ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বনানী কবরস্থানে সুনসান নীরবতা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০২৪
বনানী কবরস্থানে সুনসান নীরবতা ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: গত ১৫ বছর ধরে প্রতি বছর ১৫ আগস্টের সকাল থেকে মানুষের পা ফেলার জায়গা থাকতো না বনানী কবরস্থানে। শ্রদ্ধা, ফুলের ডালা, প্রার্থনায় শামিল হতে দলে দলে মানুষের ঢল নামতো এই কবরস্থানে।

 

কারণ, এখানেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাড়া ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে তার পরিবারের নিহত ১৮ জনকে দাফন করা হয়েছিল। সে কারণে প্রতিবছর আওয়ামী লীগসহ তার অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি বিভিন্ন দপ্তর, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এখানে শ্রদ্ধা জানাতে আসতো হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু এবছর মানুষের ঢল নেই বনানী কবরস্থানে। সুনসান নীরবতা সেখানে।

বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সকাল থেকে বনানী কবরস্থানে এমন চিত্র দেখা যায়।

এদিন সরেজমিনে দেখা যায়, দলীয় নেতাকর্মীদের আনাগোনা নেই। সুনশান নীরবতা পুরো কবরস্থানজুড়ে। করবগুলোতে অন্যান্য বছর ফুলেল শ্রদ্ধায় শিক্ত হতো, তবে এ বছর কবরগুলোতে নেই একটি ফুলের ডালাও। কোনো নেতাকর্মীদের উপস্থিতিও নেই। তবে মাঝেমধ্যে বিচ্ছিন্নভাবে দুই-একজন নেতাকর্মী কবর জিয়ারত করতে কবরস্থানে প্রবেশ করে আবার বের হয়ে যাচ্ছেন।

বনানী কবরস্থানে পরিচ্ছন্নতার কাজ করে খোরশেদ আলম বলেন, অন্যান্য বছর এই ১৫ আগস্টের দিনে বনানী করবস্থানে শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের ভিড়ে পা ফেলার জায়গা পাওয়া যেত না। কিন্তু আজ কোনো নেতাকর্মীদের এখানে আসতে দেখিনি। কবরগুলোতে অন্যান্য বছর ফুলের ডালার স্তূপ পড়ে যেত। কিন্তু এবার কবরগুলোতে একটিও ফুল নেই।

ছবি: শাকিল আহমেদ

একই রকম বর্ণনা দিলেন বনানী কবরস্থানের বাইরে বসে চা-বিক্রেতা খোকন আহমেদ।  

তিনি বলেন, সকাল থেকে বনানী করবস্থানে কোনো নেতাকর্মীদের আসতে দেখেনি। অন্যান্য বার কবরস্থানের বাইরে এখানে গাড়ির পার্কিং করার জায়গা থাকতো না, ভোরবেলা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাজার হাজার নেতাকর্মীরা এখানে আসতেন। কিন্তু আজ ১৫ আগস্ট কোনো মানুষের ভিড় নেই। তবে দুই একজন বিচ্ছিন্নভাবে এসে কবর জিয়ারত করে চলে যাচ্ছেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর একদল কর্মকর্তা ও সৈনিকের হাতে সপরিবারে জীবন দিতে হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা ও তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে। তার পরিবারের ছয় বছরের শিশু থেকে শুরু করে অন্তঃসত্ত্বা নারীও সেইদিন ঘাতকের গুলি থেকে রেহাই পাননি। আজ বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে তার পরিবারের নিহত ১৮ জনকে দাফন করা হয়েছিল এই বনানী কবরস্থানে।

দীর্ঘদিন ধরে ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে সরকারি ছুটির দিন রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করে এসেছে। যদিও আওয়ামী সরকারের পতনের পর বুধবার (১৪ আগস্ট) ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের সাধারণ ছুটি বাতিল করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০২৪
এমএমআই/এসএএইচ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।