ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তারার ফুল

ঈদ স্পেশাল

একটা জায়গায় নিজেকে বেঁধে রাখতে চাই না: তাহসান

মো. জহিরুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৯ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০১৯
একটা জায়গায় নিজেকে বেঁধে রাখতে চাই না: তাহসান তাহসান খান। ছবি: রাজীন চৌধুরী/বাংলানিউজ

তাহসান খান। অভিনয় ও গান- দুই অঙ্গন মাতিয়ে যাচ্ছেন সমানতালে। এই ঈদের জন্য তাহসান সাতটি নাটকে অভিনয় করেছেন, নতুন গান উপহার দিচ্ছেন তিনটি। দুই অঙ্গনেই কিভাবে সমানতালে এগিয়ে চলেছেন তিনি? তা নিয়ে কথা বলেছেন বাংলানিউজের সঙ্গে।

বাংলানিউজ: ঈদ কেমন যাচ্ছে?  
তাহসান খান: ঈদ হচ্ছে অন্যের মুখে হাসি ফোটানো। তাই পরিবারের সবাইকে উপহার দিয়েছি, আশেপাশে যাদের প্রয়োজন তাদের জাকাত-ফিতরা দেওয়া হয়েছে।

আপনজনদের নিয়ে একসঙ্গে উদযাপন করছি।

বাংলানিউজ: এবার ঈদের জন্য কয়টি কাজ করলেন?
তাহসান খান:
প্রতিবারই ঈদ নিয়ে অনেক আয়োজন করি। এবার ঈদে আমার তিনটি গান ও সাতটি নাটক প্রকাশ পাচ্ছে। আমার ভালো লাগবে যখন মানুষ এই কাজগুলো দেখবেন। ঈদে যেহেতু সবাই ব্যস্ত থাকেন, তাই প্রতিদিন একটা করে নাটক দেখলে ও গান শুনলে হয়তো এনজয় করবেন। কিন্তু এক বসায় সব দেখলে এগুলো উপভোগের বদলে বোরিং হয়ে যেতে পারে।

বাংলানিউজ: সাতটি নাটকের মধ্যে কোনটাকে এগিয়ে রাখবেন?
বাংলানিউজ:
ছয়টা কাজ আমার মনের মতো হয়েছে। মাবরুর রশিদ বান্নাহ, ইমরাউল রাফাত, সাগর জাহানের ও তপু খানের সঙ্গে কাজ করে বেশ ভালো লেগেছে। তাদের নাটকগুলোর গল্পে ভিন্নতা রয়েছে। একেকটির কাহিনী একেক রকম। তাই সবগুলো কাজই আমি এগিয়ে রাখবো।

বাংলানিউজ: মাবরুর রশিদ বান্নাহ’র ‘আঙ্গুলে আঙ্গুলে’র ট্রেলারটা বেশ প্রশংসা পাচ্ছে। এটা নিয়ে কিছু বলবেন?
তাহসান:
আমাদের দেশের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা ইস্যু নিয়ে নাটকটির গল্প সাজানো হয়েছে। এখন বাংলাদেশের যতগুলো ইস্যু নিয়ে চিন্তা করা হচ্ছে, সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ এই ইস্যুটা। জানা নেই এটা নিয়ে আগে কোনো নাটক হয়েছে কি-না। তবে আমার বিশ্বাস নাটকটি মানুষের বিবেকের জায়গাকে নাড়া দেবে।

বাংলানিউজ: বর্তমানে বেশিরভাগ নাটকের গল্পের মূল বিষয়বস্তু একই থাকে। কাহিনীর বৈচিত্র্য কম দেখা যাচ্ছে। এ বিষয় আপনি কী মনে করেন?
তাহসান খান:
প্রতি ঈদে যেহেতু তিনশ’র মতো নাটক নির্মিত হচ্ছে। বছরে দুই ঈদ মিলিয়ে ছয়শ’ সাড়ে থেকে ছয়শ’ কাজ হচ্ছে। আপনি যখন দশটা সিনেমা বানাবেন, তখন হয়তো কাহিনীর বৈচিত্র্য একভাবে দেখা দেবে, আর যখন তিনশ’টা বানাবেন তখন মনে হবে কাহিনী সব এক হয়ে যাচ্ছে। আসলে বৈচিত্র্য এখানেও আছে, যেহেতু তিনশ’টা কাজ তাই ভালো কাজের সংখ্যা কম মনে করে মানুষের অভিযোগটা আসছে।  তাহসান খান।  ছবি: রাজীন চৌধুরী/বাংলানিউজবাংলানিউজ: তাহলে কী করণীয় বলে আপনি মনে করেন?
তাহসান খান:
এখানে বাণিজ্যিক দিক থেকেই আসলে বিষয়টা ঠিক করতে হবে। কাজের সংখ্যা কমিয়ে আনতে হবে। মানসম্পন্ন কাজ করতে হবে। আমি যেটা মনে করি যে একজন শিল্পী হিসেবে ঈদে ৫ থেকে ৭টা কাজ হয়তো করা যায়। আমার যেমন অফার থাকে ৩০টা। অনুরোধ থাকে, তবু অনেককে না বলতে হয়, অনেকের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায়, কারণ তারা বোঝেন না। আমি এজন্যই কাহিনীর বৈচিত্র্য যেন ধরে রাখতে পারি সেজন্য কম কাজ করি। তবে ভালো কাজও হচ্ছে, মানুষ তা দেখছেও।

বাংলানিউজ: তাহলে কী কাজের মান কম হচ্ছে?
তাহসান খান:
সেভাবে কোয়ালিটি কম হচ্ছে না, ভালো কোয়ালিটির কাজও হচ্ছে। কিন্তু যতগুলো সংখ্যায় কাজ হচ্ছে, তার মাঝে ভালো কোয়ালিটি কাজের সংখ্যা কম হচ্ছে। এই বিষয়টি নিয়ে ইন্ডাস্ট্রির যারা নীতিনির্ধারক তাদের আসলে চিন্তা করতে হবে। এগুলো নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। ভালো কাজও হচ্ছে, ভালোর দিকে যাচ্ছে। বাংলাদেশ মানুষ এখন নাটক দেখছেনও তো।

বাংলানিউজ: ইউটিউবসহ অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোর সম্ভাবনা কেমন দেখছে? 
তাহসান খান:
এ জায়গায় সম্ভাবনাটা অনেক ভালো। এবার যতগুলো কাজ করেছি সবগুলোই অনলাইন ও টিভি চ্যানেলের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত। এর আগের ঈদেও এমনটি ছিল না। তখন চ্যানেলের প্রযোজনায় নির্মিত হতো, পরে অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলো কিনে নিতো। আর এখন যৌথভাবে নির্মিত হয়। এটা নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছে। আগে বলা হতো বাংলাদেশের মানুষ নাটক দেখে না, ভালো কোয়ালিটির নাটক হয় না। কিন্তু এখনতো দেখা যাচ্ছে মানুষ নাটক দেখে এবং ভালো কোয়ালিটির নাটকও হচ্ছে।  

বাংলানিউজ: অনেক সময় ভিউর জন্য অনলাইনে অশ্লীল কন্টেন্ট নির্মাণ করতে দেখা যায়। এটা আপনাদের কাজের কোনো প্রভাব ফেলে কি? 
তাহসান খান:
অসুস্থ রুচির কনটেন্ট চিরজীবনই ছিল। যাদের অসুস্থ রুচির কনটেন্ট দেখার ইচ্ছা তারা দেখবেই। আগে হয়তো বিদেশি কনটেন্ট দেখতো, এখন এসব দেখছে। এটা নিয়ে আসলে এতো কথা বলার কিছু নেই। অসুস্থ রুচির কনটেন্ট যারা দেখে আমরা তাদের জন্যতো কাজ করি না। যারা আমার দর্শক তারা সুস্থ রুচির কনটেন্ট দেখেন। তাই এটা নিয়ে আমি এতো কিছু ভাবতে চাই না।

বাংলানিউজ: ‘যদি একদিন’র মাধ্যমে বড় পর্দায় আপনার অভিষেক ঘটলো। প্রথম সিনেমায় কেমন প্রতিক্রিয়া পেলেন?
তাহসান খান:
আমি সবসময় বলেছি একটা সিনেমা করার কথা ছিল, মানুষকে দেখানোর কথা ছিল যে, পরিবারকে নিয়েও হলে গিয়ে সিনেমা দেখা যায়। সেটা করেছি ১২ সপ্তাহ ধরে প্রেক্ষাগৃহে চলেছে। প্রযোজকরা খুশি, ভক্তরাও খুশি। আমিও আসলে আনন্দিত যে সিনেমাটি এতো ভালো হয়েছে। কিন্তু আমি যেহেতু ফুল টাইম এক জায়গায় নেই, পুরো বিনোদন জগতে আমার পদচারণা-বিষয়টি সেরকমই থাকবে। হয়তো ৩-৪ বছর পরপর একটা সিনেমা করবো, টিভিতে নাটক করছি সেটা করে যাবো, গান করছি করে যাবো। একটা জায়গায় নিজেকে বেঁধে রাখতে চাই না। কারণ বিভিন্ন জায়গায় আমার ভক্তরা বিভিন্ন জিনিস প্রত্যাশা করে। গানের ভক্তদের এক রকম, নাটকের ভক্তদের আরেক রকম আবার সিনেমার ভক্তদের অন্যরকম প্রত্যাশা। আমি সবার জন্যই অল্প অল্প করে কাজ করবো। বিনোদনে নিয়মিত থাকবো, কেবল একটা মাধ্যমে নিয়মিত নয়। আমি কৃতজ্ঞ, কারণ সব মাধ্যমেই মানুষ আমাকে গ্রহণ করেছেন। সব মাধ্যমেই আমার হিট কাজ আছে।

বাংলানিউজ: আবার আপনার নতুন সিনেমার খবর কবে পাবো?
তাহসান খান:
একটা বড় আন্তর্জাতিক প্রোজেক্টের কথা চলছে। তবে এখনো পুরোপুরি চূড়ান্ত হয়নি। সবকিছু ঠিক হলে তখন জানাবো। তবে বছরখানেক সময় লাগবে।

বাংলানিউজ: আপনার নতুন অ্যালবাম কবে পাচ্ছি?
তাহসান খান:
আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে। এখন কাজ চলছে।  

বাংলানিউজ: সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। ঈদ মোবারক।
তাহসান খান:
আপনাকে ও বাংলানিউজের পাঠকদের ঈদ মোবারক।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৯ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০১৯
জেআইএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

তারার ফুল এর সর্বশেষ