ঢাকা: বিজিবির সঙ্গে স্থানীয় জনগণের শক্ত অবস্থানের কারণে সীমান্তে ভারত কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
রোববার (১২ জানুয়ারি) আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সম্প্রতি সীমান্তের পাঁচটি জায়গায় ভারত কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকাজ শুরু করেছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সঙ্গে স্থানীয় জনগণের শক্ত অবস্থানের কারণে ভারত ওইসব স্থানে কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের সঙ্গে সীমানা নির্ধারণ এবং উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে এ পর্যন্ত চারটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এগুলোর মধ্যে ছিল- সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে ডিফেন্স পোটেনশিয়ালিটি আছে এমন কাজ কেউ করতে পারবে না। শূন্য লাইন থেকে ১৫০ গজের মধ্যে কোনো উন্নয়নমূলক কাজ করতে গেলে একে অপরের সঙ্গে কাছ থেকে সম্মতি নিতে হবে। সম্মতি ছাড়া তারা এ কাজটা করতে পারবে না। ভারত কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান ৪ হাজার ১৫৬ কিলোমিটার সীমানার মধ্যে ৩ হাজার ২৭১ কিলোমিটারে ইতোমধ্যে বেড়া দিয়ে দিয়েছে। বাকি আছে ১ হাজার ৮৮৫ কিলোমিটার। বিগত সরকারের সময় ২০১০ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ভারত সীমান্তে কিছু অসম কাজ করেছে, যেটা ভারতের করা উচিত হয়নি। কিন্তু আমাদের আগের সরকার সুযোগ দিয়েছে। এ সুযোগের মধ্যে তারা ১৬০টি স্থানে কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছে, সেখানে ঝামেলা রয়েছে। ৭৮টি স্থানে আরেকটি ঝামেলা রয়েছে। এখন পাঁচটি স্থানে ঝামেলা দেখা দিয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ, লালমনিরহাটের তিন বিঘা করিডোর, নওগাঁর পত্নীতলা, ফেনী, কুষ্টিয়া ও কুমিল্লায় সম্প্রতি (কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ নিয়ে) ঝামেলা দেখা দিয়েছে।
কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ নিয়ে বিজিবি ও বিএসএফের ভেতরে একটা আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের বিজিবি শক্ত অবস্থান নেওয়ায় ভারত কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু এখানে একটা বড় সমস্যা হচ্ছে আমাদের আগের সরকার কিছু কিছু জায়গায় লিখিত দিয়ে গেছে এ জায়গায় এটা করতে পারবে, ওই জায়গায় ওইটা করতে পারবে। কিন্তু এগুলো তাদের দেওয়াটা উচিত হয়নি। বিজিবির সঙ্গে আমাদের জনগণ শক্ত অবস্থান নেওয়ায় তারা কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে। এজন্য আমি বিজিবি ও আমাদের দেশের জনগণকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হচ্ছে। আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হয়তো তাদের হাইকমিশনারকে ডেকে বসতেও পারে। যে এটার ব্যাপারে কী করবেন।
সীমান্তে আজকের অবস্থা কী- এ বিষয়ে তিনি বলেন, কাজ বন্ধ আছে। যে কয়টা জায়গায় কাজ শুরু হয়েছিল সব জায়গায় বন্ধ আছে। আমরা এ কাজগুলো করতে দেব না। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে ভারতে প্রতিনিধি যাবে। পাশাপাশি আমরা একটা চিঠি দেব যে অসম সমঝোতাগুলো হয়েছে সেগুলো যেন বাদ দেওয়া হয়।
সরকার কঠোর হবে কিনা জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আমরা তো কঠোরই, কাজগুলো করতে দেব না ।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২৫, আপডেট: ১৫০০ ঘণ্টা
এসকে/আরবি