ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঈশ্বরদী

ছাত্রাবাসের ট্রাঙ্কে মিললো কিশোরের খণ্ডিত মরদেহ

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪০ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০২৪
ছাত্রাবাসের ট্রাঙ্কে মিললো কিশোরের খণ্ডিত মরদেহ

পাবনা (ঈশ্বরদী): জেলার ঈশ্বরদীতে ছাত্রাবাস থেকে তপু হোসেন (১৪) নামে এক কিশোরের অর্ধগলিত খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২২ জুন) বিকেলে ঈশ্বরদী শহরের সরকারি কলেজের পেছনে মশুরিয়াপাড়ার অরণ্য ছাত্রাবাসের ৩০৫ নম্বর কক্ষে একটি টিনের ট্রাঙ্ক থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত তপু হোসেন সরকারি কলেজ সংলগ্ন খান মঞ্জিল এলাকার রিকশা চালক আবুল কাশেমের ছেলে।

নিহত তপুর বড় ভাই অপু বলেন, ১৫ জুন সকাল আনুমানিক ১১টা থেকে তপুর মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। ওইদিন রাত ১০টার দিকে তপুর ফোন নম্বর থেকে জানানো হয় আপনার ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। বিকাশে ৩০ হাজার টাকা না দিলে তপুকে হত্যা করা হবে। তখন খরচসহ সাত হাজার টাকা দেওয়া হয়। এরপর থেকেই তপুর ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। এর পরদিন আমার মা বাদী হয়ে ঈশ্বরদী থানায় সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেন।

অপু আরও জানান, স্থানীয়দের সঙ্গে শত্রুতার জের ধরেই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বন্ধুদের দিয়ে বাড়ির পাশের অরণ্য ছাত্রাবাসের তিন তলার ওই কক্ষে নিয়ে হত্যা করা হয় তাকে। এরপর মরদেহ টুকরো টুকরো করে ট্রাঙ্কে ভরে রেখে হত্যাকারীরা পালিয়ে যায়।

অরণ্য ছাত্রাবাসের ৩০৪ নম্বর কক্ষে থাকা কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের তৃতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ বলেন, ঈদের ছুটিতে আমি গত ১১ জুন বাড়িতে চলে যাই। শনিবার আমি দুপুরের দিকে ছাত্রাবাসের নিজ কক্ষে ফিরে আসি। এসময় কক্ষ থেকে দুর্গন্ধ বের হয়। পরে পাশের ৩০৫ নম্বর কক্ষের দরজায় রক্ত দেখতে পেয়ে আমি মেসের আয়ার মাধ্যমে মেস মালিককে বিষয়টি জানাই। খবর পেয়ে পুলিশ ওই কক্ষের তালা খুলে ট্রাঙ্কের ভেতরে রাখা মরদেহের টুকরো উদ্ধার করে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, নিহত তপু একই এলাকার কয়েকজন উঠতি বয়সী মাদকাসক্ত ছেলেদের সঙ্গে চলাফেরা করতো। তারা সব সময় স্থানীয় হাসুর দোকানে বসে আড্ডাও দিত। সম্প্রতি তপুও মাদক সেবন শুরু করেছিল। ঈদের আগে মাদক সেবনকে কেন্দ্র করেই এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে।

ঈশ্বরদী থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, নিহত তপুর মা বাদী হয়ে থানায় জিডি করেছেন। পরে মশুড়িয়াপাড়ার একটি মেসে ট্রাঙ্কের ভেতর থেকে অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এঘটনায় সন্দেহজনক তিনজনকে আটক করা হয়েছে।

আটককৃতদের বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, নিহত তপু মাদকসেবী ছিল। মাদকসেবনকে কেন্দ্র করেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। তারা ক্রাইম পেট্রোলে ক্রাইমসিন দেখে ও ঝনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডের মত মরদেহ গুমের পরিকল্পনা করে। সেভাবে তারাও তপুকে হত্যা করে টুকরো টুকরো করে ট্রাঙ্কের রেখেছে বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে আটকরা।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পাবনা পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি) আকবর আলী মুন্সি বলেন, হত্যার রহস্য উদঘাটনের লক্ষ্যে সন্দেহভাজন তিনজনকে আটক করা হয়েছে। অহেতুক যেন কাউকে হয়রানি না করা হয় সেদিকে লক্ষ রাখার জন্য থানা পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।