ঢাকা, বুধবার, ৮ মাঘ ১৪৩১, ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ রজব ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বগুড়া সদরে চাল সংগ্রহ শেষ, অন্যান্য উপজেলা নিয়ে চিন্তা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২৫
বগুড়া সদরে চাল সংগ্রহ শেষ, অন্যান্য উপজেলা নিয়ে চিন্তা

বগুড়া: এখন চলছে আমন সংগ্রহ ২০২৪-২৫ মৌসুম।  বগুড়া সদর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ সিদ্ধ ও আতপ চাল সংগ্রহ শেষ হলেও অন্যান্য উপজেলায় এ কার্যক্রমে ভাটা পড়েছে।

 

চলতি মৌসুমে বগুড়া সদরে সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৯৯ মেট্রিকটন। যা শতভাগ অর্জন হয়েছে। এদিকে জেলার বেশিভাগ উপজেলায় ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রম স্থবির হয়ে আছে। সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বাজারে ধানের দাম বেশি পাওয়ায় গুদামে ধান দিতে অনিহা প্রকাশ করছেন কৃষকরা। যে কারণে কোনো কোনো সরকারি গুদামে ধান-চাল সংগ্রহে ভাটা পড়েছে।

এদিকে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জানিয়েছেন, বগুড়া সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. হারুন-উর-রশিদসহ সদরের এলএসডি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইউসুফ আলী ও নামুজা এলএসডির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিত্যনন্দ পাল মিলারদের মধ্যে ব্যক্তিগত সম্পর্ক ও ক্রমাগত যোগাযোগের মাধ্যমে সদরে শতভাগ সিদ্ধ ও আতপ চাল সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছেন।
বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলার ১২ উপজেলা মিলিয়ে ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা  ধরা হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিকটন। চলতি বছর আমন মৌসুমে এখান থেকে সেদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩২ হাজার ২৮৪ মেট্রিকটন। সেখানে গত ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সংগ্রহ হয়েছে প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার মেট্রিকটন। আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৬১৮ মেট্রিকটন। সেখানে সংগ্রহ হয়েছে ১ হাজার ৮১৭ মেট্রিকটন। ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২ হাজার ৬১০ মেট্রিকটন। এর বিপরীতে সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৮১ মেট্রিকটন। তবে বগুড়া সদর উপজেলায় চলতি আমন মৌসুমে সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৯৯ মেট্রিকটন। যা শতভাগ অর্জন হয়েছে।  

জেলার সোনাতলা, নন্দীগ্রামসহ অন্যান্য উপজেলায় নির্ধারিত পরিমাণ ধান-চাল সংগ্রহ হয়নি। এবার আমন সংগ্রহের সময় প্রতি কেজি ধানের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৩ টাকা। সেদ্ধ ও আতপ চালের ক্ষেত্রে এ দর নির্ধারণ করা হয়েছে কেজি প্রতি যথাক্রমে ৪৬ ও ৪৭ টাকা। এবার চালের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে গত আমন মৌসুমের তুলনায় কেজিতে ৩ টাকা বেশি। এক্ষেত্রে উৎপাদন ব্যয় গতবারের চেয়ে কেজিতে দুই-আড়াই টাকা বেশি হয়েছে ধরে নিয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বাজারে এখন ধান-চালের দাম সরকারের সংগ্রহ অভিযানের জন্য নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি। মূলত এ কারণেই কৃষকরা সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করছেন না। এদিকে মিলাররাও (রাইসমিলের মালিক) বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় সরকারি চুক্তি অনুযায়ী চাল দিতে পারছেন না। তারা বলছেন, চালের সরকারি মূল্যের চেয়ে ২ থেকে ৩ টাকা বেশি খচর পড়ছে।

এদিকে জেলায় চলতি বছর ৮৯৭ মিলারের মধ্যে ধান-চাল সংগ্রহে তালিকাভুক্ত হয়েছেন ৬৯৭ জন। ২০০ জন তালিকাভুক্ত হননি। মিলাররা বলছেন, বাজারে চাল ও ধানের দাম বেশি। শ্রমিকের মজুরি বেড়ে গেছে। এ কারণে সরকারের ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানে বেশ কিছু মিলার অংশ নেননি।

জানা যায়, চলমান আমন সংগ্রহ ২০২৪-২৫ মৌসুমে বগুড়া সদর উপজেলায় সিদ্ধ ও আতপ চালের লক্ষ্যমাত্রা শতভাগ অর্জন হয়েছে। জেলার সোনাতলা, নন্দীগ্রামসহ অন্যান্য উপজেলায় নির্ধারিত পরিমান ধান-চাল সংগ্রহ হয়নি। বাজারে ধানের মূল্য বেশি হওয়ায় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত আমন ধান বাজারেই বিক্রি করছেন। সরকারি নির্ধারিত মূল্যে ধান দিতে তারা অনিহা প্রকাশ করছেন। যে কারণে সরকারি গুদামগুলোতে ধান-চাল সংগ্রহে ভাটা পড়েছে।

সোনাতলা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শাহ মো. শাহেদুর রহমান জানান, উপজেলায় দুটি এলএসডি গোডাউন রয়েছে। সেখানে সরকারিভাবে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯৯৪ মেট্রিকটন। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুর পর্যন্ত প্রায় ৮০০ মেট্রিকটন চাল সংগ্রহ হয়েছে। আমন মৌসুমের শুরুতে সোনাতলায় চাল সংগ্রহ শূন্যের কোটায় থাকলেও এখন তা বেড়েছে।

বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো রিয়াজুর রহমান রাজু জানান, সরকারি চাল সংগ্রহ মিলারদের ওপর নির্ভর করে। সেক্ষেত্রে সদরের মিলাররা তাড়াতাড়ি চাল দিয়ে তাদের দায়িত্ব সম্পন্ন করেছেন। অন্যান্য উপজেলার মিলাররা বাজার পর্যাবেক্ষণ করছেন। সদরের খাদ্য নিয়ন্ত্রকের তদারকির কারণে তাড়াতাড়ি শতভাগ চাল সংগ্রহে সফল হয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২৫
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।