ঢাকা, বুধবার, ২৪ পৌষ ১৪৩১, ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭ রজব ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ন্যায়বিচারটা দেখতে চাই, ট্রাইব্যুনাল প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৭, ২০২৫
ন্যায়বিচারটা দেখতে চাই, ট্রাইব্যুনাল প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি সংস্কার করা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মূল ভবনের সামনে প্রধান বিচারপতিসহ অন্যরা

ঢাকা: ‘এ জাতির মতো একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দিকে তাকিয়ে আছি। ন্যায় বিচারটা দেখতে চাই।

সংস্কার করা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মূল ভবন উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে এ ভবন উদ্বোধন করা হয়।

উদ্বোধনের সময় আপিল বিভাগের বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার, সদস্য বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনের পর প্রধান বিচারপতি পুরো ভবন ঘুরে দেখেন। এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, এ জাতি অনেক আশা নিয়ে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আইসিটির (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল) দিকে তাকিয়ে আছে। এ দেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমি ঠিক সেই আশা আকাঙ্ক্ষা নিয়ে তাকিয়ে আছি। সংস্কারটা দেখতে চাই এবং ন্যায়বিচার দেখতে চাই।

এর আগে এক লিখিত বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, এই ভূখণ্ডের বিচার বিভাগীয় ইতিহাসে ঐতিহাসিক স্থাপনাটি ‘ঢাকা হাইকোর্ট’ বা ‘পুরাতন হাইকোর্ট ভবন’ হিসেবে যে মহান ঐতিহ্য ধারণ করে আছে, ২০২৪ এর জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনয়ন, যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া ও ন্যায়বিচারের শ্বাশ্বত নীতিগুলোর অনুসরণের মাধ্যমে তা নতুন মাত্রায় পূর্ণতা পাবে।

ট্রাইব্যুনালের প্রতি প্রধান বিচারপতির প্রত্যাশা সম্পর্কে তিনি বলেন, একজন সাধারণ নাগরিক তার হৃদয় উৎসারিত অকৃত্রিম চেতনাবোধ থেকে সমগ্র জাতির নৈতিক সমর্থনপুষ্ট একটি গণজোয়ার রুখতে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রতি যে প্রত্যাশা রাখেন, প্রধান বিচারপতিও ঠিক অনুরূপ প্রত্যাশা রাখেন।

নতুন রূপে সজ্জিত হওয়া এই ভবন ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের পর নতুন পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের গভর্নরের বাসভবন হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল, কিন্তু এটি কখনও ব্যবহার করা হয়নি। এই পুরাতন হাইকোর্ট ভবনটি পাকিস্তান আমল থেকে ‘ঢাকা হাইকোর্ট’ হিসেবে ব্যবহার হচ্ছিল।

২০১০ সালে শুরু হওয়া একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের পুরো বিচারকাজ সম্পন্ন হয় এই ভবনে। তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর ব্যবহার কমে আসে ভবনটির। তবে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় শেখ হাসিনা সরকারের সময় ট্রাইব্যুনালটি পাশের টিনশেড স্থাপনায় স্থানান্তর করা হয়।

গত ১৪ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রজ্ঞাপন জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির মধ্য দিয়ে শুরু হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম।

ট্রাইব্যুনালের পুরাতন ঐতিহাসিক এ ভবনের সংস্কার কাজ চলমান থাকায় আপাতত ভবন সংলগ্ন অস্থায়ী টিনশেড ঘরেই চলছিল ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম।

এর আগে সংস্কার কাজ শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভবন যে নান্দনিক রূপে দেখা যাবে তার ছবি প্রকাশ করে ফেসবুকে পোস্ট দেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

পুরাতন হাইকোর্ট ভবনটির এই সংস্কার কাজ গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পন্ন করে। সংস্কার কাজ মনিটরিংয়ে কয়েক দফা সরেজমিন পরিদর্শন করেছিলেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০২৫
ইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।