ঢাকা, মঙ্গলবার, ২ পৌষ ১৪৩১, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

দামুড়হুদায় সাবেক এমপি-ওসির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০২৪
দামুড়হুদায় সাবেক এমপি-ওসির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা আলী আজগার ও সুকুমার বিশ্বাস

চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র রোকনুজ্জামানকে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ হত্যার ঘটনায় পাঁচ বছর পর মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এ মামলার অন্যতম আসামি করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজগার (টগর) ও দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকুমার বিশ্বাসকে।

 

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে দামুড়হুদা আমলি আদালতে মামলাটি দায়ের করেন নিহত ছাত্রের বাবা আবু বক্কর ছিদ্দিক।  

আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তফা কামাল মামলা আমলে নিয়ে তা তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ঝিনাইদহ কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মামুন আখতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।  

মামলার উল্লেখযোগ্য অপর আসামিরা হলেন- দামুড়হুদা মডেল থানার তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) কেএম জাহাঙ্গীর, সহকারী পরিদর্শক (এসআই) তপন কুমার নন্দী ও শেখ রফিকুল ইসলাম, কনস্টেবল দিপু গাঙ্গুলী, খালিদ মাসুদ, নজরুল ইসলাম, শফিউর রহমান ও ফিরোজ ইকবাল এবং আওয়ামী লীগ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী দর্শনা পৌর এলাকার দক্ষিণ চাঁদপুরের মাছুম, সুমন, রাজিব ও সজল।

মামলার বাদী দর্শনা দক্ষিণ চাঁদপুর গ্রামের আবু বক্কর ছিদ্দিক দামুড়হুদা উপজেলা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি।  

মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, রোকনুজ্জামান ২০১৯ সালে চুয়াডাঙ্গা ফার্স্ট ক্যাপিটাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের আইন বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।  

বেআইনি, অনৈতিক কার্যকলাপ ও চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় এবং ভিন্ন মতের অনুসারী হওয়ায় আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে রোকনুজ্জামানকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিলেন।  

আসামি আলী আজগার ভোট চুরির মাধ্যমে নির্বাচিত ভুয়া সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আলী আজগারের নির্দেশে ২০১৯ সালের ২৯ আগস্ট দুপুরে আসামি সজল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র রোকনুজ্জামানকে কৌশলে মোবাইলফোনে ডেকে দক্ষিণ চাঁদপুর ছটাঙ্গার মাঠে যেতে বলেন।

বাবা আবু বকর ছিদ্দিককে জানিয়ে রোকনুজ্জামান আসামি সজলের সঙ্গে ছটাঙ্গার মাঠে যান। সেখানে পৌঁছানোর পর আসামিরা অস্ত্রের মুখে রোকনুজ্জামানকে অপহরণ করেন। এরপর পরিবারের পক্ষ থেকে খোঁজখবর করেও কোথাও পাওয়া যায়নি। পরদিন সকালে লোকমুখে জানতে পারেন দামুড়হুদার জয়রামপুর কাঁঠালতলার বখতিয়ার মিয়ার বাঁশ বাগানে রাত ২টার দিকে একজনকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে গিয়ে বাদী ছেলে রোকনুজ্জামানের লাশ শনাক্ত করেন। ময়নাতদন্ত শেষে ওইদিন রাতে তার দাফন করা হয়।

মামলায় আরজিতে আরও বলা হয়েছে, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী রোকনুজ্জামানকে হত্যার উদ্দেশে এজাহারভুক্ত ১১-১৫ নম্বর আসামি কৌশলে অপহরণ করেন। এরপর প্রধান আসামি আলী আজগারের নির্দেশে ওসিসহ পুলিশ সদস্যরা রোকনুজ্জামানকে গুলি করে হত্যা করেন। সন্তানের দাফন শেষে বাদী আবু বকর ছিদ্দিক ৩১ আগস্ট দামুড়হুদা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করলেও পুলিশ তা মামলা হিসেবে নেয়নি। বাদী দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকায় বাড়িতে ফিরে মামলা করতে দেরি হয় বলে আরজিতে উল্লেখ করেছেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১১৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০২৪
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।