ঢাকা, রবিবার, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বাবা-মা হারা স্বপ্নার দায়িত্ব নিলেন ওসি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২০
বাবা-মা হারা স্বপ্নার দায়িত্ব নিলেন ওসি স্বপ্না ও তার দাদী নুর জাহান বেগম সঙ্গে আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম। ছবি: বাংলানিউজ

নারায়ণগঞ্জ: বাবা-মা হারা স্বপ্না আক্তারের (৯) দায়িত্ব নিলেন নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম।

জানা যায়, স্বপ্নার বয়স যখন নয় মাস তখন স্ত্রী সন্তানকে ফেলে অন্যত্র চলে যান তার বাবা আমির হোসেন। এরপর থেকে তিনি স্ত্রী সন্তানের কোনো খোঁজ নেননি।

আর স্বপ্নার বয়স যখন তিন বছর। তখন স্বপ্নাকে তার দাদীর কাছে রেখে মা আসমাও অন্যত্র চলে যান। সন্তানের কথা তারা কেউ চিন্তা করেনি। স্বপ্নার ভবিষ্যত অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়ে নিজেদের সুখের ঠিকানায় পাড়ি জমান স্বপ্নার বাবা-মা। বাবা-মা হারা নাতিকে মানুষের মতো মানুষ করতে দাদী নুর জাহান বেগম (৬৮) পড়েন বিপাকে। মানুষের বাড়িতে বাড়িতে কাজ করে এবং রাস্তায় লাকড়ি সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে স্বপ্নাকে মানুষের মতো মানুষ করতে চেষ্টা করেন নুর জাহান। কিন্তু স্বপ্না তৃতীয় শ্রেণিতে লেখাপড়া করা অবস্থায় অর্থের অভাবে তার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়।
 
রোববার (১২ জানুয়ারি) নুর জাহান তার নাতনি স্বপ্নাকে নিয়ে লাকড়ি কুড়াতে যান আড়াইহাজার থানার মাঠে। সেখানে দাদী-নাতনিকে লাকড়ি কুড়াতে দেখেন ওসি নজরুল। এ সময় নুর জাহানের কাছ থেকে স্বপ্নার জীবন কাহিনী শুনে তার  দায়িত্ব নেন থানার ওসি নজরুল।  

আড়াইহাজার থানার ওসি নজরুল বাংলানিউজকে জানান, আমার চোখের সামনে অর্থের অভাবে একজন কন্যাশিশুর লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে তা আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারি না। স্বপ্নাকে মানুষের মতো হতে হলে তাকে লেখাপড়া করতে হবে। অর্থের অভাবে কিছুতেই স্বপ্নার জীবন ঝড়ে যেতে পারে না। স্বপ্নার লেখাপড়ার সব খরচ আমি নিজে বহন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এছাড়াও শিশুটির দায়িত্বও আমি নিয়েছি।

তাৎক্ষণিকভাবে স্বপ্নার  যা যা লাগে সব কিনে দিয়েছি বলেও জানান ওসি নজরুল।

বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২০
আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।