ঢাকা: চট্টগ্রামে মাদকের সাম্রাজ্যে আবির্ভাব হয়েছে নতুন মাফিয়ার। ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর পুরনো মাফিয়ারা পর্দার আড়ালে চলে যাওয়ায় সিংহাসনে আসীন হয়েছেন নতুনরা।
এ বিষয়ে র্যাব-৭ উপ-পরিচালক (মিডিয়া) মেজর সাদমান সাকিব বলেন, ‘মাদক ব্যবসায় কিছু ব্যক্তির নতুন করে আবির্ভাবের তথ্য আমরা পেয়েছি। তাদের বিষয়ে আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি। মাদক পাচার আমরা সর্বদা গুরুত্বের সঙ্গেই দেখে থাকি। অতীতের মতোই আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। ’
বিগত সময়ে চট্টগ্রাম অঞ্চলে মাদক উদ্ধারে নেতৃত্বে থাকত পুলিশ। আগস্ট বিপ্লবের পর থমকে গেছে পুলিশের সেই কার্যক্রম। এতে করে জ্যামিতিক হারে কমেছে মাদকবিরোধী অভিযানও। এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলতে রাজি হননি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে বলেন, আগস্ট বিপ্লবের পর সবচেয়ে বড় ঝড় গেছে পুলিশের ওপর দিয়ে। এতে করে পুলিশ মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। এরপর থেকেই কার্যত সব ধরনের অভিযান থমকে গেছে। ফলে মাদক উদ্ধার উল্লেখযোগ্যহারে কমে এসেছে।
জানা যায়, আগস্ট বিপ্লবের পর মাদকের অন্ধকার জগতেও আসে বড় ধরনের পরিবর্তন। বিগত সময়ে ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় থেকে মাদকের সাম্রাজ্যে ছড়ি ঘুরানো মাদক মাফিয়ারা চলে গেছেন পর্দার আড়ালে। অন্যদিকে দীর্ঘ সময় কারাগারে থাকা মাদক মাফিয়ারা জামিনে মুক্ত হয়ে নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছেন মাদক সাম্রাজ্য। নতুন করে শুরু করেছেন মাদক বাণিজ্য। মাফিয়ারা পুরনো রুট ব্যবহার করে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ইয়াবা পাচার করছেন। কিন্তু মাদক পাচারের চিহ্নিত রুট আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো আগের মতো সক্রিয় না হওয়ায় অপ্রতিরোধ্যভাবেই চলছে মাদক পাচার।
এর আগে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করতে গত জুলাই মাসে বৃহত্তর চট্টগ্রাম বিভাগের ২৯৮ শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীর তালিকা তৈরি করে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগ। তালিকায় স্থান পাওয়া মাদক ব্যবসায়ীদের সিংহভাগই হচ্ছে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম এবং মাদকের বিশেষ জোন টেকনাফের বাসিন্দা।
কিন্তু গত ৫ আগস্ট ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর থমকে যায় সেই কার্যক্রম। এরই মধ্যে পর্দার আড়ালে চলে যায় সিংহভাগ মাদক ব্যবসায়ী। এতে থমকে গেছে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের নেওয়া সেই পদক্ষেপ।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০২৫
এসআইএস