ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

পাবনা-১ আসনের ৫৮ কেন্দ্রে পুনর্নির্বাচনের দাবি আবু সাইয়িদের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০২৪
পাবনা-১ আসনের ৫৮ কেন্দ্রে পুনর্নির্বাচনের দাবি আবু সাইয়িদের

পাবনা: পাবনা-১ আসনের পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ৫৮টি ভোটকেন্দ্রের ফলাফল বাতিল করে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন।  

সোমবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগে এ দাবি জানান তিনি।

লিখিত অভিযোগে অধ্যাপক আবু সাইয়িদ বলেন, পাবনা-১ আসনের ১২৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৫৮টি ভোটকেন্দ্রে সরাসরি অনিয়ম করা হয়েছে। নির্বাচনী বিধিবিধান লঙ্ঘন করে নৌকার প্রার্থী তার সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের বের করে দিয়ে জোরপূর্বক ভোটকেন্দ্র দখল ও ভোট কেটে সরাসরি ব্যালট বাক্সে ঢুকিয়ে দিয়েছে। এসব কেন্দ্রের ব্যালট পেপারের মুড়ি অংশটি পরীক্ষা করলেই এর সত্যতা মিলবে।
যেসব ব্যালট পেপার কেটে জালভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে, ওইসব ব্যালট পেপারের মুড়িবই পরীক্ষা করলে দেখা যাবে, মুড়ি অংশে ভোটারদের কোনো টিপসই ও ভোটার নম্বর নেই। এছাড়া অনেক ব্যবহৃত ব্যালট পেপারের পেছনে প্রিসাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারের স্বাক্ষর নেই, দাবি আবু সাইয়িদের।

এসব কেন্দ্রে ভোটারদের কেন্দ্রে আসায় প্রতিবন্ধকতা ও হুমকি দিয়ে প্রত্যাশিত অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এসব ভোটকেন্দ্রে সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাহী কর্তৃপক্ষ সহায়তা করেনি বরং দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাইডিং অফিসার ও প্রশাসন তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন, যোগ করেন ট্রাক প্রতীকের এ প্রার্থী।

অভিযোগপত্রে সুনির্দিষ্ট ৫৮টি ভোটকেন্দ্রের নাম উল্লেখ করে আবু সাইয়িদ বলেন, এসব ভোটকেন্দ্রের সঙ্গে অন্যান্য ভোটকেন্দ্রের তুলনা করলে দেখা যায়, ভোট কেটে নেওয়া/দেওয়ার কারণে ভোটের ব্যবধান অপ্রত্যাশিতভাবে বহুগুণে বেড়েছে। যে কারণে নির্বাচনী ফলাফল জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।
উল্লিখিত তথ্য-উপাত্তের আলোকে ভোটার ক্রমিক নম্বর না দেওয়া এবং প্রিসাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারের স্বাক্ষর না থাকায় ভোটগুলো বাতিলযোগ্য। এমন পরিস্থিতিতে অবিলম্বে উক্ত ভোটকেন্দ্রের ফলাফল বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানান তিনি।  

সেই সঙ্গে পুনরায় নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত ফলাফল সরকারিভাবে গেজেটভুক্ত না করারও দাবি আবু সাইয়িদ।

এ বিষয়ে অধ্যাপক আবু সাইয়িদ বলেন, ভোটের দিন সকাল থেকে বিভিন্ন কেন্দ্রে এমন অনিয়ম দেখেছি। নির্বাচন কমিশন ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো সহযোগিতা পাইনি। আমি ভোট বাতিল ও পুনর্নির্বাচন চাই। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর অভিযোগ দিয়েছি। আশা করছি, তিনি এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ভূমিকা রাখবেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থীর এ অভিযোগের বিষয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মু. আসাদুজ্জামান জানান, নির্বাচনের দিন ও তার আগে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু সাইয়িদ যা যা অভিযোগ করেছেন, আমরা ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করেছি। ভোটের পরে তিনি আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ করেননি। তিনি সংক্ষুব্ধ হয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করলে সেটা কমিশন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।  

৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ঘোষিত বেসরকারি ফলাফলে পাবনা-১ আসনে নৌকার প্রার্থী শামসুল হক টুকু ৯৪ হাজার ৩১৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ পেয়েছেন ৭২ হাজার ৩৮৭ ভোট। এ আসনে মোট ভোটার চার লাখ ৩১ হাজার ৬১৬। ভোটকেন্দ্র ১২৫টি। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ছয়জন প্রার্থী। এর মধ্যে জামানত হারিয়েছেন চারজন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০২৪
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।