রংপুর: রংপুরের গঙ্গাচড়ায় যৌতুকের জন্য নির্যাতনের পর স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী মুশফিকুর রহমান সোহাগকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহতের পরিবার ও পুলিশ জানায়, প্রায় দুই বছর আগে গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়নের চেংমারী মান্দ্রাইন গ্রামের আউয়াল হোসেনের মেয়ে শারমিন খাতুনের (২০) সাথে একই উপজেলার গজঘণ্টা ইউনিয়নের জয়দেব মধ্যপাড়া গ্রামের মহুবর রহমানের ছেলে সোহাগ মিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় নগদ এক লাখ টাকা ও আসবাবপত্রসহ যৌতুক দিলেও সোহাগ এতে সন্তুষ্ট ছিলেন না। বিয়ের ছয় মাসের মাথায় আরও যৌতুকের দাবিতে শারমিনের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু হয়। শারমিন একসময় বাবার বাড়িতে ফিরে গিয়ে যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা করেন। তখন থেকেই শারমিন তার বাবার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। গত প্রায় ছয় মাস আগে স্থানীয়ভাবে আপস-মীমাংসার মাধ্যমে শারমিনকে তার স্বামীর বাড়িতে নেওয়া হয়। এরপর মামলাটিও প্রত্যাহার করা হয়। এরপরও যৌতুকের জন্য তাকে নির্যাতন করা হতো।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) গভীর রাতে গজঘণ্টা ইউনিয়নের জয়দেব এলাকা থেকে ওই গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে সোহাগের বাড়ি থেকে শারমিনের বাবার বাড়িতে ফোন করে জানানো হয়, তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। শারমিনের পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে দেখেন, পুলিশ ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করেছে।
নিহতের পরিবারের দাবি, শারমিনের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে, যা প্রমাণ করে তাকে নির্যাতনের পর পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। অনেক আগে থেকেই যৌতুকের জন্য তাকে নির্যাতন করা হতো।
শারমিনের বাবা আউয়াল হোসেন বলেন, আমি মেয়ের বিয়ের সময় সাধ্যমতো যৌতুক দিয়েছিলাম। কিন্তু তাতেও তারা সন্তুষ্ট ছিল না। আমার মেয়েকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি বিচার চাই।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন গঙ্গাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) আল এমরান। তিনি জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করা হয়েছে, তদন্ত চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ২২১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২৫
এএটি