ঢাকা, রবিবার, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সারওয়ার আলীকে ‘সপরিবারে হত্যাচেষ্টা’ ডাকাতির ঘটনা: পিবিআই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২০
সারওয়ার আলীকে ‘সপরিবারে হত্যাচেষ্টা’ ডাকাতির ঘটনা: পিবিআই

ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলীকে সপরিবারে হত্যাটেষ্টাকে জঙ্গি হামলা বলে দাবি করে আসছিলেন ভুক্তভোগী নিজে। তবে প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে এটিকে ডাকাতির ঘটনা বলে দাবি করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ভোরে রাজধানীর উত্তরা থেকে এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট মো. ফরহাদ (১৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে পিবিআই। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ এবং তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে পিবিআই এটিকে ডাকাতির চেষ্টা বলে জানায়।

 

এদিন বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিবিআই ঢাকা মেট্রো অফিসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই’র বিশেষ পুলিশ সুপার (এসপি) বশির আহমেদ এসব কথা জানান।

গ্রেফতার ফারহাদকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি জানান, ঘটনার সঙ্গে সাতজন সংশ্লিষ্ট রয়েছেন। এরমধ্যে মূল পরিকল্পনাকারী হলেন ডা. সারওয়ার আলীর স্ত্রীর সাবেক গাড়িচালক নাজমুল।  

বশির আহমেদ বলেন, গ্রেফতার ফরহাদ পেশায় একজন শ্রমিক। গত ৩ জানুয়ারি তাকেসহ আরও একজনকে দৈনিক ৫০০ টাকা চুক্তিতে কাজে নেয় এ নাজমুল। পরে এ তিনজনের সঙ্গে আরও চারজন যোগ হয়ে আশকোনার একটি রেস্টুরেন্টে ডাকাতির পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন বিকেলেও আশকোনার রোজভ্যালি হোটেলে ওই সাতজন পরিকল্পনা করে এবং সন্ধ্যার পরে ঘটনাস্থলে যায়।  

তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে এ ঘটনাকে ডাকাতি বলে মনে হচ্ছে। টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার নিতে তারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে ফরহাদ জানিয়েছে। তবে কোনো জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা আছ কিনা তা মূল পরিকল্পনাকারীকে গ্রেফতার করলে বেরিয়ে আসবে। ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে অন্যদের নাম-পরিচয় জানানো সম্ভব হচ্ছে না।

ঘটনার দিনের বর্ণনায় বশির আহমেদ বলেন, উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের ওই বাসার তৃতীয় তলায় সারওয়ার আলীর মেয়ে এবং চতুর্থ তলায় তিনি থাকেন। দুর্বৃত্তদের দু’জন প্রথমে তৃতীয় তলায় গিয়ে মেয়ে, মেয়ের স্বামী ও সন্তানকে জিম্মি করে। তাদের আঘাত করে সারওয়ার আলীর অবস্থান জানতে চায়। চতুর্থ তলার ফ্লাটের কথা বললে একজন উপরে যায় এবং দরজায় নক করে। দরজা খোলা হলে প্রথমে সারোয়ার আলীর স্ত্রী ও পরে সারওয়ার আলীকে জিম্মি করে। পরে তৃতীয় তলা থেকে আরও একজন আসে। এসময় তারা চিৎকার করলে দ্বিতীয় তলায় থাকা এক মেজর এবং তার ছেলে গিয়ে তাদের বাঁচান। এরমধ্যে সারওয়ার আলীর মেয়ে ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে পুলিশের সহায়তা চাইলে তাৎক্ষণিক পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়। এসময় দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।  

তিনি বলেন, বাসায় দু’জনই গিয়েছিল বাকি পাঁচজন বাসার আশপাশে অবস্থান করছিল। ফরহাদও বাসার আশপাশে অবস্থান করছিলেন। পুলিশ যে দু’জনকে গ্রেফতার করে আদালতে জবানবন্দি রেকর্ড করিয়েছে তারা এ সাতজনের বাইরে। তবে তাদেরও এ ঘটনায় সহযোগিতা রয়েছে।  

কোনো এক বিষয়ে ডা. সারোয়ার আলীর সঙ্গে তর্ক করার কারণে চালক নাজমুলকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছিল। হামলার সঙ্গে দু’জন শিক্ষিত যুবক রয়েছে বলেও জানান বশির আহমেদ।

গত ৫ জানুয়ারি রাত ১০টা ২০ মিনিটের দিকে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ড. সারওয়ার আলীকে হত্যার উদ্দেশে দুই দুষ্কৃতিকারী তার উত্তরার বাসভবনে ঢুকেন। ৬ জানুয়ারি হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দু’জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় চার-পাঁচজনকে আসামি করে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন সারওয়ার আলী।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২০
পিএম/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।