ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা

সুজানগরে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত আ. লীগ কর্মীর মৃত্যু

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৪ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২৪
সুজানগরে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত আ. লীগ কর্মীর মৃত্যু

পাবনা: পাবনার সুজানগর উপজেলায় ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পর প্রতিপক্ষের হামলায় আহত মোজাহার বিশ্বাস (৫৪) নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মীর মৃত্যু হয়েছে।  

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সকালে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

 

নিহত মোজাহার বিশ্বাস সুজানগর উপজেলার আমিনপুর থানাধীন রানীনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ রাণীনগর এলাকার বাসিন্দা।  

তিনি সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাবের সমর্থক ছিলেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত ২১ জুন রানীনগর এলাকায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীনুজ্জামান শাহিনের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

এসময় মো. আলামিন মিয়া (৩৫) নামে এক যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেন প্রতিপক্ষের লোকজন। নিহত আল আমিন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিন গ্রুপের সমর্থক ছিলেন। এর জেরে ওই এলাকার বেশ কিছু বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।  
সেদিন প্রতিপক্ষের হামলায় মোজাহার বিশ্বাসসহ দুই গ্রুপের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী 
আহত হন। এর মধ্যে মোজাহার বিশ্বাসের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার ছয়দিন পর সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার তার মৃত্যু হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পাবনার সহকারী পুলিশ সুপার (সুজানগর সার্কেল) রবিউল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোজাহার বিশ্বাস মারা গেছেন। ঢাকায়ই ময়নাতদন্ত হবে। মরদেহ আনার পর এবং থানায় লিখিত অভিযোগের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনার পরপরই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা।

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব বলেন, আগে যিনি মারা গেছেন, তিনিও আমার কর্মী। এখন যিনি মারা গেলেন, তিনিও আমার কর্মী, তারা আওয়ামী লীগের কর্মী। আমি উভয় হত্যার বিচার চাই। পাশাপাশি যারা বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করেছেন, তাদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে। যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। সাবেক চেয়ারম্যান সবাইকে বলে বেরাচ্ছেন যে চেয়ারম্যান না হতে পরলেও ক্ষমতা ঠিকই আছে তার। তিনি নেতাকর্মীদের উসকানি দিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি করছেন। প্রশাসন বিষয়টি জানে। আমি শুধু দলের না, এ উপজেলার সবার চেয়ারম্যান হয়েছি, এখানে জামায়াত-বিএনপির বলে কোনো কথা নাই।

এ বিষয়ে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহিন বলেন, এক সময়ের সন্ত্রাসের মদতদাতা চেয়ারম্যান হয়ে এলাকায় আমার নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের জীবন ও জান-মালের ক্ষতি করছেন। তার ভয়ে দলের সাধারণ নেতাকর্মী বাড়িতে ঘুমাতে পারছেন না। নির্বাচনে আমার আনারস প্রতীকের পক্ষে যারা কাজ করেছেন, তাদের আঘাত করা হচ্ছে। যেদিন যুবলীগ নেতা আল আমিনকে হত্যা করা হয়, তখন আব্দুল ওহাব সাহেব কোথায় ছিলেন? প্রশাসন ফোনকল রেকর্ড দেখলেই বুঝতে পারবে। কার নির্দেশে কাদের পরিকল্পনায় তাকে হত্যা করা হলো। আল আমিন হত্যার পরপরই আল আমিনের লোকজন মুজাই বিশ্বাসের (মোজাহার বিশ্বাস) অবস্থান জানতে পেরে তাকে মারধর করেছেন। সেই মারামারিতে মুজাই বিশ্বাস আহত হয়েছিলেন। হত্যাকাণ্ডে যেই জড়িত থাক, তার বিচার হওয়া উচিত। এখানে আমার লোক, অমুকের লোক বলে কোনো কথা নেই। এ ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় এক দুদক কর্মকর্তা ও তার পরিবারে লোকজন জড়িত। জামায়াত-বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের হত্যা করছেন বর্তমান চেয়ারম্যান। আমি প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করে বলছি, এ হত্যার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক, তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে দ্রুত।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৩ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২৪
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।