ঢাকা, রবিবার, ২৮ পৌষ ১৪৩১, ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ১১ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ক্ষেতে পাকছে মিষ্টি কুমড়া, দেখা নেই পাইকারের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২৫
ক্ষেতে পাকছে মিষ্টি কুমড়া, দেখা নেই পাইকারের হাজীগঞ্জ উপজেলায় মিষ্টি কুমড়া ক্ষেতে কৃষক

চাঁদপুর: চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায় গত বছরের চাইতে দ্বিগুণ জমিতে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ফলন ভালো হলেও বিক্রি করতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।

দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকার না আসায় জমিতেই পাকতে শুরু করেছে কুমড়া। দ্রুত বিক্রি করতে না পারলে জমিতে বোরো আবাদ নিয়ে দেখা দেবে শঙ্কা। তবে কৃষকদের এসব কুমড়া বাজারে নিয়ে বিক্রির পরামর্শ দিয়েছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।

জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কুমড়ার কম-বেশি আবাদ হলেও হাজীগঞ্জের ডাকাতিয়া নদী এলাকায় পলিমাটি ঘেরা বলাখলা ও শ্রীনারায়ণপুর, অলিপুর গ্রামে চাষ করা হয়েছে মিষ্টি কুমড়া। সাধারণত গ্রীষ্মকালীন ফসলের জন্য অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মিষ্টি কুমড়ার আবাদ করা হয়। এবছর এলাকায় মিষ্টি কুমড়ার পাশাপাশি খিরা ও শসার আবাদ হয়েছে এবং ফলনও ভালো।

হাজীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, মৌসুম ভিত্তিক নিরাপদ শাকসবজিসহ বিভিন্ন ফসল আবাদে কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের নিয়মিত উদ্বুদ্ধ করা হয়। এ অঞ্চলের মাটি অপেক্ষাকৃত উর্বর। তাই শাকসবজি আবাদে সময়, শ্রম ও খরচ কম হওয়ায় প্রতি বছরই মিষ্টি কুমড়ার আবাদ বাড়ছে। এ বছর উপজেলার প্রায় ৬১৮ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ হয়েছে।

কৃষকরা জানান, চলতি মৌসুমে বলাখাল, শ্রীনারায়ণপুর গ্রামজুড়ে চাষাবাদ করা হয়েছে হাইব্রিড জাতের কুমড়া। এ কুমড়া এখন বিক্রি হওয়ার সময়। প্রতি বছর এ সময়ে জমিনের প্রায় ৬০ ভাগ কুমড়া বিক্রি হয়ে যায়। এ বছর কুমড়া আবাদ করে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। কারণ কুমড়া জমিতে পেকে রয়েছে, নেই কোনো পাইকার।



বলাখাল এলাকার কৃষক জসিম উদ্দিন বলেন, প্রতি বছর এ সময়ে ঢাকার কারওয়ান বাজার, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর থেকে পাইকার আসে কুমড়া কিনে নিতে। এ বছর পাইকারদের দেখা নেই। যদি আর ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে কুমড়াগুলো বিক্রি করতে না পারি তাহলে মাঠে বোরো ধান চাষ করা সম্ভব হবে না।

অলিপুর গ্রামের কৃষক ছিদ্দিক বলেন, অন্যান্য বছর মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করতে আমাদের চিন্তা করতে হয় না। বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা এসে জমি থেকে কিনে নিতেন। প্রতি পিস কুমড়া ৫০ থেকে ১০০ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি হয়েছে। এবার কুমড়ার বাজার দর নেই, পাইকারও নেই। স্থানীয় বাজারে ৬ থেকে ৭ কেজি ওজনের একটি কুমড়া ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি করছি। তবুও ক্রেতা পাচ্ছি না।

হাজীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলরুবা খানম জানান, এ বছর হাজীগঞ্জ উপজেলায় মিষ্টি কুমড়ার আবাদ হয়েছে দ্বিগুণ। ২০২৩ সালে আবাদ হয়েছে ২৮৬ হেক্টর জমিতে। এ বছর ৬১৮ হেক্টরেরও বেশি জমিতে বাণিজ্যিকভাবে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ হয়েছে। ক্রেতা না থাকায় বিপাকে পড়েছে কৃষক। তবে আমরা কৃষকের এসব মিষ্টি কুমড়া বিভিন্ন পাইকারি বাজারে নিয়ে বিক্রি করার পরামর্শ দিচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ০৮১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২৫
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।