ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ট্রাভেলার্স নোটবুক

পাহাড়ের ময়না যাচ্ছে পর্যটকের খাঁচায়

আসিফ আজিজ, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৬
পাহাড়ের ময়না যাচ্ছে পর্যটকের খাঁচায় ছবি: আসিফ আজিজ

বগালেক, বান্দরবান থেকে: বান্দরবান সদর থেকে ছেড়ে আমাদের গাড়ি ওয়াই জংশনে এসে থামলো বেলা সাড়ে ১১টার দিকে। এখান থেকেই ইংরেজি অক্ষর ওয়াইয়ের মতো এটি সড়ক চলে গেছে থানচি, একটি রুমায়।

আমাদের গাড়ি রুমা সড়কে ঢুকে দাঁড়ালো সেনাবাহিনীর কাছে রিপোর্ট করার জন্য। পাশেই কয়েকটি দোকান। রকমারি ফল সেখানে। দোকানগুলোর সামনে যেতে এক বৃদ্ধকে দেখা গেলো দুটি খাঁচা নিয়ে বসে থাকতে। কাছে গিয়ে দেখা গেলো খাঁচায় ময়না পাখি।
 
পাখি কার, বিক্রি হবে কিনা জিজ্ঞেস করতেই ওই বৃদ্ধ বললেন, হুম বিক্রির জন্য। কিন্তু মোবাইলে সাধারণ দর্শনার্থীর মতো ক্লিক করতেই তেড়ে এলেন। সাফ জানিয়ে দিলেন, ছবি তোলা যাবে না।
 
একটু দূরে পান চিবোতে থাকা আরেক বৃদ্ধ এসে বললেন, বিক্রি হবে না, ছবি তুলেন না। ও জানে না।
 
বগা লেক পর্যন্ত যাবো বলে বেশি কথা না বাড়িয়ে চলে এলাম গাড়িতে। চালক অসীম বলেন, এগুলো এরা পাহাড়ের গভীর জঙ্গল থেকে ধরে আনে। সব বাজারে বিক্রি হয়। কেউ কিছু বলে না। পর্যটকরাই বেশি কিনে নিয়ে যায়।
 
একটি পাখি দেড় হাজার থেকে তিন-চার হাজার টাকাও বিক্রি হয় বলে জানান তিনি।
 
বোল বলা ও পোষ মানার জন্য ওস্তাদ পাখি ময়না। কালো শরীর আর চোখের কাছে রয়েছে হলদেটে ফোঁটা, ঠোঁটও তাই। কথা নকল করতে পারার জন্য এর চাহিদা বেশি। পাখিটি পাহাড়ি আর কিছু বন এলাকা ছাড়া দেখা যায় না বলেই চলে। তাই বান্দরবান ঘুরতে আসা পর্যটকদের কাছে এটি খুবই আকর্ষণীয়।
 
 এ বিষয়ে বান্দরবানের গহীনে সরীসৃপ ও প্রাণী নিয়ে কাজ করা শাহরীয়ার সিজার রহমান বাংলানিউজকে বলেন, শিকার পাহাড়িদের কাছে এক ধরনের ঐতিহ্য। এটা তারা পছন্দ করে। তবে অসাধু কিছু মানুষের যোগসাজশে প্রশাসনের সামনেই পাখি বিক্রি হয়। অথচ এই অপরাধে দুই বছরের জেলও হতে পারে।
 
এভাবে শিকার ও বিক্রির ফলে পাহাড়ে বিলুপ্ত না হলেও আশঙ্কাজনক হারে কমে যাচ্ছে হরবোলা নামে এ পাখিটি। মার্চ-এপ্রিলে এরা বাচ্চা দেয়। এসব বাচ্চা গাছ থেকে নামিয়ে এনে একটু বড় করে বিক্রি করে দেয় তারা, জানাচ্ছিলেন সিজার।
 
যত দিন যাচ্ছে তত বান্দরবানে বাড়ছে পর্যটক। কিন্তু তারা  সতর্ক না হলে এভাবে পাখি শিকার করে বিক্রি করলে ক্রমশ হারিয়ে যাবে পাহাড়ের ময়না, যেটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

** হরেক পদের খাবারে ওয়াগ্যোয়াই পোয়েঃ’র শুভেচ্ছা
** পাহাড়চূড়ায় চোখের সামনে  রংধনুর ’পর রংধনু (ভিডিওসহ)
** ইউরোপ-আমেরিকাকেও পায়ে ঠেলবে রাঙামাটির লংগদু
** ধসে যাচ্ছে রাঙামাটি শহরের পর্যটন
** রাঙামাটিতে বোটভাড়া নিয়ে ঠকবেন না যদি…
** বিকেলটা কাটুক হেরিটেজ পার্কে
** দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম বুদ্ধমূর্তির দেশে
** পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী সব খাবার ‘সিস্টেমে’
** বাঁশের ভেতর মুরগি, পদের নাম ব্যাম্বো চিকেন
** পাহাড়ের সবুজ মাল্টায় দেশজুড়ে বিপ্লব
** নীলাচলে ভোরের আলোয় মেঘের ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’ 
 
বাংলাদেশ সময়: ০৮২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৬
এএ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।