ঢাকা, বুধবার, ২৫ চৈত্র ১৪৩১, ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ১০ শাওয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সংবিধানের মূল সাজসজ্জার পরিকল্পনাকারী ছিলেন শিল্পাচার্য

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৪
সংবিধানের মূল সাজসজ্জার পরিকল্পনাকারী ছিলেন শিল্পাচার্য ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ময়মনসিংহ: বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানের মূল সাজসজ্জার পরিকল্পনাকারী ছিলেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি।

তিনি বলেছেন, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনকে বঙ্গবন্ধু আমাদের প্রথম সংবিধানের প্রতিটি পৃষ্ঠার অলংকরণ ও সাজসজ্জার পুরো পরিকল্পনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন।

তার সঙ্গে অনেক শিল্পী কাজ করেছেন। কিন্তু মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন জয়নুল নিজেই।

বিংশ শতাব্দীর অন্যতম বাঙালি চিত্রকর শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদ পাড়ে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা প্রাঙ্গণে এক অনুষ্ঠানের উদ্বোধনের সময় তিনি এ কথা বলেন। ৬ দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

এতে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মোস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকীর সভাপতিত্বে এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহিত উল আলম, শিল্পাচার্য তনয় খায়রুল আবেদিন, জাতীয় যাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুর লতিফ, ট্রাস্ট্রি বোর্ডের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান, জেলা পুলিশ সুপার মঈনুল হক।

এ সময় অন্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন, বরেণ্য শিল্পী মোস্তফা মনোয়ার, সরজিৎ রায় চৌধুরী, হাশেম খান, রফিকুন নবী, আবুল বারাকাত আলভী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালার উপ-কিপার ড. বিজয় কৃষ্ণ বণিক প্রমুখ।

পুরনো ও স্যাঁতস্যাঁতে ভবনে জয়নুলের বিখ্যাত ছবিগুলো প্রদর্শনের জন্য উপযুক্ত নয় বলেও মনে করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সংস্কৃতি মন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ময়মনসিংহে জয়নুল সংগ্রহশালা ভবনটি চিত্র প্রদর্শনীর জন্য উযপুক্ত নয়। এ ছবিগুলো অনন্য।

undefined


তিনি বলেন, যেভাবে এটি বিকশিত হওয়া উচিত ছিল সেইভাবে হয়নি। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমরা সংস্কৃতির ক্ষেত্রে কিছু কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। অমূল্য এসব চিত্র প্রদর্শনীর জন্য ভবন হতে হবে এমন যেন দেয়ালে কোনো আদ্রতা না থাকে। সেটা যেন সব সময় শুকনা থাকে। আমরা চেষ্টা করবো এখানে আধুনিক একটি নতুন ভবন নির্মাণ করার জন্য।

মন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের সাধ্য সীমিত। চাইলেই সব করতে পারি না। আমরা চেষ্টা করবো শিল্পাচার্যের জন্মশত বছরের সর্বশেষ অনুষ্ঠানটি ময়মনসিংহে করার।

ময়মনসিংহের জয়নুল স্মৃতি সংগ্রহশালায় থাকা জয়নুলের শিল্পকর্মসমূহকে জাতীয় সম্পদ বলেও অভিহিত করেন আসাদুজ্জামান নূর। একই সঙ্গে এ চিত্রকর্মগুলো ঢাকায় নিয়ে যাবার চিন্তা-ভাবনার কথাও জানান তিনি।

ঐতিহ্যবাহী ভবন শশীলজ নিয়েও নিজের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন সংস্কৃতি মন্ত্রী। বলেন, ময়মনসিংহের একটি ঐতিহ্যবাহী ভবন শশীলজ নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। এ ভবনটি বর্তমানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে রয়েছে। এটি আমাদের হস্তান্তর করা হলে নতুন পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করবো।

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের আঁকা শিল্পকর্ম নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করছে মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, জয়নুলের আঁকা শিল্পকর্ম ও ব্যবহার্য সামগ্রি যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, জয়নুল নিজে ছবি আঁকতেন এবং মানুষকে আঁকতে শিখিয়েছেন। তিনি চেয়েছেন, এদেশের মানুষ ছবি আঁকতে শিখুক। সেই চাওয়া থেকেই শুরু করেছিলেন চারুকলা ইনস্টিটিউট।

অনুষ্ঠানে শিল্পকর্মে অবদানের জন্য শিল্পী মোস্তফা মনোয়ার, শিল্পী হাসেম খান, শিল্পী রফিকুন নবী ও প্রয়াত কাইয়ুম চৌধুরীকে জয়নুল সম্মননা ক্রেস্ট ও এক লাখ টাকার চেক তুলে দেন।  

বাংলাদেশ সময়: ২১০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।