ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সাংবাদিক নাদিম হত্যার বিচার চান রাঙামাটির সংবাদকর্মীরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৫ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২৩
সাংবাদিক নাদিম হত্যার বিচার চান রাঙামাটির সংবাদকর্মীরা

রাঙামাটি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের জামালপুর ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যার তীব্র নিন্দা এবং খুনিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের জোর দাবি জানিয়ে পৃথক বিবৃতি দিয়েছেন রাঙামাটির সংবাদকর্মীরা।  

বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) রাতে সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা এ নিন্দা জানান।

রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন রুবেল এবং সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আল হক সাংবাদিক নাদিম হত্যার তীব্র নিন্দা ও খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

তারা আরও বলেন, সমাজের অসংগতি তুলে ধরা সাংবাদিকদের কাজ। এমন মহতি এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে গিয়ে বারবার সাংবাদিকরা হত্যার শিকার হচ্ছেন। তাই সাংবাদিক নাদিমসহ অতীতে যত সাংবাদিক হত্যার শিকার হয়েছেন, তাদের খুনিদের আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তি দেওয়ার দাবি জানাই।
এদিকে পার্বত্য সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও ‘সাপ্তাহিক পাহাড়ের সময়’ পত্রিকার সম্পাদক মিল্টন বড়ুয়া, রাঙামাটি সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নাজিম উদ্দিন এবং রাঙামাটি রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক এম কামাল উদ্দিনসহ জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা এ হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানান। সেই সঙ্গে তারা সবাই হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানান।

বুধবার (১৪ জুন) রাতে বাড়ি ফেরার পথে বকশিগঞ্জের পাথাটিয়ায় পৌঁছালে অস্ত্রধারী ১০ থেকে ১২ জন দুর্বৃত্ত নাদিমকে পিটিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
এরপর রাত ১২টায় সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় বৃহস্পতিবার সকালে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা পৌনে ৩টার দিকে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় জড়িত থাকায় এখন পর্যন্ত চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। নিহত সাংবাদিকের মরদেহ রাতে তার নিজবাড়ি গরুহাটিতে নেওয়া হয়।  
শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।
নিহত সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম বাংলানিউজটোয়েন্টিফোরের জামালপুর করেসপন্ডেন্ট ও একটি বেসরকারি টেলিভিশনের উপজেলা প্রতিনিধি ছিলেন।

বকশীগঞ্জের সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর অপকর্ম নিয়ে নিউজ করার জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে দাবি করেছেন নাদিমের স্বজনরা।  

মৃত্যুর আগে নাদিম নিজেও হামলার শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। এর আগে গত ১০ মে ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। এ নিয়ে বাংলানিউজে ‘দুইবার বিয়ের পরও সন্তান-স্ত্রীকে অস্বীকার করছেন ইউপি চেয়ারম্যান!’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
নাদিম হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত আরও নিউজ
পরে ১৪ মে তার স্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে ‘আমি আমার স্বামী চাই, একসঙ্গে সংসার করতে চাই’ শিরোনামে বাংলানিউজে আরও একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।  
পরে ২০ মে সাবিনা ইয়াসমিন তার স্বামী মাহমুদুল আলম বাবুকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার অথবা পদ থেকে তার অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন। বাবু জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এ নিয়েও বাংলানিউজে ‘আ.লীগ থেকে স্বামীর বহিষ্কার চেয়ে স্ত্রীর আবেদন’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়।  
এর আগে গত ১৪ মে ময়মনসিংহ সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে জামালপুরের নাদিমসহ চার সাংবাদিকের নামে মামলা করেন সাধুরপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু। ৩০ মে আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন।

নিহত গোলাম রব্বানির স্ত্রী মনিরা বেগমের অভিযোগ,ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম  বাবু সংবাদ প্রকাশকে কেন্দ্র করে নাদিমের ওপর অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন। আগেও তিনি নানাভাবে তাকে হেনস্তা করার চেষ্টা করেছেন। ওই ইউপি চেয়ারম্যানের লোকজনই তাকে হত্যা করেছেন। তিনি এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪২ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।