ঢাকা: ছাঁটাই আতঙ্কে চলমান আন্দোলনের মধ্যে নব্বই দশকের শুরুর দিকে যাত্রা শুরু করা জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ভোরের কাগজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) রাজধানীর মালিবাগে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ের প্রধান ফটকে এ সংক্রান্ত নোটিশ টানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়, ভোরের কাগজ কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ১২ ধারা অনুযায়ী মালিকের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যা ২০-০১-২০২৫ সাল থেকে কার্যকর হবে।
৩৩ বছরের পুরোনো এই পত্রিকাটি বন্ধের খবর নিশ্চিত করে ভোরের কাগজের প্রধান প্রতিবেদক খোন্দকার কাওছার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, অষ্টম ওয়েজ বোর্ডের বেতন স্কেলের সব সুযোগ-সুবিধা এবং সব বকেয়া বেতনসহ সার্ভিস বেনিফিটের দাবি নিয়ে আমরা আন্দোলন করে আসছিলাম। মালিকপক্ষকেও দাবির বিষয়ে জানিয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় বৈষম্যের শিকার। প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা সাংবাদিক-কর্মচারীরা দ্রুত কর্মসূচি ঘোষণা করব।
কাওসার বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় মালিকপক্ষ ৩০-৩৫ জন নিয়ে পত্রিকা চালাবে, বাকিদের ‘ছাঁটাই করবে’ বলে তারা খবর পেয়েছেন।
আমাদের বক্তব্য ছিল, যদি ছাঁটাই করা হয়, আমাদের কোনো আপত্তি নেই। সেক্ষেত্রে আমাদের কিছু দাবি আছে, সেগুলো বিবেচনা করতে হবে।
এই সাংবাদিকের ভাষ্য, ‘ভোরের কাগজ অষ্টম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করছে, এমন ঘোষণা দিয়ে সরকার থেকে ৯শ টাকা কলাম-ইঞ্চি বিজ্ঞাপনসহ সব সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে। ছাঁটাই করতে হলে ওয়েজ বোর্ডের বেতন স্কেলের সব সুযোগ-সুবিধাসহ সমস্ত বকেয়া বেতনসহ সার্ভিস বেনিফিট দিতে হবে।
দ্বিতীয়ত, যদি ছাঁটাই করা না হয়, তাহলে অবিলম্বে ৮ম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করতে হবে। সবাইকে নিয়োগপত্র দিতে হবে। তৃতীয়ত ৮ম ওয়েজ বোর্ডের আওতায় যার যত বছরের পাওনা রয়েছে, সব বকেয়া বেতন ও আর্থিক সুযোগ-সুবিধা পরিশোধ করতে হবে।
এর আগে রোববার (১৯ জানুয়ারি) দৈনিক ভোরের কাগজ থেকে কর্মরত সাংবাদিক-কর্মচারীদের ছাঁটাই করে ডিক্লারেশন বাঁচাতে ক্ষুদ্র একটি টিম নিয়ে পত্রিকা প্রকাশের উদ্যোগের প্রতিবাদে আন্দোলনে নামে পত্রিকার সাংবাদিক-কর্মচারীরা।
১৯৯২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ‘মুক্তচিন্তার দৈনিক’ স্লোগান নিয়ে যাত্রা শুরু করে ভোরের কাগজ।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ১৬ সেপ্টেম্বর পত্রিকাটির সম্পাদক শ্যামল দত্তকে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া সীমান্ত থেকে আটক করে পুলিশ। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আছেন। শ্যামল দত্ত জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২৫
টিএ/আরআইএস