ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ট্রাভেলার্স নোটবুক

নীলসাগরের জলে..

মাজেদুল নয়ন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৫
নীলসাগরের জলে.. ছবি: দীপু/ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

নীলফামারি থেকে: ধোপাডাঙ্গার রাহুল তার ভাগ্নেকে নিয়ে ঝাপ দিচ্ছেন নীলসাগরের পানিতে। জানালেন, পাশের গ্রাম থেকে এখানেই গোসল করতে আসেন তারা।

রোদ পড়ায় দিঘির পানি কিছুটা উষ্ণ থাকে। উড়ে উড়ে খেলা করে অতিথি পাখির দল। মাছ শিকারে ছোঁ মারে গাঙচিল।
 
ষড়ভুজাকৃতির দীর্ঘ দিঘি। দুই পাশে চারটি ঘাট। পাড়ে বাগানের মতো হেঁটে বেড়ানোর জায়গা।

নীলফামারী জেলা শহর থেকে উত্তর-পশ্চিমে সাড়ে চোদ্দ কিলোমিটার দূরে গোড়গ্রাম ইউনিয়নের ধোপাডাঙ্গা মৌজায় ৫৪ একরের দিঘি নীলসাগর।

ধারণা করা হয়, অষ্টম শতাব্দীর কোনো একসময় এ দিঘি খনন করা হয়।

হিন্দু শাস্ত্র থেকে দিঘির ইতিহাস জানা যায়, খ্রিস্টপূর্ব অষ্টম থেকে নবম শতাব্দীতে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে বিরাট রাজা পান্ডবদের ও রাজা ভগদত্ত কৌরবের পক্ষ নিয়ে যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। কৌরব ও পান্ডবদের পাশা খেলা হয়। খেলার শর্ত অনুযায়ী, পরাজিত হয়ে পান্ডবরা বারো বছরের জন্য  বনবাসে  যেতে বাধ্য হন। পান্ডবরা  বিরাট রাজার রাজ্যভুক্ত গোড়গ্রামে স্বেচ্ছা নির্বাসনের স্থান মনোনীত করেন। পান্ডবদের তৃষ্ণা মেটাবার জন্য রাজা বিরাট তখন এই বিশাল দিঘিটি খনন  করেন।
 
১৯৭৯ সালে তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক আব্দুর জব্বার দিঘিকে একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে সংস্কারের  পাশাপাশি এর নামকরণ করেন ‘নীলসাগর’। পানির গভীরতা মধ্যিখানে ২৩ ফুট (জুন-অক্টোবর) ও পাড় ঘেঁষে চার ফুট।

এ দিঘির আয়ের প্রধান উৎস দর্শনার্থী ও যানবাহন প্রবেশ ফি এবং রেস্ট হাউজ ভাড়া, মৎস্য অ্যাংলিং, জলসেচ, ফল ইজারা ইত্যাদি। এখানে প্রবেশ ফি জনপ্রতি পাঁচ টাকা। এছাড়াও দুই ছিপের মাছ ধরার অ্যাংলিং এক হাজার টাকা। ৪শ থেকে ৬শ টাকায় রেস্ট হাউস ভাড়া নেওয়া যাবে এখানে।

বিনোদনের জন্য রয়েছে ঘোড়ার গাড়ি, নাগরদোলা, স্লিপার, দোলনা ইত্যাদি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৫
এমএন/এসএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।