বেইজিং থেকে ফিরে: বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো সর্বাধুনিক ডিজিটাল প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকছে চীনের গণমাধ্যম। কিভাবে আরো বেশি পাঠকদের সম্পৃক্ততা বাড়ানো যায়, তা নিয়েও চেষ্টার শেষ নেই।
ঢাকার চীনা দূতাবাসের আমন্ত্রণে ঢাকা থেকে একটি সাংবাদিক প্রতিনিধি দল বেইজিং সফর করে। প্রতিনিধিদলের বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে ছিলো চীনা গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন। প্রতিনিধি দল চীনের তিনটি শীর্ষ পর্যায়ের গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে। এই তিনটি প্রতিষ্ঠান হলো সিনহুয়া নিউজ এজেন্সি, পিপলস ডেইলি ও চায়না ডেইলি। এসব প্রতিষ্ঠানের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়।
সিনহুয়া: সিনহুয়া নিউজ এজেন্সি চীনের সবচেয়ে বড় মিডিয়া প্রতিষ্ঠান। বিশ্বের মধ্যে সর্বপ্রথম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার খবর পাঠকও নিয়ে আসে সিনহুয়া। এ থেকেই বোঝা যায়, প্রতিষ্ঠানটি প্রযুক্তিতে কতটা এগিয়ে। মাল্টিমিডিয়া এজেন্সি হিসেবে সিনহুয়া অত্যাধুনিক থ্রিডি স্টুডিও গড়ে তুলেছে। বাংলাদেশের সাংবাদিক প্রতিনিধি দলকে স্টুডিওটি ঘুরিয়ে দেখানো হয়। এছাড়া সিনহুয়ার প্রধান অফিসের বিভিন্ন বিভাগের কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করে প্রতিনিধি দল।
সিনহুয়ার কর্মকর্তারা প্রতিনিধি দলকে জানান, চীন ছাড়াও বিশ্বজুড়ে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে থাকে সিনহুয়া। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কিভাবে এগিয়ে যেতে পারে, তা নিয়েও নানা উদ্যোগ রয়েছে বলে তারা জানান।
বিশ্বজুড়ে ১০ হাজারেরও বেশি কর্মী কাজ করেন এই প্রতিষ্ঠানে। বিশ্বের অন্যান্য মিডিয়ার সঙ্গে তালমিলিয়ে সিনহুয়াও ডিজিটাল প্রযুক্তিতে ঝুঁকছে। পাঠকদের কাছে যেতে সামাজিক গণমাধ্যমও ব্যবহার করে পাঠকদের আরো কাছে যেতে চাইছে সিনহুয়া। সে কারণে সিনহুয়ার ফেসবুক ফলোয়ারের সংখ্যা ৯৭ মিলিয়ন। আর এক্স'য়ে (টুইটার) সিনহুয়ার ফলোয়ার সংখ্যা ১১.৮ মিলিয়ন। অবশ্য এক্স'য়ে সিনহুয়ার বিভিন্ন ভাষার আলাদা আলাদা অ্যাকাউন্ট ও ফলোয়ার রয়েছেন। চীনা ভাষা ছাড়াও ফরাসি, স্প্যানিশ, আরবি, পর্তুগিজ প্রভৃতি ভাষায় সিনহুয়া সংবাদ পরিবেশন করে থাকে।
পিপলস ডেইলি: ১৯৪৮ সাল থেকে প্রকাশিত পত্রিকাটির বয়স ৭৬ বছর। প্রিন্ট ও অনলাইনে প্রকাশিত হয় পিপলস ডেইলি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ৮৪ মিলিয়ন ফলোয়ার, এক্স (টুইটার) ৬.৫ মিলিয়ন ফলোয়ার টিকটকে ১৭০ মিলিয়ন ফলোয়ার রয়েছে। ইন্সটাগ্রাম ও ইউটিউব চ্যানেলও রয়েছে পিপলস ডেইলির। বিশ্বের ১৪টি ভাষায় প্রকাশিত হয় পত্রিকাটি। অ্যাপ ডাউনলোড করেও পড়া যায় পত্রিকাটি। পিপলস ডেইলি অফিসে একটি গবেষণা বিভাগ দেখা গেল। সেখানের কর্মকর্তারা জানালেন, পত্রিকাকে কিভাবে আগামীতে আরো এগিয়ে নেয়া যায়, তা নিয়ে প্রতিনিয়ত গবেষণা প্রয়োজন হয়। গবেষণা বিভাগ সেই কাজটিই করে থাকে।
চায়না ডেইলি: ১৯৮১ সাল থেকে প্রকাশিত হচ্ছে চায়না ডেইলি। প্রিন্ট, অনলাইন ও মোবাইলে পত্রিকাটি পড়েন ৩৫০ মিলিয়ন পাঠক। ১৮০ টি দেশ থেকে ৩৬ মিলিয়ন পাঠক পত্রিকাটির মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড করেছে। ফেসবুকে ১১৬ মিলিয়ন ফলোয়ার, টুইটারে ৪.১ মিলিয়ন ফলোয়ার, সিনা ওয়েবো ৬০ মিলিয়ন, উইচ্যাট ১১ মিলিয়ন ফলোয়ার। চায়না ডেইলি অফিস ঘুরে দেখা গেল, চায়না ডেইলিকে ব্রান্ডিং করার জন্য নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিশেষ করে ব্রান্ডিংয়ের জন্য পত্রিকার নাম দিয়ে নোটবুক, কলম, ঘড়ি, চাবির রিংসহ নানা ধরনের শো পিস তৈরি করা হয়েছে। পত্রিকা অফিসের একটি কর্নারে সেসব বিক্রিও করা হয়ে থাকে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৭ ঘন্টা, ডিসেম্বর ১৭,২০২৪
টিআর/এমএম