ঢাকা, বুধবার, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

মহেশখালীতে নির্মিত হবে এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫২৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৮
মহেশখালীতে নির্মিত হবে এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র জাপানের টেপকো’স ফুতসু এলএনজি পাওয়ার প্ল্যান্ট; বাংলাদেশেও এ ধরনের পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণের উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন কম্বাইন্ড সাইকেল এলএনজিভিত্তিক (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করতে যাচ্ছে সরকার। কক্সবাজারের মহেশখালীতে এটি নির্মিত হবে। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানী বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এরই মধ্যে ‘৬০০ মেগাওয়াট এলএনজি বেইজড কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্ট’ শীর্ষক প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন ও ফিজিবিলিটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে।


 
সূত্র বলছে, সিপিজিসিবিএল প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প শক্তি বিভাগে পাঠিয়েছে। প্রকল্পের প্রস্তাবিত মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৩৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।  

প্রকল্প অনুযায়ী, চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন মেয়াদে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ হওয়ার কথা। এরপর এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।  
 
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য (সচিব) বেগম শামীমা নার্গিস বলেন, দেশে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এই ধারাবাহিকতায় এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হবে। সামনে এলএনজি আমদানি বাড়বে। এই এলএনজি ব্যবহার করেই দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে।  

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, মহেশখালীতে দেশের প্রথম এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য সিপিজিসিবিএল পরিকল্পনা কমিশনে ফাইল জমা দিয়েছে। এরই মধ্যে প্রস্তাবিত প্রকল্পের ওপর মূল্যায়ন কমিটির একটি সভাও হয়েছে। সামনে আরো সভা হবে। এরপরই প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদন পাবে।  
 
জানা যায়, মহেশখালী বিদ্যুৎকেন্দ্রে এলএনজি সরবরাহের জন্য ৮ দশমিক ৫ কিলোমিটার পাইপ লাইন নির্মাণ করবে সরকার। নির্মিত হবে রিভার ক্রসিংসহ প্রায় সাড়ে ৮ কিলোমিটার এলএনজি পাইপ লাইনও।
 
এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে জাপানি মিতসুই কোম্পানি। প্ল্যান্টে এলএনজি সরবরাহে পাইপ লাইন নির্মাণের জন্য এই প্রকল্পে ১২ দশমিক ৬০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে।
 
সূত্র জানায়, সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে চায়। এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণও এরই আওতায় অন্যতম একটি উদ্যোগ। ইতোমধ্যে ১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে সরকার। ২০৩০ সালে ৪০ হাজার ও ২০৪১ সালে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।  
 
কর্মকর্তারা বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানির বহুমুখীকরণের জন্য মাস্টারপ্ল্যানে দেশীয় ও আমদানি করা এলএনজির মাধ্যমে ২৫ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।  

বিকল্প জ্বালানি হিসেবে এলএনজি আমদানি ও এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানোর উপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।  

সূত্র জানায়, ২০২১ সালের মধ্যে মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের মধ্যে ৮ শতাংশ এলএনজিভিত্তিক ধরা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ২০৩০ সালে ২৭ শতাংশ ও ২০৪১ সালে তা ৫১ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।  

বাংলাদেশ সময়: ১১১৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৮
এমআইএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।