ঢাকা, শুক্রবার, ৫ পৌষ ১৪৩১, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

নির্বাচন আড়ালকারীরা ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে চিহ্নিত হবে: দুদু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২৪
নির্বাচন আড়ালকারীরা ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে চিহ্নিত হবে: দুদু

ঢাকা: যারা গণতন্ত্র, নির্বাচন এগুলো আড়াল করতে চায় তারা পক্ষান্তরে ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে চিহ্নিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।

রোববার (১০ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের চেতনা, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান’ প্রেক্ষিতে আজকের বাংলাদেশ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

দুদু বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, দেশ স্বাধীনের জন্য, দেশের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে আমরা যে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম। সেই স্বাধীনতা, গণতন্ত্র নিজের হাত দিয়ে কবরস্থ করেছিল শেখ মুজিবুর রহমান। রক্ষী বাহিনী দিয়ে প্রায় ৪০ হাজার এর ওপরে বিরোধী দলীয় নেতাকে হত্যা করেছে। গুম খুন তখনই শুরু হয়েছে। ১৯৭৩ সালে নির্বাচনী ব্যবস্থা একেবারে ধ্বংস করে ফেলেছিল। দুর্ভিক্ষ হয়ে পথে-ঘাটে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা গেছে। শেখ হাসিনা তার বাবার আমলকে ভোলানোর জন্য সংবিধানে বিশেষ আইন তৈরি করেছেন। এদেশের শিশু-কিশোরদেরকে ভুল ইতিহাস, ভুল শিক্ষা দিয়েছে।

তিনি বলেন, ১৯৭২ থেকে ৭৫ সাল পর্যন্ত শেখ মুজিবুর রহমান সব দলকে নিষিদ্ধ করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা  চালু করে। সব পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে মাত্র চারটি পত্রিকা খোলা রাখে। এরইপেক্ষিতে পরবর্তীতে ১৫ আগস্ট। এরপরে সাত নভেম্বর। ৭ নভেম্বর সম্পর্কে যারা পত্র-পত্রিকায় পড়েছেন। স্বচোখে দেখেনি তারা পুরোপুরি ইতিহাস জানতে পারেনি। তিন নভেম্বর খালেদ মোশারফরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে বন্দি করের। ৭ নভেম্বর সিপাহী জনতা তাকে মুক্ত করেন। একজন স্বাধীনতার ঘোষক এতটা জনপ্রিয় যে তাকে বন্দি থেকে বের করে কাঁধে তুলে নিয়েছিল সাধারণ জনগণ ও সিপাহীরা। ৭ নভেম্বর বাংলাদেশের ভাগ্য নির্ধারণ হয়েছে।

ছাত্রদলের সাবেক এ সভাপতি বলেন, শেখ হাসিনা খালেদ মোশারফের পক্ষে কথা বলেছেন অথচ যিনি সব রাজনৈতিক দলকে রাজনৈতি করার সুযোগ করে দিয়েছেন। সব বন্ধ পত্রিকাগুলোকে খুলে দিয়েছেন। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন তার পক্ষে তো কথা বলেননি আরও নানা ধরনের অপবাদ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, বাঙালি হচ্ছে বীরের জাতি এরা কখনো অন্যায়ের কাছে মাথানত করে না। এক সুভাষচন্দ্র বসু ভারতের পেক্ষাপটে স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন কিন্তু তিনি সফল হতে পারেননি। আর এক বীর স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন তিনি লড়াই করেছেন সফল হয়েছেন।

সাবেক এ সংসদ সদস্য বলেন, এদেশের মানুষ দীর্ঘ ১৬ বছর লড়াই সংগ্রাম করেছেন। কত মায়ের বুক খালি হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ এখনও নিখোঁজ। দীর্ঘ ১৬ বছর লড়াই সংগ্রাম করার পরে এদেশের জনগণ এখন সফল হয়েছে। তবে যতদিন না মানুষের অধিকার, ভোটের অধিকার, গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে পারবো না ততদিন পর্যন্ত গণতান্ত্রিক আন্দোলন শেষ হয়েছে এটা বলা যাবে না।

দুদু বলেন, যারা গণতন্ত্র নির্বাচন এগুলো আড়াল করতে চায় তারা পক্ষান্তরে ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে চিহ্নিত হবে। চারদিকে এক ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্রে পা দেওয়া যাবে না। ধৈর্যের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে তৈরি থাকতে হবে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিচক্ষণার সঙ্গে বলেছেন এ সরকারের ব্যর্থ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এজন্যে এ সরকারকে আমরা সহযোগিতা করছি। এ সরকারের মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর আগ পর্যন্ত আমাদেরকে তৈরি থাকতে হবে।

আলোচনা সভাটির সভাপতিত্ব করেন জাতীয় নাগরিক ফোরামের চেয়ারম্যান ও যুব দলের সাবেক সহ সভাপতি ফারুক আহমেদ।

প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এড সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ ও জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরী।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২৪
ইএসএস/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।