ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

রাষ্ট্র নয়, বিএনপির মেরামত দরকার: তথ্যমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০২২
রাষ্ট্র নয়, বিএনপির মেরামত দরকার: তথ্যমন্ত্রী

ঢাকা: তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির ২৭ দফা আসলে জনগণের সঙ্গে ভাঁওতাবাজি এবং রাষ্ট্রের নয়, বিএনপিরই মেরামত দরকার।

বুধবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

 

ড. হাছান বলেন, বিএনপির মেরামত দরকার কারণ তারা গত ১৪ বছর ধরে যেভাবে জনগণের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে, জনগণকে জিম্মি করার রাজনীতি করেছে, রাজনীতির নামে মানুষ হত্যা করেছে, জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, এ ধরনের রাজনৈতিক দল যখন রাষ্ট্র সম্পর্কে মেরামতের কথা বলে তখন মানুষ স্বাভাবিকভাবে আতঙ্কিত হয়।  

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির ২৭ দফার অনেক কিছু তারা যে নীতি নিয়ে চলছে, সেটির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। একদিকে যেমন তারা যে সব মৌলবাদী দলগুলোর সঙ্গে জোট করেছে, তাদের কারো কারো মূল মতাদর্শ হচ্ছে বাংলাদেশকে ধর্মরাষ্ট্র আফগানিস্তানের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া, আবার অন্য দিকে বিএনপি দফা দিয়েছে ‘ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার’ অর্থাৎ তাদের কথা ও কাজে এটা প্রচণ্ড সাংঘর্ষিক।

বিএনপির এ ২৭ দফা আসলে জনগণের সঙ্গে ভাঁওতাবাজি উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, তাদের ২৭ দফার ১৩ দফায় বলা আছে, দুর্নীতির ব্যাপারে কোনো আপস করা হবে না। দুর্মুখেরা বলছে, এটি দিয়ে বিএনপি আসলে বোঝাতে চেয়েছে, দুর্নীতি তারা আগের মতোই অব্যাহত রাখবেন। কারণ যারা দেশকে পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছে, যারা হাওয়া ভবন তৈরি করে সমান্তরাল সরকার পরিচালনা করে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিল, তারা যখন দুর্নীতির ব্যাপারে কোনো আপস হবে না বলে তখন তারা আগের সেই দুর্নীতির পথেই হাঁটবে সেটিই বোঝায়।  

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান বলেন, রাষ্ট্র মেরামত কেন বলা হলো! এভাবে দফাগুলোর নাম দেওয়া ঠিক নয়। এটি কি কারখানা যে মেরামত করতে হবে! আসলে বিএনপিরই মেরামত দরকার। আর যাদের মস্তিষ্ক থেকে এগুলো আসছে, তাদের মস্তিষ্করও মেরামত দরকার।

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে কারাগার থেকে কয়েক ঘণ্টার জন্য প্যারোলে বেরিয়ে বিএনপির স্থানীয় নেতা আলী আজম ডাণ্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় মায়ের জানাজায় অংশ নেওয়া নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, আমি বিষয়টি নিয়ে চেক করেছি, গাজীপুরের পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। ডাণ্ডাবেড়ি ও হাতকড়া পরানো জেল প্রশাসনের কাজ। সেটি আবার পুলিশের অধীনে নয়, একজন আইজি প্রিজন আছেন, সেই প্রশাসনের অধীনে। যেহেতু কয়েকদিন আগে কয়েকজন জঙ্গি পালিয়ে গেছে এবং তাদের প্রতি যেভাবে সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার ছিলো, সেটি করা হয়নি বলে তদন্তে উঠে এসেছে, এ জন্য তারা অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করেছে।

তথ্যমন্ত্রী জানান, আমি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা বিষয়টি জানতেন না। যারা ওই বিএনপি নেতাকে বহন করে এনেছিল শুধু তারাই জানতেন অন্যরা কেউ জানতো না। তবে আমি মনে করি, জানাজার সময় তার ডাণ্ডাবেড়ি এবং হাতকড়া খুলে দিলে ভালো হতো।  

প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতে আবারও বিএনপির অংশগ্রহণের ওপর জোর দিয়েছেন-এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, অবশ্যই নির্বাচন কমিশনের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে সব দলকে নির্বাচনমুখী করা। আমরাও চাই বিএনপিসহ সমস্ত রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। একটি প্রতিযোগিতামূলক সুষ্ঠু, স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক, সেটি আমরা চাই। বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি করবে না, সেটি একান্তই তাদের নিজস্ব ব্যাপার।

তবে কথায় আছে না- গাধা জল ঘোলা করে খায়' উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি যেমন ১০ তারিখে নয়াপল্টনের অফিসের সামনে থেকে নড়বেন না বলে পরে গরুর হাটের ময়দানে গেছে। এ ক্ষেত্রে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বিএনপি তাদের দল টিকিয়ে রাখার স্বার্থে নির্বাচনে আসবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০২২
জিসিজি/জেএইচ


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।