ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পর্যটন

কম সময়ে চাঁদপুরে যেসব ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণ করা যাবে

মুহাম্মদ মাসুদ আলম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২৩
কম সময়ে চাঁদপুরে যেসব ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণ করা যাবে চাঁদপুরের তিন নদীর মোহনা

চাঁদপুর: ঈদ, উৎসব ও অবসরকালীন সময়ে যারা ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন তারা অল্প সময়ের মধ্যে চাঁদপুর জেলার ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে আসতে পারেন।  

বিশেষ করে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহায় ভ্রমণপিপাসুরা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এসব স্থানে ভ্রমণে আসেন।

 
‘ইলিশের বাড়ি’ খ্যাত শহরের তিন নদীর মোহনা বড় স্টেশন মোলহেডসহ প্রাকৃতিক পরিবেশে এসব স্থানগুলোতে আসলে কিছু সময়ের জন্য হলেও মন প্রফুল্লতায় ভরে যায়।  

জেনে নেই কীভাবে চাঁদপুরের এসব পর্যটন স্পটে ভ্রমণ করা যাবে...

বড় স্টেশন মোলহেড:

শুরুটা করতে হবে চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশন মোলহেড থেকে। লঞ্চঘাট থেকে নেমেই এই নয়নাভিরাম স্পটটি। রিকশায় ভাড়া মাত্র ২০ টাকা। হেঁটেও আসা যায়। শহরের কালিবাড়ী জিরো পয়েন্ট থেকে বড় স্টেশন আসতে অটোরিকশায় লাগবে জনপ্রতি ১০ টাকা ভাড়া। সময় লাগবে ২০ মিনিটের মতো।

তিন নদীর মোহনা বড় স্টেশন মোলহেডে প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মিলন, সূর্যাস্ত, মেঘনায় ট্রলার ও স্পীডবোট দিয়ে ঘুরতে পারবেন। এখানে বিভিন্ন দামে নাস্তা ও খাওয়ার ব্যবস্থাও আছে।

বড় স্টেশন মোলহেড

হরিণা ফেরিঘাট:

অল্প সময়ে এসব কাজ শেষে মোলহেড থেকে রওনা করতে পারবেন সিএনজি চালিত অটোরিকশা যোগে হরিণা ফেরিঘাট। সেখানে যেতে ভাড়া লাগবে জনপ্রতি ৫০ টাকা। সেখানে তাজা ইলিশ ভাজা খাওয়া, নদীর প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখা এবং ছবিও তুলতে পারবেন।  

হরিণা ফেরিঘাট

হরিপুর জমিদার বাড়ি:

সেখান থেকে আবারও অটোরিকশা যোগে যেতে পারেন চান্দ্রা ইউনিয়নের হরিপুর জমিদার বাড়িতে। ভাড়া লাগবে জনপ্রতি ৪০-৫০ টাকা। নিজস্ব বাইক থাকলে খুব কময় সময় লাগবে। সর্বোচ্চ ১০ মিনিট। হরিপুর ঐতিহাসিক জমিদার বাড়িতে আপনি কমপক্ষে ৩০মিনিট সময় কাটাতে পারবেন।  

জমিদারদের পুরোনো নকশায় তৈরি বেশ কয়েকটি বাড়ি রয়েছে। প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং বেশ কয়েকটি পুকুরও আছে। সামনে রয়েছে ধর্মীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। রয়েছে জমিদারদের সমাধিস্থল।  

বাড়িটি ঘুরে ঘুরে দেখা ও ছবি তুলতে ভালো সময় কাটাতে পারবেন। এটি শুধুমাত্র দর্শনীয় স্থান নয়, এখানে সিনেমা ও নাটকের শুটিংও হয়। তবে বাড়ির লোকদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে শুটিং করতে হবে।

হরিপুর জমিদার বাড়ি

রূপসা জমিদার বাড়ি ও লোহাগড়া মঠ:

হরিপুর ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি ভ্রমণ শেষে পাশবর্তী ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা জমিদার বাড়ি, সাহেবগঞ্জ নীলকুঠি, চান্দ্রা লোহাগড়া মঠ পরিদর্শনে যেতে পারেন। এতে ব্যয় হবে ৫ ঘণ্টার মতো সময়। এক্ষেত্রে মোটরসাইলে না থাকলে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া করতে হবে। ৫ ঘণ্টার জন্য কমপক্ষে ভাড়া গুনতে হবে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। এই উপজেলা ভ্রমণের সময় সফরসঙ্গী নেওয়া যায় একাধিক। এসব ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো গড়ে ৫-৭ কিলোমিটার দূরত্বে।

রূপসা জমিদার বাড়ি

লোহাগড়ার মঠ

হাজীগঞ্জ বড় মসজিদ:

ফরিদগঞ্জ ভ্রমণ শেষে আপনি পাশবর্তী উপজেলা হাজীগঞ্জে ঐতিহাসিক বড় মসজিদ পরিদর্শন করে নামাজ আদায় করে আসতে পারেন। সেখান থেকে বাস যোগে নিজ গন্তব্যে রওয়ানা হতে পারবেন। লঞ্চে যেতে হলে ফিরতে হবে চাঁদপুর সদর লঞ্চঘাটে।

 হাজীগঞ্জ বড় মসজিদ

মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্র:

বেশি সময় কাটাতে চাইলে ঘুরে আসা যায় মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর পর্যটন লিমিটেডে। নারায়ণগঞ্জ থেকেও লঞ্চে মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্রে আসা যায়। এখানে পরিদর্শনসহ সবকাজেই নগদ ব্যয় করতে হবে। এখানের খাওয়া উন্নত মানের এবং দামও একটু বেশি।  

মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্র।  ছবি: সংগৃহীত

ভ্রমণ প্রসঙ্গে চাঁদপুরের তরুণ লেখক ও কবি মনিরুজ্জামান বাবলু বাংলানিউজকে বলেন, চাঁদপুরের ঐতিহাসিক স্থান রয়েছে অনেক। তবে অল্প সময়ের মধ্যে ভ্রমণ করতে হলে আপনাকে তিন নদীর মোহনা, হরিপুর জমিদার বাড়ি, হরিণা ফেরিঘাট, ফরিদগঞ্জের ঐতিহাসিক স্থানগুলো পরিদর্শন করতে হবে। এছাড়া সময় নিয়ে ভ্রমণ করতে চাইলে হাজীগঞ্জ উপজেলার ঐতিহাসিক বড় মসজিদ, অলিপুর মাজার, শাহ সুজা ও আওরঙ্গজেব মসিজদ, শাহরাস্তির রাস্তি শাহ্ মাজার, মন বাগান, কচুয়ার সাচার রথ, মানসী মুড়া পরিদর্শনে যেতে পারেন। এছাড়াও মন ভাল করার জন্য সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্য দেখতে যেতে পারেন হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী মেঘনা পাড়ে।

ভ্রমন ও ফিচার লেখক রিফাত কান্তি সেন বাংলানিউজকে বলেন, চাঁদপুরের ঐতিহাসিক স্থানগুলোর মধ্যে কিছু কিছু স্থাপনা এখনো সংরক্ষণ হয়নি। আবার কোনটি সংরক্ষণ শুরু হয়েছে। যেমন সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের বড় সুন্দর গ্রামের ৫০০ বছরের পুরোনো মসজিদটি সংস্কার করা হয়েছে। এখন খুবই সুন্দর পরিবেশ করা হয়েছে সেখানে। এছাড়া ফরিদগঞ্জ উপজেলার কড়ৈতলী ও শোল্লা জমিদার বাড়ি রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২৩
এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।