ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

বাহুবলী টমেটো চাষে লাভবান কৃষক অহিদুল

ডিষ্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৬ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০২৩
বাহুবলী টমেটো চাষে লাভবান কৃষক অহিদুল

নীলফামারী: নতুন জাতের বাহুবলী টমেটো চাষ করে লাভবান হয়েছে নীলফামারীর সৈয়দপুরের কৃষক অহিদুলের। উপজেলার প্রত্যন্ত অসুরখাই গ্রামে এ উন্নত জাতের টমেটো আবাদে পাচ্ছেন আশানুরূপ ফলন।

এ টমেটো আবাদ করে তাঁর ব্যয়ের তিন থেকে চারগুণ বেশি লাভের আশা করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের দক্ষিণ অসুরখাই সরকারপাড়া গ্রামের কৃষক অহিদুল। বর্তমানে তিনি একজন জনপ্রতিনিধিও। তাঁর বাড়ি সংলগ্ন ২০ শতক জমিতে উচ্চমূল্য ও নিরাপদ সবজি উৎপাদন প্রদর্শনী প্লটে উন্নত বাহুবলী জাতের টমেটো আবাদ করেছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগ কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের আর্থিক সহযোগিতায় এ টমেটো আবাদ করেন।

উল্লিখিত প্রকল্প থেকে কৃষক অহিদুল ইসলামকে টমেটো চাষের প্রয়োজনীয় বীজ ও সার সরবরাহ করা হয়। বিগত ২০২২ সালের ১০ নভেম্বর জমিতে বাহুবালী টমেটোর চারা রোপণ করেন তিনি। কৃষক অহিদুল ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সার্বিক পরিচর্যায় এবং সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দিকনির্দেশনা ও তদারকিতে চারা রোপণে পর নির্দিষ্ট সময়ে ফলন আসে।

প্রতিটি টমেটো গাছে টমেটো ধরেছে। ৪০ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে গাছের টমেটোগুলো খাবার উপযোগী হয়ে উঠে। সেই থেকে কৃষক অহিদুল প্রতি সপ্তাহে দুই দিন করে খেত থেকে টমেটো উত্তোলন করে বাজারে বিক্রি করে আসছেন। খেত থেকে ২০০ কেজিরও বেশি টমেটো মিলছে একদিনেই।

সরেজমিনে দেখা যায়, কৃষক অহিদুলে খেত থেকে পরিবারের সদস্যরা টমেটো তুলছেন। গাছ থেকে টমেটো তুলে প্লাস্টিকের ক্যারেটে রাখা হচ্ছে। ওই দিন তাঁর খেত থেকে টমেটো তুলে ১১টি প্লাস্টিকের ক্যারেটে ভর্তি করা হয়েছে। প্রতিটি ক্যারেটে ২১–২২ কেজি করে টমেটো রয়েছে। সে হিসেবে প্রায় ২৩০ কেজি থেকে ২৪০ কেজি পর্যন্ত টমেটো মিলেছে তার খেত থেকে।

কৃষক অহিদুল ইসলাম বলেন, টমেটো আবাদে জৈব সার ব্যবহার করা হয়। কোনো রকম রাসায়নিক সার কিংবা কীটনাশক ব্যবহার করা হয়নি। আর পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকে টমেটো খেত বাঁচাতে ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করেছেন। তাঁর ২০ শতক জমিতে টমেটো চাষে ২০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। তিনি প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকার টমেটো বাজারে বিক্রি করেছেন ইতিমধ্যে। আর তাঁর টমেটো খেত থেকে চলতি মার্চ ও আগামী এপ্রিল মাস পর্যন্ত টমেটোর ফলন এবং টমেটো আবাদের খরচের চেয়ে ৪–৫ গুন টাকা বেশি টাকার টমেটো বিক্রি করে আসবে বলে আশা করছেন তিনি।

সম্প্রতি কৃষক অহিদুলের টমেটো খেত পরিদর্শন করেছেন রংপুর বিভাগ কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন প্রকল্পের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটেড ডিরেক্টর ড. মো. আব্দুস সালাম, ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (আইএসডিবি) ঢাকা রিজিয়ন হাব এর অপারেশন টিম লিডার নাসের মোহাম্মদ ইয়াকুবু, প্রজেক্ট অর্ডিনেটর (স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, এলজিইডি) কান্তেশ্বর বর্মা, সিনিয়র মনিটরিং অফিসার আবু ফাত্তাহ মো. রওশন কবিরসহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।  

এ সময় প্রকল্পের কর্মকর্তারা কৃষক অহিদুলের টমেটো খেত ও ফলন দেখে সন্তোষ প্রকাশ এবং প্রশংসা করেন। সেই সঙ্গে তারা টমেটো চাষাবাদ ও বাজারজাতকরণ বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন।

এ সময় সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ধীমান ভূষণ, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ মো. সালাহউদ্দিন, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ডিপ্লোমা কৃষিবিদ মমিনুর মোস্তফা জামান, কৃষি উদ্যোক্তা মো. আহসান উল-হক বাবু, মো. মাজাহার ইসলাম মিজু বসুনিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সৈয়দপুর উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মমতা সাহা জানান, সৈয়দপুরের মাটি সব ফসল চাষের উপযোগি। ওই এলাকায় নতুন জাতের টমেটো চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কৃষক অহিদুল হক। এ কাজে কৃষিবিভাগ সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়েছে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২২ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।