ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

চাঁদপুরে স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা, স্বামীর যাবজ্জীবন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৬ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২৩
চাঁদপুরে স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা, স্বামীর যাবজ্জীবন

চাঁদপুর: চাঁদপুরের কচুয়ার আশ্রাফপুরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী শাহনাজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় স্বামী মাইনুদ্দিন মহিনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (১৪ জুন) দুপুরে চাঁদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জান্নাতুল ফেরদাউস চৌধুরী এ রায় দেন।

সাজাপ্রাপ্ত মাইনুদ্দিন মাহিন কচুয়া উপজেলার আশ্রাফপুর ইউনিয়নের আশ্রাফপুর গ্রামের আবু জাফরের ছেলে। হত্যার শিকার শাহনাজ একই ইউনিয়নের চাঙ্গিনী গ্রামের আলী হোসেনের মেয়ে।

মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ২০০৯ সালের ৫ ডিসেম্বর মাইনুদ্দিন শাহনাজকে তার পরিবারের অমতে অপহরণ করে বিয়ে করেন। যে কারণে মাইনুদ্দিনের পরিবার তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়। এরপর মাইনুদ্দিন ও তার পরিবার শাহনাজের কাছে দুই লাখ টাকা যৌতুকের দাবি করে এবং তাকে নির্যাতন করে। ঘটনা জানাজানি হলে শাহনাজকে তার মামা রহুল আমিন পানশাহী গ্রামে নিজ বাড়িতে নিয়ে রাখেন। এরপর মাইনুদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজন অঙ্গীকারনামা দিয়ে শাহনাজকে তাদের বাড়িতে নিয়ে আসেন।  

এরপর ২০১১ সালের ৫ জানুয়ারি মাইনুদ্দিনের পরিবার শাহনাজকে তার বাবার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা এনে দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। কিন্তু যৌতুক এনে দিতে না পারায় বাক-বিতণ্ডার এক পর্যায়ে ওইদিন সকাল আনুমানিক ৭টার দিকে মাইনুদ্দিন শাহনাজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে দিয়াশলাই জ্বালিয়ে আগুন দেয়। এতে শাহনাজের আপাদমস্তক আগুনে পুড়ে যায়।  

অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির মাধ্যমে এ ঘটনা জানতে পেরে শাহনাজের পরিবার তাকে প্রথমে শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করে দেয়। পরে সেখানে ৫ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ১১ জানুয়ারি সকালে তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় শাহনাজের চাচা মো. আকতার হোসেন বাদী হয়ে কচুয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মাইনুদ্দিন, তার পিতা আবু জাফর, মা মনোয়ারা বেগম ও ভাই শাহজাহানকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় কচুয়া থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. নুরুল ইসলামকে। তিনি তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ১ জুন আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

সরকার পক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) খোরশেদ আলম শাওন জানান, মামলাটি দীর্ঘ এক যুগেরও অধিক সময় চলমান অবস্থায় ৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সাক্ষ্য প্রমাণ ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে বিচারক এই রায় দেন। তবে মামলার রায়ের সময় মূল আসামি পলাতক ছিলেন। এছাড়া অপর ৩ আসামিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

এসময় আদালতে আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন মো. ইলিয়াছ মানসুরী।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৩ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২৩
এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।