ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

মাধবকুণ্ডে ‘বিষলতা’ দিয়ে মাছশিকারে মরেছে জলজপ্রাণী

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০১৯
মাধবকুণ্ডে ‘বিষলতা’ দিয়ে মাছশিকারে মরেছে জলজপ্রাণী মাধবকুণ্ডে বিষলতা দিয়ে মাছ শিকার। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: বড়লেখা উপজেলায় অবস্থিত মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতে বুনোবিষের কারণে মরেছে জলজপ্রাণী। হুমকির মুখে পড়েছে সেখানকার জীববৈচিত্র্য। সেই ঝরনার তলদেশে বুনোবিষ প্রয়োগ করে একশ্রেণীর অসাধু মাছশিকারি মাছসহ জলজপ্রাণী শিকার করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। 
 

জানা যায়, রোববার (০৩ নভেম্বর) পাথারিয়া পাহারের মাধবকুণ্ড ঝরনায় বনখেকো দুষ্কৃতিকারীরা ক্ষতিকর বিষ প্রয়োগ করে। এতে মাছ, ব্যাঙসহ বিভিন্ন প্রজাতির জলজপ্রাণী মরে ভেসে ওঠে।

যার দুর্গন্ধ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে।
 
মাধবকুণ্ডে বেড়াতে আসা পর্যটকরা এসব মরা জলজপ্রাণী ভেসে ওঠা দৃশ্য দেখে অবাক হন। তবে স্থানীয়রা মৃতপ্রায় মাছগুলোকে পানি থেকে তুলে নিয়ে যান।
 
স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, পাথারিয়া পাহাড়ের উপর দিয়ে বয়ে চলা বিভিন্ন খালে সংঘবদ্ধ চোরাকারবারীরা বিষ প্রয়োগ করে মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির জলজপ্রাণী শিকার করে চড়ামূল্যে বিক্রি করে। তার মধ্যে কাটুয়া, কুঁচিয়া অন্যতম। চোরাকারবারীরা এসব অবৈধ কাজ দীর্ঘদিন থেকে করে এলেও বনবিভাগ নীরব ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
 
এ ব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা এবং বড়লেখা উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, মাধবকুণ্ডে মাছ মারা যাওয়ার ঘটনাটি ‘বিষলতা’ নামক বুনো লতাগুল্মের কারণে হতে পারে। কেউ মাছ শিকারের জন্য বিষলতার ডাল ছিঁড়ে পিষে এর রস পানিতে মিশিয়ে থাকতে পারে।
 
তিনি আরো বলেন, ‘কিছু কিছু মাছ শিকারি আছে যারা এভাবে মাছ শিকার করে থাকে। ঝরনার উপরেও দিতে পারে বা নিচেও দিতে পারে। ঝরনার উপর-নিচ সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত নই। তবে কোথাও না কোথাও তারা এ বিষলতা পানিতে মিশিয়েছে। ’
 
‘বিষ’ সম্পর্কে তিনি বলেন, বিষ দুই রকম আছে। একটি রাসায়নিক বিষ; অপরটি প্রাকৃতিক বিষ। এখানে আমাদের ধারণা প্রাকৃতিক বিষ পানিতে মেশানো হয়েছে। রাসায়নিক বিষ দিলে মাছ, কাঁকড়াসহ সব জলজপ্রাণী একত্রে মরে না। বাইম, টাকি মাছ, কাঁকড়াসহ অন্যান্য জলজপ্রাণী মরে না। তবে প্রাকৃতিক বিষ ‘বিষলতা’ দিলে সব মরে শেষ হয়ে যায়। এখানে এটা হয়েছে। তবে পানি পরীক্ষা করে দেখা গেছে পানির মান স্বাভাবিক আছে। পানিতে কোনো সমস্যা নেই। পানিতে রাসায়নিক জাতীয় বিষ পাওয়া যায়নি বলে জানান সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ।
 
বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম আল ইমরান বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।
  
বাংলাদেশ সময়: ২০৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০১৯
বিবিবি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।