ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

মহামারির সময়ে কেডিএস-এর অদম্য পথচলা

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০২১
মহামারির সময়ে কেডিএস-এর অদম্য পথচলা ...

ঢাকা: বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় পোশাক ও টেক্সটাইল পণ্য প্রস্তুতকারক, সরবরাহকারী এবং রফতানিকারক হিসেবে কেডিএস গর্বিত । ১৯৮৩ সালে কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার লক্ষ্যই ছিল পোশাক শিল্পটি প্রতিষ্ঠা করে কাজের সুযোগ তৈরি করা যা অর্থনীতির বিকাশে সহায়তা ও দেশের চাকরির বাজারের সক্ষমতা বাড়িয়ে তুলবে।

২০১৯ সালে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রপ্তানি খাতে ৩০ বিলিয়ন ডলারের বেশি রাজস্ব আয় করেছে যা বাংলাদেশের মোট বৈদেশিক আয়ের ৮০% । তবে ২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারি যখন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে, তখন তৈরি পোশাক রপ্তানি খাতটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।  

বিজিএমইএ-এর তথ্য অনুসারে মোট ৩.১৮ বিলিয়ন ডলারের অর্ডার বাতিল হয়েছে যা ২.২৮ মিলিয়ন শ্রমিককের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলেছিল। এই পরিসংখ্যানগুলো শুধুমাত্র সেই ফ্যাক্টরিগুলোর যারা বিজিএমইএ-এর কাছে প্রতিবেদন দিয়েছে, এছাড়া হাজারখানেক ছোট ছোট প্রতিষ্ঠান মহামারির কারণে এরই মধ্যে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে।  

২০২০ সালের মার্চ মাসে পুরো দেশ যখন লকডাউনে চলে যায়, কেডিএস কর্তৃপক্ষ তখন বিনা দ্বিধায় কারখানা এবং অফিস বন্ধ করে দেয়। কয়েক মাস পর অল্প কিছু সংখ্যক কোম্পানি পুনরায় যখন তাদের কার্যক্রম শুরু করে, তখন পর্যন্ত অফিস কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত অব্যাহত রাখা হয়। বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরাতন গার্মেন্টস-এর মধ্যে একটি কোম্পানি হিসেবে মহামারি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কারখানা বন্ধ রেখে দায়বদ্ধতার সঙ্গে কাজ করেছে কেডিএস। ইতোমধ্যে অফিস কার্যক্রমে সরকারের নির্দেশিকা অনুসারে প্রয়োজনীয় সব সাবধানতা ও স্বাস্থ্য-সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।

বুধবার (০৬ জানুয়ারি) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

এতে আরও বলা হয়, কেডিএস তার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য মহামারিতে রোগের বিস্তার প্রতিরোধে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেছে। উক্ত পরিস্থিতিতে প্রাত্যহিক দিনের অফিস শুরু হয় চারপাশে জীবাণুনাশক প্রয়োগের মধ্যে দিয়ে। কারখানায় প্রবেশ করা প্রতিটি পণ্য বা, যাত্রীবাহী যানবাহন মালামাল উঠানো-নামানোর ক্ষেত্রে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়। অফিস চত্বরের ভেতরে সব চালক ও যাত্রীদের থার্মাল যন্ত্রের মাধ্যমে বাধ্যতামূলক শরীরের তাপামাত্রা পরীক্ষা করা হয়। কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের আগে সবাইকে সারিবদ্ধভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে হাত ভালোভাবে ধৌত করা এবং জীবাণুনাশক চেম্বারের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করিয়ে জীবাণুমুক্ত করা হয়।  

কেডিএস বিশ্বমানের স্বয়ংক্রিয় থার্মাল যন্ত্র ব্যবহার করে যেগুলো সাধারণত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপে ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া, শারীরিক সংস্পর্শ কমানোর জন্য কেডিএস বায়োমেট্রিক উপস্থিতি ব্যবস্থার পরিবর্তে কার্ড সোয়াইপ পদ্ধতি চালু করার মাধ্যমে অফিসের উপস্থিতি ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপিত করেছে। কর্মক্ষেত্রে পুরো দিন জুড়ে সুরক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে কর্মীদের নিয়ে নিয়মিত সচেতনতামূলক সভা পরিচালনা করা হয়। সচেতনতামূলক পোস্টার এবং ভিডিও বিভিন্ন পদ্ধতিতে অফিস প্রাঙ্গণে প্রদর্শিত করা হয়। যে জায়গাগুলো নিয়মিত স্পর্শ করা হয়, যেমন- লিফটের বোতাম, টেবিলের উপরিতল, দরজা, জানালা ইত্যাদি নিয়মিত বিরতিতে জীবাণুমুক্ত করা হয়।  

প্রতিটি কর্মস্থলের মধ্যে যথাযথ দূরত্ব বজায় রাখা এবং কর্মীদের মধ্যে সুরক্ষা আবরণী তৈরি করে চারপাশের অভ্যন্তরের কর্মক্ষেত্রগুলোকে নির্দিষ্টভাবে পরিচালনার ভিত্তিতে পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। প্রতিটি কর্মকর্তা ও কর্মীর শরীরের তাপমাত্রা পর্যায়ক্রমে পরীক্ষা করা হয় এবং কেউ যদি অসুস্থ বোধ করেন তাহলে তাদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য কেডিএস-এর নিজস্ব দক্ষ চিকিৎসক দ্বারা গঠিত মেডিক্যাল টিমের কাছে পাঠানো হয়। প্রয়োজনে, কর্মীদের বিনামূল্যে ওষুধও সরবরাহ করা হয়।  

কর্মক্ষেত্রে প্রতিদিন মধ্যাহ্নভোজনের সময় ক্যান্টিনে বেশি মানুষের সমাগম ঘটে। সুতরাং সরকারি নির্দেশিকা অনুসারে ক্যান্টিনে যথাযথ স্বাস্থ্য-সুরক্ষাবিধি মেনে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। কর্মকর্তা-কর্মীদের জন্য ক্যান্টিনে বসার ব্যবস্থা এমনভাবে করা হয় যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সবাই মধ্যাহ্নভোজন ভালোভাবে করতে পারে। এই মহামারী যতদিন স্থায়ী হবে কেডিএস ততদিন পর্যন্ত সুরক্ষা ব্যবস্থার প্রয়োগ অব্যাহত রাখবে এবং ভবিষ্যতে কর্মকর্তা-কর্মীদের আরো সুরক্ষা প্রদানের জন্য দৃঢ়ভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ আছে। এই বিষয়টিই একসময় স্বাভাবিক জীবনের অংশ হয়ে থাকবে।

ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে কেডিএস সবসময় পরিবেশ-বান্ধব নীতি অনুসরণ করে আসছে। কেডিএস বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের উল্লেখযোগ্য সদস্য হওয়ায় পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে চলেছে। মহামারি চলাকালে পরিবেশের প্রতি দায়িত্ব বৃদ্ধি এবং যেকোনো দূষণ হ্রাস করার ব্যাপারে কেডিএস সবসময় বদ্ধপরিকর। সম্প্রতি কেডিএস-এর অফিস প্রাঙ্গণের চারপাশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি শুরু এবং কারখানা থেকে নির্গত বর্জ্য পানিকে আরও ভালোভাবে পুনর্ব্যবহার করার জন্য কনভেনশনাল ইটিপি থেকে বায়োলজিক্যাল ইটিপিতে আধুনিকায়ন করা হয়েছে।  

অসীম ক্ষমতার সঙ্গে সঙ্গে অসীম দায়িত্ব। এক ছাদের নিচে ৩০,০০০-এর বেশি কর্মীকে নিরাপদ কর্মস্থল ও সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে দিতে পেরে কেডিএস একটি ‘পরিবার’ হিসেবে গর্ববোধ করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০২১
এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।