ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

জিএম কাদেরের বক্তব্য

দুই দলের মাঝে নিজস্বতা নিয়ে রাজনীতি করছে জাপা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৩
দুই দলের মাঝে নিজস্বতা নিয়ে রাজনীতি করছে জাপা

ঢাকা: দেশের সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনী কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। বর্তমান সরকার সংবিধান মোতাবেক গতবারের মতো একটি নির্বাচন করতে চাচ্ছে।

সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিএনপি এ পদ্ধতিতে নির্বাচন না চেয়ে প্রতিহত করতে চয়। দেশে একটা সংঘাতময় রাজনৈতিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। সামনের দিকে আরও খারাপ অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে। জাতীয় পার্টি এ দুটি দলের মাঝামাঝি অবস্থানে নিজস্বতা নিয়ে রাজনীতি করছে। দলটি দেশের মানুষের সামনে তৃতীয় ও বিকল্প অপশন সৃষ্টি করেছে। সারা দেশের মানুষ এখন একটি পরিবর্তন চাচ্ছে।

সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বনানীর কার্যালয়ে জাতীয় মহিলা পার্টির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এক মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের।

তিনি বলেন, ৯০ সালের পর থেকে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির রাজনীতিতে ভিতশ্রদ্ধ। দেশের মানুষ একটি পরিবর্তন চাচ্ছে। আমরা শক্তিশালী হয়ে সাধারণ মানুষের সামনে বিকল্প হিসেবে দাঁড়াতে চেষ্টা করছি। বর্তমান সরকার অত্যন্ত কর্তৃত্ববাদী। সবকিছু তারা নিয়ন্ত্রণে নিতে চায়, অনেক কিছু নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। শান্তির মিছিল হচ্ছে, কিসের শান্তি? দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষের মাঝে শান্তি নেই। মানুষের আয় বাড়ছে না, কিন্তু ব্যয় বেড়েই যাচ্ছে। মানুষের মানসম্মান, সম্পদ ও জীবনের নিরাপত্তা নেই। উৎকণ্ঠার মধ্যে দেশের মানুষ জীবন কাটাচ্ছে। এমন বাস্তবতায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা মানুষের কাছে প্রহসন মনে হয়।

জিএম কাদের বলেন, দুটি দল দেশের মানুষের জন্য কবরের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করেছে। দেশের মানুষ কবরের শান্তি ও স্থিতিশীলতা চায় না। কারও প্রতিবাদ করার শক্তি বা সাহস নেই। এমন শান্তির জন্য আমরা রাজনীতি করি না। আমরা মানুষের সত্যিকারের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য রাজনীতি করছি। আগামী প্রজন্ম যেন সুনাগরিক হিসেবে শান্তিময় পরিবেশে বেড়ে উঠতে পারে। সরকার এমন শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে পারেনি। শুধু, ক্ষমতায় থাকা এটা কোনো রাজনীতি হতে পারে না। ক্ষমতায় আমরা যাব জনগণের কল্যাণে কাজ করতে। জাতীয় পার্টি এ রাজনীতি জনগণের সামনে তুলে ধরতে চায়।

নতুন রাষ্ট্রপতিকে অভিনন্দন জানিয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, তিনি মাটি ও মানুষের লোক। আশা করছি, তিনি দেশ ও জাতির জন্য কাজ করতে পারবেন। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদান রেখেছেন। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে থেকে সকল দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে সমান চোখে দেখবেন। বিপদে-আপদে সবার পাশে দাঁড়াবেন এটাই আমাদের প্রত্যাশা। আমাদের ফলাফল যাই হোক, আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। দেশ স্বাধীন হয়েছে দেশের মানুষের জন্য একটি দেশ হবে। দেশের প্রজাদের জন্য একটি দেশ হবে। দেশের মালিক জনগণ, তারা নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন। জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা যদি জনগণের ইচ্ছেমতো দেশ পরিচালনা ব্যর্থ হয় তাহলে দেশের জনগণ আবার নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধি পরিবর্তন করবেন। আমরা মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের রক্তের প্রতি সম্মান জানাতে চাই। স্বাধীনতার চেতনা সমুন্নত রাখতেই আমরা অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই।  

সভায় জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আনুপাতিক হারে জাতীয় নির্বাচন হলেই নির্বাচন নিয়ে সকল সমস্যার সমাধান হবে। আনুপাতিক হারে নির্বাচন মানেই শান্তিপূর্ণ নির্বাচন।  

সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও জাতীয় মহিলা পার্টির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দেশে সুশাসন দিতে ব্যর্থ হয়েছে। দেশে শুধু সুশাসন দিতে পেরেছে জাতীয় পার্টি।

মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় মহিলা পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমা আখতার, হেনা খান পন্নি, সদস্য ডা. সেলিমা খান, শাহনাজ পারভীন, ফরিদা ইয়াসমিন, অ্যাডভোকেট লাকী বেগম, আমেনা হাসান, শারমিন পারভীন লিজা, রিতু নূর, জেসমিন নূর প্রিয়াঙ্কা, মিনি খান, মেহেরুন্নেসা হিয়া, আসমা আখতার শিল্পী, শ্রাবণী চাকমা, মনিকা আখতার, জোছনা আক্তার, অধ্যাপিকা বিলকিস সরকার পুতুল, শাহজাদি, জিন্নাত আরা, রোখসানা আখতার শ্যামলী, ফারহানা আইরিন, হাসিনা আখতার শিফা, রুনা বেগম, রোখসানা পারভীন, নাজনীন ও রাইসা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৩
এসএমএকে/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।