ঢাকা, শনিবার, ১৯ পৌষ ১৪৩১, ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার দাবি সমাবেশে

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২৪
১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার দাবি সমাবেশে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ সমাবেশে ছাত্র-জনতার ঢল। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক নাগরিক কমিটি। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেলে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ সমাবেশে দুই সংগঠনের শীর্ষ নেতারা এ দাবি জানান।

হাসনাত আব্দুল্লাহ ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করার দাবি জানান। এ সময় তিনি উপস্থিত জনতার সঙ্গে হাত তুলে বিচার ও সংস্কারের শপথ করেন। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে দরকার, বিচার আর সংস্কার।  

উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্রের কথা নিয়ে পাড়ায় পাড়ায় মানুষের কাছে যাবেন। তাদের কথা শুনবেন এবং তাদের কথা তুলে আনবেন।

নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, বাংলাদেশের মানুষ জুলাই ঘোষণাপত্র চায়। তারা সংস্কার চায়, নতুন সংবিধান চায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যখন জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করার ঘোষণা দিয়েছে, তখন সরকার সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি বিজয়।

আরও পড়ুন: ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ দিতে হবে: সামান্তা শারমিন

তিনি বলেন, সরকারকে জানুয়ারি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে হবে। আমাদের বলা হয়, নতুন সংবিধান করবে, তার ম্যান্ডেট কোথায়? আমরা বলি নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমেই নতুন সংবিধান হবে। বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন হবে গণপরিষদ নির্বাচন।

নির্বাচনে যারা জয়ী হবেন, তারা একইসঙ্গে সংবিধান বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, তারা নতুন সংবিধান গঠন করবেন এবং আইনসভার সদস্য হিসেবে ভূমিকা পালন করবেন। বাংলাদেশের বিচার, সংস্কারসহ নানা আকাঙ্ক্ষা আছে। ছাত্র-জনতা অবশ্যই তাদের প্রত্যাশা পূরণ করবে।

আরও পড়ুন: আ. লীগের বিচারের আগে নির্বাচন নয়: উমামা ফাতেমা

১৫ তারিখের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিনও। তিনি বলেন, জানুয়ারির ১৫ তারিখের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র না দিলে ছাত্রজনতা আবারও রাজপথে নামতে বাধ্য হবে। ছাত্রজনতার প্রতি অনুরোধ, আপনারা বিচার ও সংস্কার নিশ্চিত না করে রাজপথ ছাড়বেন না।

নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, আগামীতে যে ঘোষণাপত্র আসবে, সেখানে প্রত্যেক শহীদের রক্তের ফোঁটার কথা উল্লেখ থাকতে হবে। যদি আমরা সে কথাগুলো না পাই, তাহলে বাংলার চব্বিশের বাঘের বাচ্চারা তা মেনে নেব না। ঘোষণাপত্রে ৫৩ বছরে যে প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস হয়েছে, তা সংস্কারের ইঙ্গিত থাকতে হবে। আমরা এক নতুন বাংলাদেশ দেখতে চাই।

আরও পড়ুন: শহীদদের স্মরণে নীরবতা দিয়ে শুরু ‘মার্চ ফর ইউনিটি’

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশে কোনো শহীদ বা আহতের ওপর চোখ রাঙানো চলবে না। টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজি হবে না। আপনারা (অন্তর্বর্তী সরকার) অতিদ্রুত ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপে সক্রিয় হোন। সক্রিয় না হলে চব্বিশের বাঘের বাচ্চারা নিজেদের হাতে আইন তুলে নেবে। আমাদের আগামীর কাজ হবে শেখ হাসিনাকে বাংলার মাটিতে এনে বিচার নিশ্চিত করা। বিচারিক প্রক্রিয়ায় নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়ায় যেতে হবে।

বিকেল ৪টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যম এ কর্মসূচি শুরু হয়।

নীরবতা পালনের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শাহরিয়ার হাসান আলভীর বাবা মো. আবুল হাসান ছেলের স্মৃতিচারণ করেন। সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এই সমাবেশ থেকেই ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ ঘোষণার প্রস্তুতি নিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। পরে গতকাল সরকারের পক্ষ থেকে শিগগির ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র’ গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়।

এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আজকের এই কর্মসূচির নাম দেয় ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ (ঐক্যের জন্য যাত্রা)। এ কর্মসূচি ঘিরে সারা দেশ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতাকর্মীরা আজ শহীদ মিনারে জড়ো হন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২৪
এফএইচ/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।