ত্রিপুরা সরকারের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দফতর নোম্যান্সল্যান্ডে আনারস চাষে উৎসাহীদের সহায়তা করা হবে বলে বাংলানিউজকে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন দফতরের মন্ত্রী প্রণজীৎ সিংহ রায়।
ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলার ক্যাপিটেল কমপ্লেক্সস্থিত মহাকরণে নিজ দফতরে মন্ত্রী বলেন, রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে আটশো কিলোমিটারের বেশি, এই এলাকায় রয়েছে নোম্যান্সল্যান্ড।

সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ড।
এই জায়গায় ধানসহ অন্যান্য সবজি চাষ হচ্ছে। আবার বেশ কিছু জায়গায় টিলা এবং উঁচু, এর বেশিরভাগ জমি কোনো কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে না পতিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। নোম্যান্সল্যান্ডের পতিত জমির পরিমাণ প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টরের বেশি। এই জমিতে ইতোমধ্যে আনারস চাষ শুরু করেছেন জমির মালিকেরা। আগামী বছর এই জমির বাগান থেকে আনারস তোলা সম্ভব হবে।রাজ্যের দক্ষিণ জেলার বিভিন্ন এলাকা নোম্যান্সল্যান্ডে আনারস চাষ হচ্ছে। পড়ে থাকা জমি কাজে লাগানো যায় তাই সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে। এতে করে একদিকে যেমন জমির ব্যবহার হবে তেমনি জমির মালিক আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। এই বিষয়ে চিন্তা করে সরকার যাদের জমি নোম্যান্সল্যান্ডে পতিত অবস্থায় রয়েছে তাদেরকে আনারস চাষে উৎসাহিত করছে বলেও জানান মন্ত্রী।
পাশাপাশি মন্ত্রীর দিন আরও জানান করোনা ভাইরাসের জেরে গোটা বিশ্ব যখন থমকে গিয়েছে শিল্প কারখানায় উৎপাদন তলানিতে এসে গেছে। গভীর সংকটের মুখে পড়েছেন চাষিরাও। এই অবস্থায় ত্রিপুরা রাজ্যের আনারস বর্হিঃরাজ্য রফতানি হচ্ছে। বুধবার (২৪ জুন) প্লেনে করে আগরতলা বিমানবন্দর থেকে ভারতের জাতীয় রাজধানী দিল্লিতে ৫শ কেজি আনারস গিয়েছে। এছাড়া মঙ্গলবার (২৩ জুন) সড়ক পথে কন্টেনার ভ্যানে করে ১০ মেট্রিক টন আনারস ভারতের বাণিজ্য নগরী মুম্বাইয়ের উদ্দ্যেশে রওয়ানা দিয়েছে।
আনারস। ছবি: বাংলানিউজ
এই রফতানিকৃত আনারসগুলো রাজ্যের ঊনকোটি জেলার দারচৈ এলাকার আনারস চাষিদের কাছ থেকে কিনেছেন বর্হিঃরাজ্যের ক্রেতারা এবং এগুলো কিউই প্রজাতির আনারস। প্রতিটি আনারস ১৫ রুপি করে চাষিদের কাছ থেকে কেনা হয়েছে। এই অবস্থায় ত্রিপুরা রাজ্য থেকে আনারস বর্হিঃরাজ্যের ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যাওয়া আনারস চাষিদের মধ্যে খুশির আমেজ বিরাজ করছে।এছাড়াও প্রতিবেশী রাজ্য আসামের করিমগঞ্জ শিলচারসহ আশেপাশের এলাকাগুলোর ব্যবসায়ীরা নিয়মিতভাবে ক্যুইন আনারস কিনে নিচ্ছেন। পাশাপাশি আগরতলার বিভিন্ন বাজারসহ রাজ্যের অন্যান্য জায়গাতেও ক্যুইন প্রজাতির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সবমিলিয়ে আনারসের মৌসুমের শুরুতে রাজ্যের আনারস চাষিরা করোনা পরিস্থিতি নিয়ে যে আশঙ্কা করেছিলেন বিশেষ করে বর্হিঃরাজ্য রফতানির বিষয়টি নিয়ে তারা যেটুকু আশঙ্কা করেছিলেন তার অনেকটাই কেটে গিয়েছে বললেও দাবি করেন মন্ত্রী।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ যে ত্রিপুরার পশ্চিম জেলা মোহনপুর এলাকায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ডে চা-বাগানও করেছেন কয়েকজন চাষি। পাশাপাশি এবার আনারস চাষ শুরু হয় আশা করা হচ্ছে গোটা নোম্যান্সল্যান্ডে এখন কৃষি কাজে ব্যবহৃত হবে। এতে করে কৃষকরা আর্থিকভাবে উপকৃত হবেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৩০৮ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০২০
এসসিএন/এএটি