ঢাকা, রবিবার, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

পাহাড়ে বিন্নি চালের সুস্বাদু পিঠা খেয়ে খুশি পর্যটকরা

কৌশিক দাশ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২৪
পাহাড়ে বিন্নি চালের সুস্বাদু পিঠা খেয়ে খুশি পর্যটকরা

বান্দরবান: পার্বত্য জেলা বান্দরবানে জেঁকে বসেছে শীত। শীতের শুরুতে জেলা শহরের বিভিন্ন অলিগলি আর দোকানে বিক্রি বেড়েছে নানা রকমের পিঠা।

ভাপা, চিতই, পাটিসাপটা পিঠার পাশাপাশি পর্যটক ও স্থানীয়দের মন কেড়েছে পাহাড়ে জুমের উৎপাদিত বিন্নি চালের তৈরি নানা স্বাদের মুখরোচক পিঠা।

শীতের আগমনী বার্তার সঙ্গে সঙ্গে পাড়া মহল্লা আর সড়কের মোড়ে মোড়ে শীতের পিঠা বিক্রির ধুম পড়েছে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতেই বাড়তে থাকে শীতের প্রকোপ আর সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে আবহাওয়া জানান দেয় শীত শুরু হয়েছে।

জেলা সদরের ট্রাফিক মোড়, মধ্যম পাড়া, উজানী পাড়া, কালাঘাটা, বালাঘাটাসহ বিভিন্ন স্থানে ছোট দোকান বসিয়ে গরম গরম ভাপা, চিতইসহ নানা ধরনের পিঠা তৈরি করছে বিক্রেতারা। এদিকে শীতের এমন আমেজে গরম গরম পিঠা খেতে বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ সব দোকানগুলোতে ভিড় বাড়ছে স্থানীয়দের পাশাপাশি পিঠাপ্রেমী পর্যটকদের। পাহাড়ে জুমের উৎপাদিত বিন্নি চালে তৈরি নানা স্বাদের মুখরোচক পিঠা খেয়ে খুশি পর্যটকরা।

চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবান সদরে বেড়াতে আসা পর্যটক আমিনুল হক বাংলানিউজকে জানান, দেশের বিভিন্নস্থানে ভ্রমণ করেছি এবং বিভিন্ন পিঠার স্বাদ নিয়েছি তবে বান্দরবানের পিঠাগুলোর স্বাদ অতুলনীয়। পাহাড়ে বিন্নি চাল থেকে তৈরি নানা ধরনের পিঠা খেতে পেরে খুব ভালো লাগছে।

কক্সবাজার থেকে বান্দরবান বেড়াতে আসা শর্মী বড়ুয়া বাংলানিউজকে জানান, শীত এলে আমরা মূলত প্রতিবছর ভ্রমণে যাই আর সেই উপলক্ষে বান্দরবান ভ্রমণ করছি, আর ভ্রমণের সঙ্গে যোগ হয়েছে পাহাড়িদের হাতে তৈরি নানা ধরনের পিঠা খাওয়ায় প্রতিযোগিতা। ভাপা, চিতই ও পাটিসাপটা পিঠার পাশাপাশি বিভিন্ন পিঠা খেয়ে খুব ভালো লাগছে।

এদিকে বিক্রেতারা জানান, শীতের মৌসুম এলেই বান্দরবানে বাড়ে পিঠা বিক্রির ধুম। পিঠার সঙ্গে বাহারি স্বাদের সরিষা, শুঁটকি, ধনিয়া ভর্তাসহ নানা ধরনের ভর্তা দিয়ে ক্রেতাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় সুস্বাদু পিঠা।

বান্দরবান সদরের মধ্যম পাড়ায় সড়কের পাশে বসে পিঠা বিক্রি করেন সুজি বড়ুয়া। তিনি বাংলানিউজকে জানান, প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সড়কের পাশে বসে বিন্নি চালের তৈরি ভাপা পিঠা বিক্রি করি। দৈনিক এক হাজার টাকা বিক্রি হয়। আর খরচ বাদ দিলে লাভ হয় ২০০ থেকে ৩০০ টাকা।

বান্দরবানের প্রধান সড়ক সোনালী ব্যাংকের সামনে টং দোকানের পিঠা বিক্রেতা নুরুউদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে পিঠা বিক্রি বেড়েছে। স্থানীয়দের পাশাপাশি পর্যটকদের কাছে পিঠা খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। পিঠার সঙ্গে বাহারি স্বাদের সরিষা, শুঁটকি, ধনিয়াপাতার ভর্তাসহ নানা ধরনের পিঠা পেয়ে খুবই খুশি পর্যটকরা।

এদিকে পাহাড়ে জুমে উৎপাদিত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন বিন্নি চালের তৈরি নানা স্বাদের মুখরোচক পিঠা দিন দিন সবার কাছে জনপ্রিয় হচ্ছে বলে জানান কৃষি কর্মকর্তারাও।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বান্দরবান জেলা কার্যালয়ের উপ পরিচালক কৃষিবিদ এম এম শাহ নেয়াজ বাংলানিউজকে জানান, শীতের এই সময়টায় পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকায় বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলে পিঠা তৈরির ধুম। এতে খুশি স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকরা।  

তিনি জানান, পাহাড়ের বিভিন্নস্থানে উৎপাদিত বিন্নি  চালের পিঠা সবার কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। বিষমুক্ত এ চাল থেকে তৈরি পিঠা আর পায়েস খুবই সুস্বাদু।

বাংলাদেশ সময়: ১০০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২৪
আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।