ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেনি জিল বাংলা সুগার মিল

সাগর ফরাজী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৪
লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেনি জিল বাংলা সুগার মিল

জামালপুর: মৌসুমে মৌসুমে ঋণের বোঝা বাড়লেও এবার আখের দাম বাড়ায় বৃহত্তর ময়মনসিংহের একমাত্র চিনিকল জামালপুরের ঐতিহ্যবাহী জিল বাংলা সুগার মিলে আগামীতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণের আশা করছে মিল কর্তৃপক্ষ।  

৬১২ কোটি টাকা ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে গত ১৫ ডিসেম্বর আখ মাড়াই শুরু করেছিল বৃহত্তর ময়মনসিংহের একমাত্র চিনিকল জামালপুরের জিল বাংলা সুগার মিলস্ লিমিটেড কর্তৃপক্ষ।

টানা ৫২ দিন আখ মাড়াই করেও চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি।

সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, মিলটিকে আধুনিকায়নসহ চাষিদের উন্নতমানের বীজ বিতরণের প্রয়োজন। তবে মিলস্ কর্তৃপক্ষ বলছে, কৃষকরা আখ চাষে আগ্রহী হচ্ছে, আগামীতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব।

মিলস্ কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ৬৭ বছর ধরে আখ মাড়াই করে চিনি উৎপাদন করে যাচ্ছে জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত জিল বাংলা সুগার মিলস্ লিমিটেড। ১৯৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত জিল বাংলা সুগার মিলে প্রতিদিন ৫৫ মেট্রিক চিনি উৎপাদন হয়ে থাকে। মৌসুমে চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৮৫০ মেট্রিক টন আর উৎপাদন হয়েছে ২ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ায় গত ৪ ফেব্রুয়ারি এই মৌসুমের জন্য বন্ধ করা হয় আখ মাড়াই ও চিনি উৎপাদন।

কৃষকরা জানিয়েছেন, গতবার আখের চাষ করে টাকা নিয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন। রিসিট বিক্রি করে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়েছে তাদের। যার কারণে আখ চাষ ছেড়ে দিয়েছিলেন তারা। কিন্তু এ বছর হাতে টাকা না দিয়ে বিকাশের মাধ্যমে টাকা দেওয়া হচ্ছে। ফলে এখন তাদের খুব সুবিধা হচ্ছে। এতে করে লাভবান হচ্ছেন আখ চাষিরা।

শফিকুল ইসলাম নামের এক আখ চাষি বলেন, গেল বছর আখের দাম ছিল প্রতিমণ ১২০ টাকা যা একজন কৃষক এক মেট্রিক টন আখ বিক্রি করে ৭ হাজার টাকা পেত। সেখানে এ বছর ২২০ টাকা মণ আখের দাম ধরায় ১০ থেকে ১১ হাজার টাকা পাচ্ছি। এতে আমরা আরও আখ চাষ করছি। অনেকেই এবার আখ চাষ করছে।

গুঠাইল এলাকার আখ চাষি মিলন বলেন, মিল কর্তৃপক্ষ যদি উন্নত জাতের বীজ সরবরাহ করে ও আখের দাম আরও বাড়ায় তাহলে আমাদের এলাকার চাষিরা আখ চাষে আরও আগ্রহী হবে।

জিল বাংলা সুগার মিলস্ ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. রায়হানুল হক বলেন, ১৯ শতকে প্রতিষ্ঠিত জিল বাংলা সুগার মিলটি পুরাতন যন্ত্রপাতি দিয়ে চলছে। এটা আধুনিকায়ন করলে উৎপাদন ক্ষমতা বাড়বে। এছাড়া আখ চাষিদের মাঝে উন্নত জাতের বীজ সরবরাহ করলে চাষি লাভবান হবে। পাশাপাশি মিলে উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হবে।

জিল বাংলা সুগার মিলস্ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাব্বিক হাসান বলেন, সুগার মিলে গত মৌসুমের চেয়ে এবার আখের দাম বাড়ানোর ফলে চাষিদের মধ্যে আখ রোপণের ক্ষেত্রে ব্যাপক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।  

এদিকে চাষিদের সঙ্গে সব সময় মিল কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ রেখে যাচ্ছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।