ঢাকা, মঙ্গলবার, ২ পৌষ ১৪৩১, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

লালমনিরহাটে শুরু হলো বউ-জামাই মেলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২৪
লালমনিরহাটে শুরু হলো বউ-জামাই মেলা জামাই মেলা।

লালমনিরহাট: গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে লালমনিরহাটে ১৫ দিনের জন্য বসেছে বউ জামাই মেলা। মেলায় থাকছে মাছ ও পিঠার আসর।

 

সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে লালমনিরহাট সদর উপজেলার বড়বাড়ি শহীদ আবুল কাশেম মহাবিদ্যালয় মাঠে এ মেলার উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক উপমন্ত্রী আসাদুল হাবীব দুলু। মেলা চলবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।  

আয়োজকরা জানান, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে ১৫ দিনব্যাপী বউ-জামাই মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে।

প্রথম দিন উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে মেলাজুড়ে। গলায় মালা ও শাড়ি পড়ে মেয়ে-জামাই মেলায় এসে আনন্দ উপভোগ করেছেন। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত ও আশপাশের জেলা থেকে দর্শনার্থীরা মেলায় যোগ দিয়েছেন। মেলায় হরেক রকমের পিঠা ও নানা প্রজাতির মাছ নিয়ে দোকানিরা পসরা সাজিয়ে বসেছেন।  

মেলায় প্রতিদিন সকালে মৎস্য উৎসব ও বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত চলবে পিঠা উৎসব। মেলা উপলক্ষে সদর উপজেলার চারটি ইউনিয়নের অনেকের বাড়িতে এসেছেন মেয়ে ও জামাই। গলায় মালা ও লাল শাড়ি পড়ে নতুন রূপে সেজে-গুজে মেয়ে-জামাই এসেছেন মেলায়। তারা শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার জন্য কিনছেন বড় মাছ ও নানান রকমের পিঠা-পুলি। নতুন জামাই বাড়িতে আসবে বলে শ্বশুরদেরও কিনতে হচ্ছে বড় বড় মাছ।  

মেলায় আগত দর্শনার্থীদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, অনেক আশায় মাছ এবং পিঠা নিতে মেলায় এসেছি। কিন্তু বিক্রেতারা মাছ ও পিঠার দাম হাঁকাচ্ছেন বেশি। তবে দাম যাই হোক গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য মেলায় আসা বউ ও জামাই পছন্দ মতো মাছ ও পিঠা কিনে শ্বশুরবাড়ির দিকে রওনা দিচ্ছেন।

বিক্রেতারা বলছেন আড়তেই দাম চড়া। এ কারণে পরিবহন খরচ নিয়ে এই মাছগুলোর বিক্রি করতে হয়। মেলায় বিক্রি বেশি হয় তাই লাভ কম করি। পিঠা বিক্রেতারা বলছেন, সব জিনিসেরই দাম বেশি হওয়ায় এ বছর পিঠা দাম একটু বাড়াতে হয়েছে।

মেলা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ফারুক সিদ্দিকী জানান, গ্রামীণ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে বউ-জামাই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। জামাই মেলা থেকে বড় মাছ কিনে শ্বশুরবাড়ি যাবে আর হরেক রকম পিঠা খাবে।  

এছাড়াও নতুন প্রজন্মের শিশুরা বিলুপ্ত প্রায় অনেক প্রজাতির মাছের সঙ্গে পরিচিত হতে পারবে। সব মিলিয়ে গ্রাম-বাংলার হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতেই মূলত এ ব্যতিক্রমী মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, এই মেলার তাৎপর্য হলো এ অঞ্চলের জামাইরা বউ নিয়ে সকাল বেলায় এই মাছের মেলায় আসেন। বড় বড় মাছ নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে যাবেন। শাশুড়ি দুপুরে রান্না করবেন। শ্বশুর-শাশুড়ি ও তার অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন মাছের তরকারি দিয়ে দুপুরের খাবার খাবেন। খেয়ে আবার বিকেলে পিঠার মেলায় আসবেন। রাত পর্যন্ত চলবে বিভিন্ন গ্রামীণ নাটক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।