ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

শপথ রক্ষা করা ইসলামের দৃষ্টিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২৪
শপথ রক্ষা করা ইসলামের দৃষ্টিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতীকী ছবি

অনেকে ওয়াদা করেন মাজার বা পীর অথবা সন্তান বা কারো মাথা ছুঁয়ে। এরকম কাজ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

একমাত্র আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে স্বাক্ষী বা হাজির নাজির রেখে কোনো শপথ, ওয়াদা বা অঙ্গীকার করা যাবে না। কেউ তা করলে তা শিরক হবে।

এবিষয়ে হাদিসে আছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও নামে শপথ করে, সে অবশ্যই কুফরি বা শিরক করল। ’ (তিরমিজি শরিফ, হাদিস : ১৫৩৫)

শপথ আল্লাহ তাআলার নামে করতে হয়।

আর কোনো বিষয়ে আল্লাহর নামে শপথ করলে তা পালন করা মানুষের জন্য আবশ্যকীয় হয়ে যায়। শপথ রক্ষা করা ইসলামের দৃষ্টিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ। যেসব কাজ মহান আল্লাহকে রাগান্বিত করে, তার মধ্যে একটি হলো শপথ ভঙ্গ করা।

এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর অঙ্গীকার পূর্ণ করো, যখন পরস্পর অঙ্গীকার করো এবং তোমরা শপথ দৃঢ় করার পর তা ভঙ্গ কোরো না; তোমরা যা করো আল্লাহ তা জানেন। ’ (সুরা : নাহাল, আয়াত : ৯১)

সুরা বনি ইসরাঈলের, ৩৪ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর অঙ্গীকার পূর্ণ করো, নিশ্চয়ই অঙ্গীকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ’ 

শপথ ভঙ্গকারীদের ওপর আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন। অঙ্গীকার করে সে কাজ না করলে মহান রব একেবারেই পছন্দ করেন না।

এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ তোমরা যা করো না, তা কেন বলো? তোমরা যা করো না তা বলা আল্লাহর নিকট বড়ই ক্রোধের বিষয়। ’ (সুরা : সফ, আয়াত : ২-৩)

পরের আয়াতে আরেকটু তাগিদ দিয়ে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা যা করো না, তা বলা আল্লাহর নিকট বড়ই অসন্তোষজনক। ’ (সুরা : সফ, আয়াত : ৪)

তাই আমাদের উচিত, কোনো বিষয়ে আল্লাহর নামে শপথ করলে তা পূরণে চেষ্টা করা। তবে যদি শপথের বিপরীতে আরো কল্যাণকর কিছু পাওয়া যায়, তখন প্রয়োজনে শপথ ভেঙে কল্যাণের কাজটি করতে হবে। সে ক্ষেত্রে অবশই শপথের কাফফারা আদায় করতে হবে। আমাদের নবীজি (সা.)-এই নীতি অবলম্বন করেছেন।

হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আবু বুরদাহ (রা.)-এর পিতা আবু মুসা আশআরি বলেন, আমি একবার আশআরি গোত্রের একদল লোকের সঙ্গে নবী (সা.)-এর কাছে এসে তার কাছে বাহন চাইলাম। তখন তিনি বলেন, আল্লাহর শপথ! আমি তোমাদেরকে বাহন দিতে পারব না। আর আমার কাছে কিছু নেই, যার ওপর আরোহণ করা যায়।

বর্ণনাকারী বলেন, এরপর আল্লাহ যতক্ষণ চাইলেন, ততক্ষণ আমরা সেখানে থাকলাম। অতঃপর নবী (সা.)-এর কাছে অতি সুন্দর তিনটি উঠ আনা হলো।

তিনি সেগুলোর ওপর আমাদের আরোহণ করালেন। এরপর আমরা যখন চলতে লাগলাম তখন বললাম অথবা আমাদের মধ্যে কেউ বলল, আল্লাহর কসম! আল্লাহ আমাদেরকে বরকত দেবেন না। কারণ, আমরা যখন নবী (সা.)-এর কাছে বাহন চাইলে তিনি আমাদের বাহন দেবেন না বলে কসম করলেন, অতঃপর আমাদের আরোহণ করালেন। চলো আমরা নবী (সা.)-এর কাছে যাই এবং তাঁকে ব্যাপারটি স্মরণ করিয়ে দিই। এরপর আমরা তাঁর কাছে এলাম।  

তিনি বলেন, আমি তোমাদের আরোহণ করাইনি, বরং আল্লাহ আরোহণ করিয়েছেন। আল্লাহর কসম! আমি যখন আল্লাহর ইচ্ছায় কোনো শপথ করি আর সেটি বাদে অন্যটির মধ্যে কল্যাণ দেখি, তখন শপথের জন্য কাফফারা আদায় করে দিই। আর যেটা কল্যাণকর সেটাই করে নিই এবং স্বীয় শপথের কাফফারা আদায় করি। (বুখারি, হাদিস : ৬৬২৩)

বাংলাদেশ সময়: ১২১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২৪
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।