ঢাকা, রবিবার, ১ পৌষ ১৪৩১, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বাড়ির প্রবেশপথ চেয়ে সংবাদ সম্মেলন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২০
বাড়ির প্রবেশপথ চেয়ে সংবাদ সম্মেলন

ফরিদপুর: নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বাড়ি নির্মাণ করায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন নারী উদ্যোক্তা জান্নাতুল ফাতেমা ও তার পরিবারের সদস্যরা। রাস্তা দখল করে বাড়িতে প্রবেশের পথ আটকে ঘর নির্মাণ করায় যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে ওই পরিবারটির। 

পৌরসভার নিয়মানুযায়ী বাড়িতে যাতায়াতের পথ খোলা রাখার দাবিতে পৌর মেয়রসহ উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো ফল পায়নি ওই ভুক্তভোগী পরিবারটি।

সুবিচার পাওয়ার আশায় সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নাগরিক অধিকার বঞ্চিত জান্নাতুল ফাতেমা।

রোববার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জান্নাতুল ফাতেমা এ অভিযোগ করেন। বক্তব্য উপস্থাপনের একপর্যায়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।        

সংবাদ সম্মেলনে জান্নাতুল ফাতেমা জানান, বর্তমানে বাড়িতে প্রবেশের পথ একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। পাশেই বিটিসিএল (টিএন্ডটি) অফিসের চত্বর ঘুরে ওই অফিসের সীমানা প্রাচীরের ফোকর দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। সংসারের নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল বহনের সময় বার বার বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে বিটিসিএল অফিসের প্রহরীদের দ্বারা।

নারী উদ্যোক্তা জান্নাতুল ফাতেমা আরও জানান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাজ শেষে রাতে বাড়ি ফেরার সময় ওই অফিসের মূল ফটক বন্ধ হয়ে গেলে সেই রাতে আর বাড়িতে ফেরা সম্ভব হয় না। কমপক্ষে ৮/১০ দিন, রাত ৯টা পার হয়ে যাওয়ায় গেট বন্ধ থাকায় বাড়িতে ঢুকতে না পেরে অন্য আত্মীয়ের বাড়িতে রাত কাটাতে হয়েছে। যাতায়াতে এতটাই বিঘ্ন হয়েছে যে, ঘরে মজুদ থাকা খাবার শেষ হয়ে গেলে নতুন করে আর কোনো মালামাল নেওয়া সম্ভব না। এমনকি জ্বালানির জন্য গ্যাসের সিলিন্ডারও বাড়িতে নেওয়ারও পথ নাই। এমন অবস্থা চলতে থাকলে বৃদ্ধা মা, সন্তান ও নাতি-নাতনিদের নিয়ে না খেয়ে ঘরের ভেতরেই মৃত্যু হবে আমাদের। এমনকি আমার বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে তা নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা গ্রহণ বা কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য তাকে বের করে আনারও কোনো রাস্তা নেই।

সম্মেলনে তিনি জানান, ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট ওয়ারলেস পাড়ায় গত ২০০০ সালে ডা. বিশ্বনাথ রায় ও নিতিশ কুমার দত্তের কাছ থেকে ১০ শতাংশ জমি কেনেন ফাতেমা ও তার বোন খালেদা বেগম। জমি বিক্রেতার সঙ্গে চুক্তি মোতাবেক যাতায়াতের রাস্তা রেখে ফরিদপুর পৌরসভা থেকে পাকা ভবন নির্মাণের নকশার অনুমোদন নেওয়া হয় এবং ভবন নির্মাণও শেষ হয়। পরবর্তীকালে বাড়ির সামনের ফাঁকা জমির মালিক শাহনাজ বাবু ও কবির হোসেন পৌরসভার নিয়মনীতি না মেনে নির্ধারিত ওই রাস্তা দখল করে টিনশেডের আধাপাকা ভবন নির্মাণ করেন। এ সময় রাস্তা রেখে ঘর নির্মাণের জন্য বলা হলেও কর্ণপাত করেননি তারা।  

এ বিষয়ে পৌরসভার মেয়র, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দিয়েও কোনো ফল হয়নি।

তিনি অভিযোগ করেন, রাস্তা দখল করে বাড়ি নির্মাণকারীরা স্থানীয় প্রভাবশালীদের আত্মীয়-স্বজন হওয়ায় তারা বরাবরই আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে যাচ্ছে।

পরিবারের বৃদ্ধ ও শিশুদের কথা চিন্তা করে এবং নাগরিক অধিকার ফিরিতে দিতে প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন জান্নাতুল ফাতেমা।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।