ঢাকা, শনিবার, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

দুদক কর্তাদের ওপর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া চেয়ারম্যানের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০২০
দুদক কর্তাদের ওপর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া চেয়ারম্যানের দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। ফাইল ফটো

ঢাকা: বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সকাল ১০টা, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সমন্বয় সভা শুরু হয়েছে মাত্র। এতে সভাপতিত্ব করছিলেন কমিশনের সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখত। হঠাৎই সেখানে প্রবেশ করেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে মাইক্রোফোন নিয়ে কমিশনের সচিব, সব মহাপরিচালক ও পরিচালকদের উদ্দেশে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেন। 

অপ্রত্যাশিতভাবে দুদক চেয়ারম্যানের আগমনে হকচকিয়ে যান কর্মকর্তারা। চেয়ারম্যান নিজ দপ্তরে বসেই যে সভাটি মনিটরিং করছিলেন, বিষয়টি জানা ছিল না কারও।

 

এসময় ইকবাল মাহমুদ বলেন, আমি ব্যথিত, ক্ষুব্ধ এবং দুঃখিত। আপনারা কি আপনাদের নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছেন? আপনারা ঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করার কারণেই নির্ধারিত সময়ে অভিযোগের অনুসন্ধান ও তদন্ত সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে না। কীভাবে ত্রুটিপূর্ণ প্রতিবেদন কমিশনে উপস্থাপিত হয়? এতে দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুদকের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হচ্ছে। মনে রাখবেন, দুদক একটি গণপ্রতিষ্ঠান। জনগণের কাছে দুদকেরও জবাবদিহিতা রয়েছে। তাই আপনাদেরও জবাবদিহিতা করতে হবে।

তিনি বলেন, অনুসন্ধান ও তদন্তে টাইমলাইন না মানার জন্য রেকর্ডপত্র সময়মতো না পাওয়ার বিষয়টি আপনার বলে থাকেন। কী ভয়ঙ্কর কথা! কে রেকর্ডপত্র দেয় না? যে বা যারা অনুসন্ধান বা তদন্ত সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আপনাদের রেকর্ডপত্র ইচ্ছাকৃতভাবে সরবরাহ করছে না, তাদের বিরুদ্ধে কেন দুদক আইন, ২০০৪-এর ১৯(৩) ধারায় মামলা হচ্ছে না? ইচ্ছাকৃতভাবে যারা দুদকের অভিযোগ অনুসন্ধান ও তদন্তে সংশ্লিষ্ট তথ্য সরবরাহ করছে না, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে দুদক আইন অনুযায়ী মামলা দায়ের করতে হবে। কেউ যেন ছাড় না পায়। আপনারা আইনি দায়িত্ব পালন করবেন। একটিও বেআইনি কাজ করতে পারবেন না। আইনি দায়িত্ব পালন না করে বসে থাকবেন, এটা কমিশন মেনে নেবে না। এভাবে বেআইনি যুক্তির মাধ্যমে অভিযোগের অনুসন্ধান বা তদন্তে টাইমলাইন না মানার সংস্কৃতি সহ্য করা হবে না।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দেশের জনগণ মনে করে সবখানেই দুর্নীতি রয়েছে। তাই দুদকের প্রতি তাদের আকাশচুম্বী প্রত্যাশা। তাদের চাহিদার তুলনায় কমিশনের জোগান তো নগণ্য। এর দায় কে নেবে? আপনাদেরই নিতে হবে। আপনাদের পদোন্নতি, দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণ, সবই তো দেওয়া হচ্ছে। তারপরও আপনারা কেন নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করবেন না। বছরের শুরুতেই সতর্ক করছি। গুনে গুনে হিসাব নেওয়া হবে। কেউ ব্যর্থ হলে জবাবদিহি করতে হবে এবং শাস্তি পেতে হবে।

ক্ষুব্ধ ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুদক মামলা দায়ের করার পর সেই মামলায় তো ফাইনাল রিপোর্ট মিথ্যা হতে পারে না? এ জাতীয় ঘটনা কীভাবে কমিশনে উপস্থাপিত হয়? তাহলে আপনারা কি দুদক আইনের ২৮ ধারা সম্পর্কে সম্যক ধারণাও রাখেন না? কেউ যদি মিথ্যা জেনে বা তথ্যের সত্যতা সর্ম্পকে সম্পূর্ণ নিশ্চিত না হয়ে কমিশনে মামলা দায়ের করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪-এর ২৮ (গ) ধারায় মামলা মামলা হচ্ছে না কেন? আজ থেকে এ জাতীয় মিথ্যা মামলা দায়েরকারী তিনি যেই হন না কেন, তার বিরুদ্ধেও আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০২০
ডিএন/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।