ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

চাঁদপুরে ৮৮ হরিজন পরিবারের জন্য বানানো হচ্ছে দুটি ভবন

মোহাম্মদ মাসুদ আলম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৩
চাঁদপুরে ৮৮ হরিজন পরিবারের জন্য বানানো হচ্ছে দুটি ভবন

চাঁদপুর: চাঁদপুর শহরের স্বর্ণখোলা কলোনির হরিজন সম্প্রদায়ের ৮৮ পরিবার পাচ্ছে দুটি পাঁচতলা ভবনে আলাদা আলাদা ফ্ল্যাট। যাদের এ দুই ভবনে স্থানান্তর করা হবে, ওই জায়গা খালি সাপেক্ষে ওখানে আরও দুটি ভবন করার কাজ হাতে নেওয়া হবে।

এ তথ্য জানিয়েছেন ইউএনডিপির এক কর্মকর্তা। পৌরসভার মেয়র জানালেন, এখন ফ্ল্যাট নির্মাণের পাশাপাশি সেখানে হরিজনদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে কমিউনিটি সেন্টার ও শিশুদের জন্য পার্কসহ অন্যান্য নাগরিক সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা হবে।

স্বর্ণখোলায় গিয়ে দেখা যায়, পুকুর পাড়ে ভবন দুটির ছাদ পেটানোসহ কয়েক তলার কাজ অনেকটা হয়েছে। আর এতে আনন্দিত পরিচ্ছন্নতাকর্মী হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন।

চাঁদপুর পৌরসভা ও ইউএনডিপি সূত্রে জানা যায়, শহরের নয় নম্বর ওয়ার্ডের স্বর্ণখোলার হরিজন সম্প্রদায়ের জন্য পাঁচতলা বিশিষ্ট দুটি ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এ দুই ভবন নির্মাণের টাকা দিচ্ছে শেখ হাসিনার সরকার। ইউএনডিপি, এলজিইডি ও চাঁদপুর পৌরসভার তত্ত্বাবধানে নির্মাণাধীন এ ভবন দুটির কাজ সমাপ্ত করতে সর্বমোট ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১০ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে হরিজন সম্প্রদায়ের আকাশ, বিপ্লব, খোকনসহ অনেকে বলেন, নতুন ভবন হচ্ছে, এজন্য আমরা খুব খুশি। তবে আমাদের জন্য বরাদ্দ হচ্ছে একটি এক কক্ষের ফ্ল্যাট। তার মধ্যেই রান্নাঘর ও টয়লেট থাকবে। যা অনেকটা ছোট মনে হচ্ছে। তবে ধর্মীয় দিক ও ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার দিকটি মাথায় রেখে আমাদের জন্য ভবনগুলোতে যদি দুটি কক্ষ, রান্নাঘর, টয়লেট সুবিধা দেওয়া হয়, তাহলে আমাদের জন্য কিছুটা ভালো হতো।

এ বিষয়ে চাঁদপুর শহরের ইউএনডিপি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের ম্যানেজার মো. আব্দুল হান্নান বলেন, নারীর নেতৃত্বে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক উন্নয়ন কাজের অংশ হিসেবে হরিজন সম্প্রদায়ের জন্য স্বল্প ব্যয়ে আবাসন প্রকল্পের অংশ হিসেবেই ভবন দুটি করা হচ্ছে। যেটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। এখানে হরিজনদের ফাঁকা স্থানে দুটি ভবনে ৮৮টি ফ্ল্যাটে ৮৮টি পরিবারের মধ্যে ফ্ল্যাট হস্তান্তর করার পরিকল্পনা রয়েছে। যাদের এ ভবন দুটিতে স্থানান্তর করা হবে, তাদের বর্তমান জায়গা খালি করা সাপেক্ষে আরও দুটি ভবন করার কাজ পরে হাতে নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, ব্রিটিশ হাইকমিশন থেকে এখানে ইউএনডিপি অর্থায়ন করলেও এ ভবনের বর্ধিত কাজসহ প্রায় ১০ কোটি টাকার পুরোটাই সরকার দিচ্ছে। আমরা তাদের বসবাসের বিষয়টা গুরুত্ব দিয়ে রুমের সাইজ ১৩ ফিট বাই ১০ ফিট করছি। প্রতিটি ভবনের নিচতলায় অনুষ্ঠানের জন্য কমন স্পেস, দ্বিতীয় তলায় ১২টি পরিবার ও তৃতীয় তলায় আটটি পরিবার রাখার পরিকল্পনা করছি। এছাড়া চতুর্থ ও পঞ্চম তলায় আমরা রি অ্যারেঞ্জ করার সুযোগ থাকলে সেটা অবশ্যই করব। এমনকি তাদের মৃত্যুর পর মরদেহ নামানোর জন্য একটা কমন স্পেসের ব্যবস্থা করব।

এ বিষয়ে চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান বলেন, দরিদ্র মানুষের জন্য জনবান্ধব নানামুখী উদ্যোগের মধ্যেই চাঁদপুর পৌরসভার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের আবাসন প্রকল্প। এটি এলআইইউপিসি প্রজেক্টের মাধ্যমে হলেও অর্থায়ন করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার। প্রথম পর্যায়ে ৮৮টি ফ্ল্যাটে ভালো ও উন্নত পরিবেশে তাদের স্থানান্তর করতে সক্ষম হব। সারাদেশের মধ্যে অন্য পৌরসভাগুলোর আগে চাঁদপুর পৌরসভা এ ভবন নির্মাণ কাজ শেষ করবে বলে আশা করছি। এতে পরে আরও কয়েকটি বহুতল ভবন হরিজনদের জন্য আমরা নির্মাণের সুযোগ পাব। সেখানে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সবাইকেই আমরা ফ্ল্যাট দিতে পারব।

২০২২ সালে আগস্ট মাসে এ ধরনের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প চাঁদপুরে পরিদর্শনে আসেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সেই সময়ের ব্রিটিশ হাইকমিশনার এইচই রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন ও তার প্রতিনিধিদল। তখন ব্রিটিশ হাইকমিশনার বলেছিলেন, এ প্রকল্পের মাধ্যমে হরিজনদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি, পড়াশোনা ও কর্মসংস্থানের বিষয়ে সচেতন করতে পেরে আমরা বেশ আনন্দিত। যা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।