্যন্ত আপস হবে না। কোনো লবিং হাসিনা ও তার খুনি সহযোগীদের উপকারে আসবে না। পৃথিবী এগিয়ে গেছে। আর হাসিনার পৃথিবী সংকুচিত হয়ে নয়াদিল্লির কয়েকটি ছোট কক্ষে সীমিত হয়েছে। আ. লীগের কর্মীরা যতই হাসিনার শাড়ির আঁচল আঁকড়ে ধরবে, দলের জন্য বিপদ ততই বড় করবে। রাজনৈতিক অঙ্গনে ফিরে আসার কিছু আশা এখনো আছে তাদের। তবে তার আগে গণহত্যা, খুন, গুম ও লুটপাটের জন্য হাসিনার বিচার চাইতে হবে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ছাত্র-জনতা হাসিনা ও পরিবারকে ইতিহাসের ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলেছে। এখন আ. লীগের সাধারণ সমর্থকদের কর্তব্য হবে ইতিহাসের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত এবং রক্তপিপাসু স্বৈরশাসক থেকে নিজের সমর্থন সরিয়ে নেওয়া।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০২৪
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।