ঢাকা, মঙ্গলবার, ২ পৌষ ১৪৩১, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

সুদহার ৯ শতাংশ নির্ধারণের বৈধতা চ্যালেঞ্জ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৩ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০২০
সুদহার ৯ শতাংশ নির্ধারণের বৈধতা চ্যালেঞ্জ

ঢাকা: ক্রেডিট কার্ড ছাড়া অন্য সব খাতে ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ নির্ধারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা প্রজ্ঞাপনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়েছে।

রোববার (১ মার্চ) মাহফুজুর রহমান নামে একজন আইনের ছাত্র এ রিট করেছেন বলে জানান তার আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রিটের ওপর শুনানি হতে পারে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে সব তফসিলি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে নির্ধারিত সুদে ঋণ বিতরণ শুরু হবে।

দেশের শিল্প, ব্যবসা ও সেবা প্রতিষ্ঠানসমূহের স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে অধিক সক্ষমতা অর্জনসহ শিল্প ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, ঋণ-বিনিয়োগ পরিশোধে সক্ষমতা এবং কাঙ্ক্ষিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সরকার।

প্রজ্ঞাপন বলা হয়েছে, অশ্রেণিকৃত ঋণ-বিনিয়োগের ওপর সুদ-মুনাফা হার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ নির্ধারণ করা হলো। কোনো ঋণ-বিনিয়োগের ওপর উল্লিখিতভাবে সুদ-মুনাফা হার ধার্য করার পরও যদি সংশ্লিষ্ট ঋণ-বিনিয়োগ গ্রহীতা খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হন সেক্ষেত্রে যে সময়কালের জন্য খেলাপি হবে অর্থাৎ মেয়াদী ঋণ-বিনিয়োগের ক্ষেত্রে খেলাপি কিস্তি এবং চলতি মূলধন ঋণ-বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মোট খেলাপি ঋণ-বিনিয়োগের ওপর সর্বোচ্চ দুই শতাংশ হারে দণ্ড সুদ-অতিরিক্ত মুনাফা আরোপ করা যাবে। বর্ণিত দণ্ডসুদ-অতিরিক্ত মুনাফা ব্যতিরেকে ঋণ-বিনিয়োগের ওপর অন্য কোনো সুদ-মুনাফা-দণ্ডসুদ-অতিরিক্ত মুনাফা আরোপ করা যাবে না। চলতি বছর থেকে ব্যাংকের মোট ঋণ-বিনিয়োগ স্থিতির মধ্যে এসএমই’র ম্যানুফ্যাকচারিং খাতসহ শিল্প খাতে প্রদত্ত সব ঋণ-বিনিয়োগ স্থিতি অব্যবহিত পূর্ববর্তী তিন বছরের গড় হারের চেয়ে কোনোভাবেই কম হতে পারবে না। প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানি ঋণের বিদ্যমান সর্বোচ্চ সুদ-মুনাফা হার ৭ শতাংশ অপরিবর্তিত থাকবে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, বর্তমানে ব্যাংকের ঋণ-বিনিয়োগের উচ্চ সুদ-মুনাফা হার দেশের ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ শিল্পসহ ব্যবসা ও সেবা খাতের বিকাশে প্রধান অন্তরায় হিসেবে দাঁড়িয়েছে। ব্যাংক ঋণ-বিনিয়োগের সুদ-মুনাফা হার উচ্চমাত্রার হলে সংশ্লিষ্ট শিল্প, ব্যবসা ও সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানসমূহের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পায় এবং উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়। এরফলে শিল্প, ব্যবসা ও সেবা প্রতিষ্ঠানসমূহ কখনো কখনো প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মুখীন হয় বিধায় সংশ্লিষ্ট ঋণ-বিনিয়োগ গ্রহীতারা যথাসময়ে ব্যাংক ঋণ-বিনিয়োগ পরিশোধে সমর্থ হয় না। ব্যাংকিং খাতে ঋণ শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয় এবং সার্বিকভাবে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়।

পরে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন জানান, ২৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক একটি সার্কুলার দিয়ে বলেছে- ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলোকে ৯ শতাংশের বেশি লোনের ক্ষেত্রে ইন্টারেস্ট নিতে পারবে না। মৌখিকভাবে বলেছিলো প্রতিষ্ঠানগুলো ৯ শতাংশের বেশি নিতে পারবে না, আর আমানতকারী যারা টাকা রাখেন তাদের ৬ শতাংশের বেশি সুদ দেবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে আমানতকারীদের বিষয়ে কিছু বলা নেই। কিন্তু সুদের হার ৬ শতাংশের কারণে এবং কমানোর কারণে ২ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কী পলিসি ডিসিশনের কারণে এটা করা হয়েছে সেটা জানতে আদালতের কাছে বক্তব্য তুলে ধরবো। সার্কুলারে শুধু ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের কথা রয়েছে। অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কথা নাই। এখন তারা চাইলে যা ইচ্ছা ইন্টারেস্ট নিতে পারবে। শুধু ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান কেন, পলিসি ডিসিশনের ক্ষেত্রে সবাইকে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।  
 
তিনি বলেন, রিটে সার্কুলারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে সার্কুলারটি স্থগিত চেয়েছি। বাংলাদেশ ব্যাংক এসে বলুক কী কারণে সার্কুলারটি বৈধ।
 
রিটে অর্থ সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ তিনজনকে বিবাদী করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: এপ্রিল থেকে ৯ শতাংশ সুদে ব্যাংক ঋণ

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৯ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০২০
ইএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।