ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

‘দেশের ৯৫ ভাগ মানুষ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৩
‘দেশের ৯৫ ভাগ মানুষ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে’

ঢাকা: দেশের ৯৫ ভাগ মানুষ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের দলবাজ নির্বাচন কমিশন বলছে, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া ছয়টি উপনির্বাচনে ১৫-২৬ শতাংশ ভোট পড়েছে।

কিন্তু প্রকৃত হিসাব করলে দেখা যাবে ৫-৭ শতাংশের বেশি ভোট পড়েনি। তার মানে আওয়ামী লীগ করে মাত্র ৫-৭ ভাগ মানুষ। আর বাকি ৯৩-৯৫ ভাগ মানুষ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে।

শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিদ্যুতের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে গণঅধিকার পরিষদ।

সমাবেশে নুরুল হক নুর বলেন, এ জানুয়ারি মাসে সরকার দুইবার বিদ্যুৎ এবং একবার গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে। এভাবে সরকার জনগণের সঙ্গে ভণ্ডামি, ভাওতাবাজি ও ধোকাবাজি করছে। যেমনিভাবে ধোকা দিয়েছিল ২০১৮ ও ২০১৪ সালে।

সরকার বিদ্যুতের দাম সমন্বয়ের কথা বলে ১২ শতাংশ বাড়িয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এ সরকার যে একটি ডাকাত, চোর, নির্লজ্জ সরকার সেটি আর নতুন করে বলার অবকাশ নেই।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার হিরো আলমের মতো একজন প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উঠা আসা ব্যক্তির সঙ্গে নির্বাচনে হেরে যাবে এ লজ্জা ঢাকতে বিজয়ী হিরো আলমকে পরাজিত করেছে। এ হচ্ছে আওয়ামী লীগের চেহারা ও ইতিহাস।

আওয়ামী লীগের ভোট ডাকাতির ইতিহাস নতুন নয় মন্তব্য করে ডাকসুর সাবেক ভিপি বলেন, ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে নির্বাচনে মোস্তাককে জেতানোর জন্য কুমিল্লা থেকে হেলিকপ্টারে করে ব্যালট বাক্স নিয়ে আসা হয়েছিল।

স্বাধীন বাংলাদেশে আওয়ামী লীগই প্রথম ভোট ডাকাতি ও গুমের প্রবর্তন করে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, ১৯৭৩ সালে ডাকসু নির্বাচনে ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগই প্রথম ব্যালট বাক্স ছিনতাই শুরু করে। জহির রায়হানকে গুমের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগই স্বাধীন বাংলাদেশে গুমের প্রবর্তন করে। কাজেই ভোট ডাকাতি, ছিনতাই, গুম, খুন, হত্যার ইতিহাস আওয়ামী লীগের নতুন নয়। এসব কথা আজকে তরুণ প্রজন্ম জানতে পারছে না। কারণ, আজকে ইতিহাস বিকৃতির মাধ্যমে পাঠ্যপুস্তক রচনা করে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী বাকশালী বয়ান তরুণ প্রজন্মকে শেখানো হচ্ছে। এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা তরুণদের গেলানো হচ্ছে।

শেখ মুজিবুর রহমানের মতো নেতা আওয়ামী লীগকে ভালো করতে পারেনি মন্তব্য করে নুরুল হক নুর আরও বলেন, আওয়ামী লীগের চুরির চরিত্র যায়নি। আজকেও তারা তাদের চুরি, ডাকাতি করছে। গত ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ চুরি, ডাকাতি, লুটপাট করতে করতে দেশকে দেউলিয়া হওয়ার দিকে নিয়ে গেছে।

লুটপাটকে বৈধতা দিতে সরকার আইএমএফের কাছ থেকে টাকা এনেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সরকার আইএমএফের কাছ থেকে ভিক্ষার টাকা এনে বড় বড় কথা বলছে। তারা উন্নয়নের কথা বলে প্রতিটি প্রকল্পে দুই-তিনগুণ খরচ দেখিয়ে লুটপাট করছে এবং দেশকে ভাগ-বাটোয়ারার ভাগাড়ে পরিণত করে বিভিন্ন দেশকে খুশি রাখছে। মেট্রোরেল-পদ্মাসেতু চীনকে দিচ্ছে, রূপপুর রাশিয়াকে দিচ্ছে, ভারতকে ট্রানজিট দিচ্ছে। এভাবে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে।

বিক্ষোভ সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রাশেদ খান, যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. আব্দুল মালেক ফরাজি, বিপ্লব কুমার পোদ্দার, সোহরাব হোসেন, আবু হানিফ, সাদ্দাম হোসেন, শাকিল উজ্জামান, জসিম উদ্দিন, যুগ্ম সদস্য সচিব তারেক রহমান, মোহাম্মদ আতাউল্লাহ, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামীন মোল্লা ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান।

বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে হারিকেন মিছিল করে গণঅধিকার পরিষদ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।

বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৩
এসসি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।