ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

২০৩০ সালের মধ্যে জনসংখ্যার ৫৭ শতাংশই হবে যুবক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪২ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২৩
২০৩০ সালের মধ্যে জনসংখ্যার ৫৭ শতাংশই হবে যুবক

ঢাকা: বর্তমান বিশ্বে তরুণ প্রজন্মই সবচেয়ে বেশি। ৩০ বছরের কম বয়সী তিন বিলিয়নেরও বেশি তরুণ আছে পুরো বিশ্বে।

আর আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে পৃথিবীর অর্ধেকের বেশি মানুষ ৩০ বা তার কম বয়সী অর্থাৎ যুবকদের দ্বারা পূর্ণ হবে। আন্তর্জাতিক এক সমীক্ষায় এই সেটি ৫৭  শতাংশতে পৌঁছবে বলে আশা করা হয়েছে।

শুক্রবার (১১ আগস্ট) রাজধানীর বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে বেসরকারি এনজিও লাইট হাউসের আয়োজনে ও ইউএসএআইডি সুখী জীবন প্রকল্প এবং পাথফাইন্ডার ইন্টারন্যাশনালের সহযোগিতায় মিডিয়া অ্যাডভোকেসি সভায় এসব অভিমত গণমাধ্যমে তুলে ধরা হয়।

সেখানে বলা হয়, তরুণদের প্রশিক্ষণ ও সুন্দর গাইড-লাইনের মধ্যে আনতে না পারলে আগামীতে বিশ্বে মহাবিপর্যয় নেমে আসতে পারে। তাই এ ব্যাপারে এখনিই পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি তাদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে পদক্ষেপ নেওয়া এবং স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রগুলোকে যুববান্ধব করা অত্যন্ত প্রয়োজন। কেননা যে কোনো দেশের প্রাণ শক্তি হলো তরুণ সমাজ। আজকের কিশোর, তরুণ ও যুবরাই আগামীর পরিবার, সমাজ ও দেশের চালিকাশক্তি। তাদের সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম করে জাতি গঠনের কোনো বিকল্প নেই বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন বক্তারা।

লাইট হাউসের নির্বাহী প্রধান মো. হারুন অর রশিদের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির সভাপতি মুরসালিন নোমানী এবং বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরামের সদস্য সচিব ও দৈনিক আজকালের খবরের সম্পাদক ফারুক আহমেদ তালুকদারসহ লাইট হাউজের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এছাড়া সভায় বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সেখানে এক সমীক্ষায় দেখানো হয় যে ৬৭ শতাংশ লোক একটি ভালো ভবিষ্যতে বিশ্বাস করেন। এই বিষয়ে সবচেয়ে বেশি আশাবাদী ১৫ থেকে ১৭ বছর বয়সীরা। ফলে বিশ্বের জনসংখ্যার অর্ধেক হিসেবে, সুস্থ তরুণ প্রজন্মের সমাজের উন্নতিতে সাহায্য করার বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে ২০২২ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার মধ্যে তরুণ হচ্ছেন ৩৭ দশমিক ৭১ শতাংশ বা ৬ কোটি ২২ লাখ ৮১ হাজার জন। এর মধ্যে ১০-১৪ বছর বয়সী কিশোর কিশোরী ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ, ১৫-১৯ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরী ১০ দশমিক ০৩ শতাংশ, ২০-২৪ বছর বয়সী যুবক-যুবতী ০৯ দশমিক ০৮ শতাংশ এবং ২৫-২৯ বছর বয়সী যুবক যুবতী ৮ দশমিক ৭১ শতাংশ। এই বিপুল জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রাপান্তর করতে হবে।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুরসালিন নোমানী বলেন, দেশের প্রাণশক্তি হলো তরুণ সমাজ। তাদের যথাযথ গাইডলাইনের মাধ্যমে গড়ে তুলতে হবে। এইচএসসির পরীক্ষার পর মেধা অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের দেশ ও দেশের উন্নয়নে কাজে লাগাতে হবে। অন্যথায় উন্নয়নের চাকা থেমে পিছিয়ে পড়বে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে কারিগরি ও টেকনিক্যাল বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। একই সঙ্গে দেশের বিশাল এই যুব সমাজকে রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজনীতিসহ সব বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি স্বাস্থ্য সেবা উন্নত করতে হবে। সবাই যদি নিজের ও পরিবারের জন্য সঠিক তথ্য জেনে সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন এবং আকাঙ্ক্ষিত গুণগতমানসম্পন্ন ও সমতাভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যায় তবেই নিশ্চিত করা সম্ভব হবে সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম জাতি। এতেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

তিনি আরও বলেন, পরিকল্পিত পরিবার গঠনের পাশাপাশি, নিরাপদ ও সুষ্ঠু প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা সবার জন্য নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি কাজ করছে বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা। তারপরেও এর পরিধি আরও বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে গণমাধ্যমকর্মীদেরও অনেক ভূমিকা আছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সভায় জানানো হয়, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ অর্জন করতে হলে সব বয়সি মানুষের সক্ষমতার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের পাশাপাশি সবার অধিকার, বিশেষত প্রজনন অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে সামাজিক রীতিনীতি ও বিশ্বাস অনেক ক্ষেত্রেই তরুণ প্রজন্মের প্রজনন অধিকার ও স্বাস্থ্য সেবা বাধাগ্রস্ত করে। এ থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজন আন্তঃপ্রজন্মের সংহতি ও সহযোগিতা।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২৩
টিএ/এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।