ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ট্রাভেলার্স নোটবুক

স্বচ্ছ জল, সবুজ পাহাড়ের লালাখাল

মো. অহিদ উল্লাহ পাটোয়ারী | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৫ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৫
স্বচ্ছ জল, সবুজ পাহাড়ের লালাখাল

এবার পরিকল্পনাটা আমারই। কিন্তু মুকুল ভাই, ইব্রাহীম ও চঞ্চল এলাহীর আবদার ভিন্ন।

শীতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সিলেটের লালাখালে একবার না গেলেই নয়।

শেষে ‘ঘুরে বেড়াই বাংলাদেশ’ দলের বন্ধুরা ছুটলাম লালাখালের উদ্দেশে। রাতের বাসে চেপে সিলেট পৌঁছাতে পৌঁছাতে ভোর হয়ে গেল।

এরপর নগরের ক্বিন ব্রিজের পাশেই একটি হোটেল গিয়ে উঠলাম। ঘণ্টাখানেক বিশ্রাম শেষে নাস্তা করে বেরিয়ে পড়ি লালাখালের পথে।

সিলেট-জাফলং সড়কের মাঝখানে আইল্যান্ডের মতো রয়েছে জৈন্তা রানীর বিশ্রামাগার। এর ডান দিক দিয়ে লালাখালের রাস্তা। রাস্তার দু’পাশের সবুজ ধানখেত দেখতে দেখতে হঠাৎ যখন দূরের পাহাড়াগুলো দৃশ্যমান হয়ে ওঠে, তখনই স্বপন মামা বলে উঠলো, আকাশটাও বদলে গেছে, উজ্জ্বল নীল আকাশ আর তার শরীরে সাদা মেঘ নানা ভঙ্গিমায় নৃত্যরত।

প্রায় ৪০ মিনিটে পৌঁছে গেলাম লালাখালের মুখে। এবার ঘাটের দিকে এগোই। ঘাটে অনেক মানুষ। কিন্তু নৌকা কম।

এরপরও ইঞ্জিনচালিত একটি নৌকা ঠিক করা হলো জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত। নৌকা চলতে শুরু করেছে। দুই দিকে টিলা আর একদিকে চা-বাগান।

টিলার ওপারে ওয়াচ টাওয়ারের মতো দাঁড়িয়ে আছে নাজিমগড়ের রিসোর্ট। খালের একটা দিক বাংলাদেশ, আরেকটা ভারতে।

নৌকার মাঝি মনির শংকর জানালেন, ‘ঘুরে বেড়াই বাংলাদেশ’ এর বন্ধুরা চাইলে চা-বাগান থেকেও ঘুরে আসতে পারেন।

চা-বাগানের ঘাটে নৌকা থামিয়ে চা-বাগানে প্রবেশ করলাম। ভেতরে দেখি একটি চা ফ্যাক্টরিও রয়েছে। সত্যি বলতে কী, এত সুন্দর প্রকৃতিকে যে এখানে খুঁজে পাবো- এরজন্য এতটা প্রস্তুত ছিলাম না।

আবার ফিরলাম নৌকায়, নৌকা এগিয়ে চলছে। যতই ভেতর দিকে এগোচ্ছি ততই মুগ্ধ হচ্ছি। কিছু দূর যেতেই চোখে পড়ল বিরাট এক টিলার ওপর লম্বা গাছের সারি। সুপারির বাগান, বাগানটি পড়েছে ভারতের সীমানায়।

নানা উচ্চতায় টিলার পুরোটাতেই হাজার হাজার সুপারি গাছের সারি। নৌকা কিছুদূর এগোতেই মাঝি বললন, আর যাওয়া যাবে না। এখন আমরা জিরো পয়েন্টে আছি।

নদীর টলটলে পানি দেখে আমরা লোভ সামলাতে না পেরে সঙ্গে সঙ্গে ঝাঁপ দিলাম। আহ, কী ঠাণ্ডা পানি! আর উঠতেই মন চায় না!

স্বচ্ছ জল আর সবুজ পাহাড়ের মিতালি সত্যি আনন্দিত, বিস্মিত করে। প্রকৃতি এখানে নীরবে বিলোচ্ছে তার সৌন্দর্য।

কীভাবে যাবেন
সড়ক, রেল ও বিমান পথে সিলেট যাওয়া যায়। লালাখাল যেতে সিলেট থেকে বাস, টেম্পু বা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় সারিঘাট যেতে হবে। সারিঘাটে রয়েছে জৈন্তা রানীর বিশ্রামাগার। এর ঠিক ডান দিক দিয়েই লালাখালের রাস্তা। সেখান থেকে রিকশা বা অটোরিকশায় যাওয়া যায় লালাখাল।

প্রিয় পাঠক, ভ্রমণ যাদের নেশা, বেড়ানোর সুযোগ এলে যারা উড়িয়ে দেন সব বাধা, কাজের অংশ হিসেবে যারা ভ্রমণ করেন কিংবা যাদের কালেভদ্রে সুযোগ হয় ভ্রমণের তারা সবাই হতে পারেন ট্রাভেলার্স নোটবুক’র লেখক। আপনার ভ্রমণের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারেন বাংলানিউজের পাঠকদের সঙ্গে।

আর একটা কথা লেখার সঙ্গে ছবি পাঠাতে ভুলবেনই না, সেই সঙ্গে বাতলে দিন সেখানে যাওয়ার পথঘাটের বিবরণও।  

প্রিয় পাঠক, আপনার ভ্রমণ আনন্দ বিশ্বজুড়ে বাঙালির কাছে ছড়িয়ে দিতে আমাদের ই-মেইল করুন- 



বাংলাদেশ সময়: ১৮২৬ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।