ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৪ পৌষ ১৪৩১, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মা-বাবার কবরের পাশে শায়িত হবেন সিরাজুল আলম খান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৪ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০২৩
মা-বাবার কবরের পাশে শায়িত হবেন সিরাজুল আলম খান সিরাজুল আলম খানের (দাদা ভাই) প্রতিকৃতি করেছেন শাহজাহান আহমেদ বিকাশ

ঢাকা: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আলীপুর সাহেববাড়িতে শায়িত হবে তার মা-বাবার কবরের পাশে প্রয়াত সিরাজুল আলম খান (দাদা ভাই)। এ তথ্য জানিয়েছেন তার ছোট ভাই ফেরদৌস আলম খান পিয়ারু।

শুক্রবার বিকেলে (৯ জুন) এ তথ্য জানান তিনি।

পিয়ারু বলেন, বিকেল পৌনে ৫টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সে করে দাদা ভাইকে মোহাম্মদপুর আল মারকাজুলে নেওয়া হয়। সেখান থেকে শমরিতা হাসপাতালের মরচুয়ারিতে তাকে রাখতে নিয়ে যাওয়া হবে।

আগামীকাল শনিবার (১০ জুন) সকাল ১০টার দিকে বায়তুল মোকাররমে তার প্রথম জানাজা হবে। দাদা ভাইয়ের ইচ্ছানুযায়ী আমাদের গ্রামের বাড়ি বেগমগঞ্জের আলীপুর সাহেববাড়িতে মা-বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হবে।

এর আগে দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুরাতন ভবনের চতুর্থ তলার আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় মৃত্যু হয় বাংলাদেশের রাজনীতির ‘রহস্য পুরুষ’ হিসেবে পরিচিত সিরাজুল আলম খানের (দাদা ভাই)। দুপুর আড়াইটার দিকে চিকিৎসকরা সিরাজুল আলম খানকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৮২ বছর। এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ জুন) রাত ৯টা ২০ মিনিটে সিরাজুল আলম খানকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক দাদা ভাইয়ের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সিরাজুল আলম খানের মৃত্যুর খবর প্রকাশ পেলে বহু রাজনৈতিক তাকে শেষবার দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান। তাদের মধ্যে ছিলেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) নেতা আ স ম আব্দুর রব। তিনি বলেন, সমস্ত স্মৃতি ও শ্রদ্ধা নিয়ে চলে গেলেন সিরাজুল আলম খান দাদা ভাই। তিনি অত্যন্ত সাহসী, আত্মত্যাগী, কৌশলী, বুদ্ধিমান ব্যক্তি ছিলেন। বাংলাদেশের আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর নামের পর যদি কারও নাম নিতে হয়, তাহলে সিরাজুল আলমের নাম নিতে হবে। অত্যন্ত সাধারণ জীবন যাপন করতেন দাদা ভাই। আজকে রাষ্ট্রের কষ্টের দিন হওয়ার কথা ছিল।

জাসদ নেতা হাসানুল হক ইনু বলেন, বঙ্গবন্ধুর ডান হাত ছিলেন সিরাজুল আলম দাদা ভাই। বাংলাদেশের অনেক কিছুর কাণ্ডারি ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে উনার ভূমিকা ছিল অন্যতম।

স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলন-সংগ্রাম পরিচালনায় তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা সিরাজুল আলম খান, আব্দুর রাজ্জাক ও কাজী আরেফ আহমেদের নেতৃত্বে ষাটের দশকের প্রথমার্ধে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ বা স্বাধীনতার ‘নিউক্লিয়াস’ গঠিত হয়।  

পরে ছাত্র-তরুণদের আন্দোলন সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তারা। বঙ্গবন্ধুরও ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে ছিলেন এই ছাত্রনেতারা।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ভেঙে দুই ভাগ হয়। এরপর ১৯৭২ সালে সিরাজুল আলম খানের উদ্যোগে রাজনৈতিক দল জাসদ প্রতিষ্ঠা হয়।

তিনি কখনও নেতৃত্বে না এলেও জাসদ নেতাদের পরামর্শক ও তাদের ‘তাত্ত্বিক গুরু’ হিসেবে পরিচিত। তাকে সবাই ‘দাদা ভাই’ নামেই ডাকেন।

সিরাজুল আলম খান কখনও জনসমক্ষে আসতেন না এবং বক্তৃতা-বিবৃতি দিতেন না; আড়ালে থেকে তৎপরতা চালাতেন বলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘রহস্য পুরুষ’ হিসেবে তিনি পরিচিত।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৩ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০২৩
এজেডএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।