ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ‘ইন্ডিপেনডেন্ট ফান্ড’ গঠনের দাবি 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০২৩
সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ‘ইন্ডিপেনডেন্ট ফান্ড’  গঠনের দাবি 

ঢাকা:  সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ‘ইন্ডিপেনডেন্ট ফান্ড’ গঠন করে  প্রতিবছর সর্বোচ্চ ৩ হাজার কোটি টাকা হলেই ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. মাহবুব উদ্দিন আহমেদ।

শনিবার(২১ অক্টোবর) রাজধানীর ধানমণ্ডির ১০/এ রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

 

এ ফান্ড সংগ্রহের পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি বলেন,  পুলিশ কর্তৃক মোটরযান থেকে জরিমানার অর্থের একটি অংশ এবং বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠানের সিএসআর ও অনুদান থেকে এই পরিমাণ অর্থ খুব সহজেই সংগ্রহ করা সম্ভব।

ইন্ডিপেনডেন্ট ফান্ড গঠিত হলে সড়ক দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে আহত রোগীকে ব্যক্তিগত অর্থ ছাড়াই উপযুক্ত চিকিৎসা প্রদান করা সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।  

তিনি বলেন, রোগীকে একটি মেডিকেল কোড নম্বরে চিহ্নিত করে উপযুক্ত যেকোনো হাসপাতাল তার চিকিৎসা শুরু করবে। পরবর্তীতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর চিকিৎসা খরচ ইন্ডিপেনডেন্ট ফান্ড থেকে গ্রহণ করবে। এই কার্যক্রম যথাযথ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতিমুক্তভাবে বাস্তবায়নের জন্য একটি শক্তিশালী মাল্টি সেক্টরাল কেন্দ্রীয় কমিটি থাকতে হবে।  

সিভিল প্রশাসন, পুলিশ, চিকিৎসক, সড়ক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ, আইনজীবী, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি, পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধি, সড়ক নিরাপত্তায় কাজ করা সংস্থাসমূহের প্রতিনিধি ইত্যাদির সমন্বয়ে এই কমিটি গঠন করার পরামর্শ দেন তিনি।  

গত ৫ বছরের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০১৯ সালে ৪৬৯৩ টি দুর্ঘটনায়  ৫২১১ জন নিহত ও আহত হয়েছে ৭১০৩ জন। ২০২০ সালে ৪৭৩৫ টি দুর্ঘটনায় ৫৪৩১ জন নিহত ও আহত হয়েছে ৭৩৭৯ জন। ২০২১ সালে ৫৩৭১ টি দুর্ঘটনায় ৬২৮৪ জন নিহত ও আহত হয়েছে ৭৪৬৮ জন। ২০২২ সালে ৬৮২৯ টি দুর্ঘটনায় ৭৭১৩ জন নিহত ও আহত হয়েছে ১২৬১৫ জন। অন্যদিকে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪২৯৬ টি দুর্ঘটনায় ৪৩৬২ জন নিহত ও আহত হয়েছে ৭৮২৩ জন।  

সড়ক দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনে উঠে আসে: 
১. ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন; ২. বেপরোয়া গতি; ৩. চালকদের অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা; ৪. চালকদের বেতন-কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট না থাকা; ৫. মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল; ৬. তরুণ-যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো; ৭. জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা; ৮. দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা; ৯. বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি; ও ১০.গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।

সড়ক দুর্ঘটনার রোধ করতে কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরেছে সংগঠনটি:
১. দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে; ২. চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে; ৩. বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে; ৪. পরিবহন মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের সুষ্ঠুপ্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে; ৫. মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ করে এগুলোর জন্য সার্ভিস রোড তৈরি করতে হবে; ৬. পর্যায়ক্রমে সকল মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে; ৭. গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে; ৮. রেল ও নৌ-পথ সংস্কার করে সড়ক পথের উপর চাপ কমাতে হবে; ৯. টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন করতে হবে; ১০. সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

 

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫০ ঘণ্টা,অক্টোবর২১,২০২২

এনবি/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।