ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

৪ দফা দাবিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিল যুবলীগ

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২৩
৪ দফা দাবিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিল যুবলীগ স্মারকলিপি নিচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন।

ঢাকা: চার দফা দাবিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ।

তাদের দাবিগুলো হচ্ছে ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের আত্মস্বীকৃত পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর, ২১ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড, দুর্নীতি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর এবং কানাডার ফেডারেল কোর্ট কর্তৃক সন্ত্রাসী সংগঠনের আখ্যা পাওয়া বিএনপির রাজনীতি নিষিদ্ধ করা।

বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের উপস্থিতিতে যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ এবং সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিটি হস্তান্তর করেন আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান পবন, অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ, মঞ্জুর আলম শাহিন ও ইঞ্জিনিয়ার মৃণাল কান্তি জোয়ারদার।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়: বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ-জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, মুজিব বাহিনীর স্রষ্টা, বিশিষ্ট লেখক-সাংবাদিক শহীদ শেখ ফজলুল হক মণির হাতে গড়া দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ একটি যুব সংগঠন। আমরা বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত, লড়াই-সংগ্রাম আন্দোলনের মাধ্যমে বেড়ে ওঠা গৌরবময় ইতিহাসের ধারক সংগঠন; লাখ লাখ যুবকের আশা-আকাঙ্ক্ষার বাতিঘর বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের পক্ষ থেকে আপনার মাধ্যমে সদাশয় সরকারের কাছে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো বাস্তবায়নের জোর দাবি জানাচ্ছি:

১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড, যিনি ‌১৯৭৫'এর পটপরিবর্তনের পর অসাংবিধানিক উপায়ে ক্ষমতা দখল করে এবং ক্ষমতার মসনদ টিকিয়ে রাখতে অবৈধ উপায়ে সামরিক আদালতে অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা অফিসার ও সৈনিকদের ফাঁসি দেয়, সেই মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী খুনি জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার দাবি করছি।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের আত্মস্বীকৃত খুনিদের মধ্যে ৬ জনের রায় ইতোমধ্যে কার্যকর হয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ আদালত থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আরো ৫ জন আসামি এখনো পলাতক রয়েছে, যাদের ২ জন কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র অবস্থান করছে বলে জানা গেছে।  

বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত পলাতক খুনিদের অনতিবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকরের জোর দাবি জানাচ্ছি।

২০০৭ সালে তৎকালীন সরকারের কাছে জীবনে কখনো রাজনীতি না করার মুচলেকা দিয়ে দেশ থেকে পালানো তারেক রহমান বিদেশে বসে এখনো দেশের চলমান উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে বাংলাদেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার চক্রান্ত করে চলেছে খুনি জিয়াউর রহমানের এই কু-পুত্র। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের নারকীয় ঘটনা ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মাস্টারমাইন্ড, দুর্নীতি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমান ও স্ত্রীকে অনতিবিলম্ব দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকরের জোর দাবি জানাচ্ছি।

বিএনপি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। কানাডার ফেডারেল কোর্ট পরপর ৫ বার বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। ‌‍‍`ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি' (যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র দপ্তর) মামলায়ও বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। বিএনপির জন্মই হয়েছিল হত্যা, ক্যু আর ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে। বিএনপি যখনই ক্ষমতায় গেছে বা ক্ষমতার বাইরে থেকেছে সংগঠনটি বরাবরই সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সাথে জড়িত থাকে। ২০০১-২০০৬ সাল বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগের প্রায় ২৬ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করে। তারা নাটোরের মমতাজ উদ্দিন, খুলনার মঞ্জুরুল ইমাম, সাংবাদিক মানিক চন্দ্র সাহা, গাজীপুরের আহসান উল্লাহ মাস্টার, সাবেক অর্থ মন্ত্রী শাহ্ এ এম এস কিবরিয়া, ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলায় ২ পুলিশ সদস্যসহ ৩ জনকে হত্যা করে, সারা দেশে সাধারণ মানুষের ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে, লুটপাট চালিয়েছে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় এই সংগঠনটি জড়িত। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট বিএনপির মদদে সারা দেশে একযোগে সিরিজ বোমা হামলা চালায় জঙ্গিরা। শুধু তাই নয় ২০১৩-২০১৪ সালে ক্ষমতায় যেতে না পেরে হরতাল-অবরোধের নামে হাজার হাজার গাড়ি পুড়িয়েছে, শতশত মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, গবাদিপশুও তাদের অগ্নিসন্ত্রাস থেকে রক্ষা পায়নি। তারা শত শত স্কুলকলেজ পুড়িয়ে দিয়েছিল। আর এসব অপতৎপরতার কারণেই আন্তর্জাতিক মহল বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আজও তারা আগের মতো মানুষ হত্যা করছে, গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করছে এবং দেশের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র করে চলেছে। অবিলম্বে সন্ত্রাসী সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নিবন্ধন বাতিল এবং রাজনীতি নিষিদ্ধের জোর দাবি জানাচ্ছি। '

সংগঠনটির পক্ষ থেকে এই স্মারকলিপিতে উল্লিখিত বিষয়ে সরকারকে অনতিবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৪৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২৩
টিআর/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।