ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ট্রাভেলার্স নোটবুক

ঝকঝ‌কে গুয়াংজু বিমানবন্দরে কারও সাহায্য লা‌গে না

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০১৮
ঝকঝ‌কে গুয়াংজু বিমানবন্দরে কারও সাহায্য লা‌গে না গুয়াংজু বিমানবন্দর। ছবি: বাংলানিউজ

‌গুয়াংজু বিমানবন্দর থে‌কে: আকাশ থে‌কেই নতুন প্রভা‌তের দেখা মিল‌লো। প্লে‌ন তখন মাত্র নেমে‌ছে দক্ষিণ চী‌নের গুয়াংজু বিমানবন্দরে। নেমে পড়ার তাড়া বা হু‌ড়োহু‌ড়ি একদম নেই।ধী‌রে পা এগো‌চ্ছে চী‌নের বিশাল বিমানবন্দরের পো‌র্টেবল সিঁ‌ড়ি‌তে। 

শুক্রবার (০৫ জানুয়া‌রি) ভোর। ঝকঝ‌কে বিমানবন্দর, সবকিছুই বেশ গোছালো।

চকচকে ভেতর-বাইরে। সাম‌নে এ‌গি‌য়ে ইমিগ্রেশনের সারি।  

কাউন্টার দু’এক‌টি নয়, বলা যায় শত শত। ধাক্কা-ধাক্কির  কোনো কারণই নেই। ধী‌রে ধীরে শান্ত-শিষ্টভাবেই ইমিগ্রেশন পে‌রি‌য়ে বে‌ল্টের দি‌কে…।  

গুয়াংজু বিমানবন্দর।  ছবি: বাংলানিউজ
ওখা‌নে ‌গি‌য়েই পাওয়া গেল ব্যা‌গেজ। পা‌শে থাকা এক বাংলাদেশির তখন আফ‌সোস- ‘ঢাকায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এ চিত্র বিরল। বেল্টে লা‌গেজ পাওয়া কী যে বিড়ম্ভনা!

লাগেজ ক্যা‌রিয়ার ট্র‌লি হাতের নাগা‌লে। না বাংলা‌দে‌শের ম‌তো লাগেজ ক্যা‌রিয়ারগু‌লো‌তে সজোরে চাপ দি‌য়ে চালা‌তে হ‌চ্ছে না। প্রায় এম‌নি এম‌নি চল‌ছে। যা একটু হা‌তে ধরা...!

‌ট্র‌লির হাতল, সে‌টি প্লা‌স্টি‌কের কিন্তু শক্ত নয়। বরং গোয়াংজু বিমানবন্দরে ব্যাগেজ ট্র‌লি এ‌কেবা‌রে সহজ ও আরামদায়ক।  আরও আ‌ছে-সেটা খুঁ‌জে বের করলাম।  

তখন আর এটা সাধারণ ব্যা‌গেজ ট্র‌লির ম‌ধ্যে সীমাবদ্ধ নয়- জি‌পিএসযুক্ত ব্যা‌গেজ ট্র‌লি। বলা যায়, ডি‌জিটল ট্র‌লি! 

সাম‌নে এ‌গি‌য়ে ড‌মে‌স্টিক এয়ারবা‌সের কাউন্টা‌রে যে‌তে হ‌বে। এ তথ্য ব্যা‌গেজ ট্র‌লিতে লাইভ দেখা‌চ্ছে। কারও কা‌ছে জান‌তে চাওয়ার দরকার পড়লো না। মানচিত্র ব্যা‌গেজ ট্র‌লির স্ক্রি‌নে দেখে দে‌খেই এ‌গি‌য়ে যা‌চ্ছি।  

বাংলাদেশের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর গুয়াংজুর তুলনায় ছোট। এমন লাইভে এমন মানচিত্র হয়তো দরকার নেই। কিন্তু বিশ্ব বা প্র‌তি‌বেশি দেশ এটা গ্রহণ ক‌রে‌ছে। বাংলা‌দে‌শে তা কতদূর…!

ক্যা‌রিয়া‌রের এই স্ক্রিন থেকে শুধু যে বিমানবন্দর ম্যাপ তা নয়। বো‌র্ডিং কার্ড স্ক্যান সু‌বিধাও মিল‌লো। যেখা‌নে স্ক্যান করা মাত্রই ফ্লাইট কখন কোন গেইট কত সময় বা‌কি তাও দেখাচ্ছে।  

বিমানবন্দরের চাকচিক্য নজর কেড়েছে। হা‌তে সময় থাকায় থে‌মে থে‌মে দে‌খে নি‌চ্ছি-কিছুদূর পর পর ‘ভেন্ডিং মে‌শিন’।  

এটা এমন এক যন্ত্র যার ভেত‌রে চিপস চক‌লেট বিস্কুট, পানীয় রাখা। ক্রে‌ডিট কার্ড বা নগদ টাকা দি‌লে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপ‌নি যা চাচ্ছেন তা বের হ‌য়ে আস‌বে।  এমনকি ফ্রেশ ফল-ফলাদিও রাখা সেখানে।  

গুয়াংজু বিমানবন্দরে ডিজিটাল ট্রলি।  ছবি: বাংলানিউজনির্ধা‌রিত টাকা পে‌লেই ক্নে হা‌তের স্পর্শ ছাড়া য‌ন্ত্রের কাজ শুরু হয়। আর ফ্রেশ জুস বের হয়।  
উন্নত দে‌শে ভেন্ডিং মে‌শিন বেশ আগেই চালু হ‌য়ে‌ছে। ক্রে‌ডিট কার্ড বা নগদ মুদ্রায় মে‌শি‌নের ভেত‌রে থাকা পণ্য কেনার এ সু‌যোগ বাংলা‌দে‌শেও আস‌ছে।  

‌ঢাকার বনানী থে‌কে বিমানবন্দর সড়‌কের যে বিউ‌টি‌ফি‌কেশন প‌রিকল্পনা করা হয়েছে, সেখা‌নে এই ভে‌ন্ডিং মে‌শিনও বসা‌নো হ‌বে। প্রথমবা‌রের ম‌তো বাংলা‌দেশও এমন সু‌বিধা পা‌বে।  

হয়‌তো অদূ‌রে ডি‌জিটল জি‌পিএস ট্র‌লি সু‌বিধাও যুক্ত হবে  বাংলা‌দে‌শের বিমানবন্দরে।  

চলন্ত সিঁ‌ড়ি ধ‌রে উপ‌রে ওঠা আর নামার পর এখন অ‌পেক্ষা পরবর্তী ফ্লাই‌টের গন্তব্য সাংহাই। গুয়াংজু থে‌কে আকাশপ‌থে এক হাজার বার‌শো বা‌রো কি‌লো‌মিটার দুরত্ব। এর আ‌গে রা‌তের চায়না সাউদার্ন এয়ারলাই‌ন্সের ফ্লাই‌টে ১ হাজার ৪৫০ মাইল পে‌রি‌য়ে পৌঁ‌ছে‌ছি গুয়াংজু।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০১৭
এসএ/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।